আফগানিস্তানে তালেবানদের বিজয়ে পশ্চিমা বিশ্ব যেমন হতাশ হয়ে পড়েছে, পাকিস্তান তার বিপরীত প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছে। দেশটির প্রধানমন্ত্রী জোর দিয়ে বলেছেন, আফগানরা ‘দাসত্বের শিকল ভেঙেছে’।
ফ্রান্স২৪ এ টম হুইলডন লিখেছেন, বিশেষজ্ঞদের মতামত হচ্ছে নিজেদের শত্রু ভারতের প্রতি ভূকৌশলগত উদ্বেগই পাকিস্তানকে তালেবানপন্থী মনোভাব ধরে রাখতে সহায়তা করেছে। এ বিষয়ে পাকিস্তানের মনোভাব এতোটাই দৃঢ় যে আফগানিস্তান জঙ্গিদের নিয়ন্ত্রণে চলে গেলে তাদের দেশেও জিহাদিদের হুমকি সৃষ্টি হতে পারে, এমন আশঙ্কা সত্বেও তারা তালেবানকে সহায়তা করা বন্ধ করেনি।
হামিদ কারজাই এবং আশরাফ গনির অধীনে আফগানিস্তানে পশ্চিমাপন্থী সরকারের ওপর নয়াদিল্লির সমর্থন ছিল। কিন্তু ইসলামাবাদ তখন তা সমর্থন করেনি। কারণ তিনটি যুদ্ধ এবং কাশ্মীর ইস্যুতে বারবার সংঘর্ষের কারণে ভারতের সঙ্গে পাকিস্তানের সম্পর্ক বৈরি হয়ে উঠেছিল।
লন্ডনের চাথাম হাউজের বিশেষজ্ঞ ফারজানা শেখ ফ্রান্স২৪কে বলেন, ‘গনির অধীনে আফগানিস্তান ভারতের বিশেষ কাছে চলে আসে। এটি অবশ্যই বড় ধরনের বিড়ম্বনার কারণ হয়ে উঠেছিল; কারণ পাকিস্তানের সমগ্র বিদেশনীতি পূর্ব থেকে ভারত এবং পশ্চিম ও উত্তর থেকে ভারতপন্থী আফগান সরকারের মাধ্যমে জব্দ হওয়ার আতঙ্ককে ঘিরে তৈরি করা।’
হুইলডন বলেন, পাকিস্তানিরা জিহাদিদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার ক্ষেত্রে প্রতারণা করেছে এমন উদ্বেগও রয়েছে। অনেক পর্যবেক্ষক প্রশ্ন করেছেন, তালেবানদের প্রতি পাকিস্তানের সমর্থন সত্বেও কেন মার্কিন নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয়নি?
অন্যদিকে, প্যারিসভিত্তিক বহুপাক্ষিক সংগঠন ফিন্যান্সিয়াল অ্যাকশন টাস্ক ফোর্স (এফএটিএফ) সন্ত্রাসবাদে অর্থায়ন ও অর্থপাচার প্রতিরোধে কাজ করে থাকে। সংস্থাটি গত জুনে এক ঘোষণায় জানায় , নিজেদের অঞ্চলে সন্ত্রাসবাদে অর্থায়ন বন্ধে পাকিস্তানকে তারা আরো চারমাস সময় দিয়েছে। তবে বিশ্লেষকরা আশঙ্কা করছেন, আফগানিস্তানে তালেবানদের বিজয় পাকিস্তানকে আবারো অস্থিতিশীল করে তুলতে পারে। ফলে ইসলামাবাদের বর্তমান উচ্ছাস টেকসই নাও হতে পারে।
সূত্র: আমাদের সময়.কম