টাঙ্গাইলে চলন্ত বাসে জাকিয়া সুলতানা রুপাকে গণধর্ষন ও হত্যা মামলায় বিচার কার্যক্রম চার বছরেও শেষ না হওয়ায় ক্ষোভ জানিয়েছে তার পরিবার।
রুপা হত্যার চার বছর পূর্ণ হয়েছে আজ মঙ্গলবার।
মামলার কার্যক্রম নিয়ে হতাশা ও ক্ষোভ প্রকাশ করে রুপা হত্যা মামলার বাদী রুপার বড় ভাই মো.হাফিজুর রহমান প্রামাণিক সমকালকে বলেন, ‘মহামান্য হাইকোটে সাড়ে তিন বছর যাবত মামলাটির আপিল শুনানি শুরু হয়নি। মূলত গত সাড়ে তিন বছর হল মামলাটি নড়ছেও না, চড়ছেও না। তাই বিচার পাওয়ার আশায় আমাদের পরিবারের ম্যারাথন অপেক্ষা আর শেষ হচ্ছে না। বলতে গেলে এখন অল্প সময়ে আমরা বিচার পাওয়ার আশা নিয়ে রীতিমত হতাশ ।
২০১৭ সালের ২৫ আগষ্ট শিক্ষক নিবন্ধন পরীক্ষা শেষে বগুড়া থেকে ময়মনসিংহ যাওয়ার পথে চলন্ত বাসে পরিবহন শ্রমিকরা গণধর্ষণ ও হত্যা করে টাঙ্গাইল জেলার মধুপুর উপজেলায় পঁচিশ মাইল এলাকায় বনের মধ্যে মরদেহ ফেলে রেখে যায়।
ওই ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে মধুপুর থানায় গণধর্ষণ ও হত্যা মামলা দায়ের করে। ২০১৭ সালের ২৮ আগস্ট এ ঘটনায় জড়িত অভিযোগে ছোঁয়া পরিবহণের হেলপার শামীম, আকরাম ও জাহাঙ্গীর এবং চালক হাবিবুর ও সুপারভাইজার সফর আলীকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। পরে আসামিরা সবাই আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন।
২০১৮ সালের ১২ ফেব্রুয়ারি টাঙ্গাইলে নারী শিশু নির্যাতন ট্রাইবুনালের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ প্রথম আদালতের বিচারক আবুল মনসুর মিয়া রুপা হত্যা মামলার রায়ে ময়মনসিংহের ছোঁয়া পরিবহণের হেলপার শামীম, আকরাম ও জাহাঙ্গীর এবং চালক হাবিবুরকে ফাঁসি ও সুপারভাইজার সফর আলীকে ৭ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড ও এক লাখ টাকা করে আর্থিক জরিমানার আদেশ দেন । এছাড়া ছোঁয়া পরিবহণের ওই বাসটি রুপার পরিবারকে ক্ষতিপূরণ হিসেবে প্রদানেরও আদেশ প্রদান করেন। সেই রায়ের পর ২০১৮ সালের ১৮ ফেব্রুয়ারি সাজাপ্রাপ্ত আসামিরা খালাস চেয়ে হাইকোর্টে আপিল করেন। এরপর গত সাড়ে তিন বছরেও চাঞ্চল্যকর ওই মামলার আপিল শুনানিই শুরু হয়নি।
এ বিষয়ে টাঙ্গাইলে নারী ও শিশু নির্যাতন ট্রাইবুনালের বিশেষ পিপি নাসিমুল আক্তার নাসিম সমকালকে জানান, ‘নিম্ন আদালতে রায় ঘোষণার পর আসামিদের মৃত্যুদণ্ড হলে তার নথিপত্র দ্রুততম সময়ে মহামান্য হাইকোর্টে চলে যায়। পরে আপিল হলে তা কার্যতালিকায় আসলে পর্যায়ক্রমে আপিল শুনানি হয়ে থাকে। সেক্ষেত্রে চাঞ্চল্যকর রুপা গণধর্ষণ ও হত্যা মামলায় আপিল শুনানি হয়তো এখনো মহামান্য হাইকোর্টের কার্য তালিকায় আসেনি। তাই শুনানিও শুরু হয়নি। বিষয়টি সম্পূর্ন আদালতের এখতিয়ার।
সূত্র: সমকাল