এডিস মশার কামড়ে ডেঙ্গু রোগে আক্রান্ত হয়ে প্রতিদিন রাজধানীসহ সারাদেশে গড়ে ৩০০ জন হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছেন। প্রায় প্রতিদিনই রোগীদের কেউ না কেউ মারা যাচ্ছেন। এর মধ্যে বেশ কয়েকটি শিশুও মারা গেছে। ডেঙ্গু রোগের জীবাণুবাহী এডিস মশা নিয়ন্ত্রণে রাজধানীর দুই সিটি করপোরেশন মশার ওষুধ ছিটানোসহ বিভিন্ন ধরনের অভিযান চালিয়েও পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পারছে না। সচেতন হওয়ার জন্য মন্ত্রী-মেয়রদের আহ্বানে সাড়া দিচ্ছে না নগরবাসী। এ পরিস্থিতিতে বাড়ছে এডিস মশার দৌরাত্ম্য। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সর্বশেষ প্রকাশিত জরিপেও এডিস মশার ঘনত্বের ভয়াবহ চিত্র উঠে এসেছে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের রোগ নিয়ন্ত্রণ শাখার জরিপে দেখা গেছে, আগের জরিপের চেয়ে এবার প্রায় প্রতিটি এলাকাতেই মশার ঘনত্ব ভয়াবহভাবে বেড়েছে। ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) বাসাবো, গোরান, সায়েন্স ল্যাবরেটরি, এলিফ্যান্ট রোড, আর কে মিশন রোড ও টিকাটুলী এলাকায় এডিস মশার ঘনত্ব ভয়াবহ। আর ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) মগবাজার ও নিউ ইস্কাটন এলাকায় এ মশার ঘনত্ব ব্যাপক। শুধু ডিএনসিসির মেরুল বাড্ডা ও আফতাবনগর এবং ডিএসসিসির বংশাল এলাকায় এডিস মশার অস্তিত্ব পায়নি স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। জরিপ চালানো ৯৮টি ওয়ার্ডের দুটি ছাড়া সব ক’টিতেই এ মশার উদ্বেগজনক উপস্থিতি পাওয়া গেছে।
মন্ত্রী-মেয়রদের আহ্বানে সাড়া নেই: বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এডিসের প্রকোপ বৃদ্ধির একটি বৃত্তাকার চক্র রয়েছে। সে অনুযায়ী বিশেষজ্ঞরা আগেই সতর্ক করে দিয়েছিলেন যে এডিস মশার প্রকোপ এবার। রাজধানীর দুই সিটি করপোরেশনও এ ব্যাপারে সজাগ ছিল। দুই করপোরেশন বিভিন্ন রকম মশক নিধন কর্মসূচি নেওয়ার পরও গত জুন মাস থেকে আকস্মিকভাবে বাড়তে থাকে ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা। ওই মাসে ২৭২ জন ডেঙ্গু রোগী শনাক্ত হন। আর গত জুলাই মাসে আরও বেড়ে আক্রান্ত হয়েছেন দুই হাজার ২৮৬ জন।
উভয় সিটি করপোরেশনই জানাচ্ছে, ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণ একটি সামষ্টিক প্রক্রিয়া। কারণ, এডিস মশার বংশবিস্তার উপযোগী পরিবেশ বাসাবাড়ির ভেতরেও থাকে, যেখানে পরিচ্ছন্নতাকর্মীদের প্রবেশগম্যতা নেই। তাই এর বিস্তাররোধ অংশত নাগরিকদের সচেতনতার ওপরও নির্ভরশীল।
সূত্র: সমকাল