কুষ্টিয়ার দৌলতপুরে পদ্মা নদীতে পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে। উপজেলার পদ্মা তীরবর্তী চরাঞ্চলের ৪ টি ইউনিয়নের ৪০টি গ্রামের প্রায় ৬০ হাজার মানুষ পানিবন্দ্বি হয়ে পড়েছে। চারিদিকে অথৈই পানিতে সেখানকার মানুষ চরম দুর্ভোগের মধ্যে পড়েছেন। আবার পানির সাথে অসংখ্য বিষাক্ত সাপ ভেসে আসায় বানভাসিদের আতঙ্ক আরও বাড়িয়ে তুলেছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের তথ্যমতে রবিবার দুপুর পর্যন্ত পদ্মার হার্ডিঞ্জ ব্রিজ পয়েন্টে বিপদসীমার ৬ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে।
উপজেলার রামকৃষ্ণপুর ইউনিয়নের ১৯টি গ্রামের মধ্যে ১৭টি গ্রাম ও চিলমারী ইউনিয়নের ২০টি গ্রাম ফিলিপনগরের ১ টি ও মরিচা ইউনিয়নের ২ টি সহ মোট ৪০ টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হওয়ায় ওই এলাকার প্রায় ৬০ হাজার মানুষ এখন পানিবন্দ্বি অবস্থায় মানবেতর জীবনযাপন করছে।
রামকৃঞ্চপুর ইউপির চেয়ারম্যান সিরাজুল ইসলাম জানান, বন্যার্ত মানুষের তুলনায় ত্রাণ সহায়তা একেবারে অপ্রতুল। তাছাড়া বিশুদ্ধ পানি, খাদ্য ও পশু খাদ্যের সংকট দেখা দিয়েছে বলে তিনি জানিয়েছেন।
উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, দুই দফায় ১২ হাজার বন্যার্ত পরিবারের তালিকা প্রস্তুত করা হয়েছে। এরমধ্যে দুটি ইউনিয়নে মাত্র এক হাজার পরিবারকে ত্রাণ সহায়তা প্রদান করা হয়েছে।
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, বন্যাকবলিত ৪ টি ইউনিয়নের প্রায় ৭ হাজার হেক্টর আবাদি জমি সম্পূর্ণ তলিয়ে গেছে। এর কিছু অংশে পাট, আউশ ও আমন ধান এবং সবজি ক্ষেত ছিল তা বন্যার পানিতে তলিয়ে গেছে।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার শারমিন আক্তার জানান, বর্ন্যাত এলাকার প্রায় ১২ হাজার পরিবারকে ত্রাণ সহায়তার জন্য সংশ্লিষ্ট দপ্তরে তালিকা প্রেরণ করা হয়েছে। ইতিমধ্যে ১ হাজার পরিবারকে সহায়তা করা হয়েছে। আরও ১ হাজার পরিবারের জন্য বরাদ্ধ পাওয়া গেছে।
তিনি আরও জানান, পরবর্তীতে আরও বরাদ্ধ পাওয়া মাত্রই আমরা তা বিতরণের ব্যবস্থা করবো।
এদিকে ভারত থেকে আসা বন্যার পানির সাথে অসংখ্য বিশাক্ত সাপ ভেসে আসায় এখানকার মানুষ চরম আতঙ্কের মধ্যে দিন কাটাচ্ছে।
একাধিক সূত্র মতে, ভারতীয় অংশে একটি সাপের খামার বন্যা কবলিত হওয়ায় এ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে।
কুষ্টিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ড এর তত্বাবধায়ক প্রকৌশলী মো. আব্দুল হামিদ বলেন, গত কয়েকদিন ধরে অস্বাভাবিক ভাবে পানি বৃদ্ধির ফলে নদী তীরবর্তী এলাকায় বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে। ভাঙনরোধে বিভিন্ন স্থানে বালুর বস্তা ফেলছে পানি উন্নয়ন বোর্ড।
সূত্র: যায়যায়দিন