দিনাজপুরে ফিল্মি স্টাইলে মা ও ছেলেকে অপহরণের পর ১৫ লাখ টাকা মুক্তিপণ আদায়ের প্রাক্কালে সিআইডি’র এএসপি সারোয়ার কবীর, এএসআই হাসিনুর রহমান ও কনস্টেবল আহসানুল উল ফারুক, ফসিউল আলম পলাশ ও হাবিব মিয়াকে আটক করেছে পুলিশ। এ ঘটনায় ব্যাপক তোলপাড় চলছে।
ঘটনার শিকার মা-ছেলের স্বজন ও প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, গত ২৩ আগস্ট রাত আনুমানিক ৯টায় চিরিরবন্দর উপজেলার নান্দেডাই গ্রামের নিজ বাড়ি থেকে মা জহুরা বেগম ও ছেলে জাহাঙ্গীরকে ডিবি পুলিশের পরিচয়ে ফিল্মি স্টাইলে মাইক্রোযোগে অপহরণ করা হয়। এ সময় মা ও ছেলেকে মারপিটও করে অপহরণকারীরা। জহুরা বেগমের বাড়ির লোকজন র্যাব, ডিবি পুলিশসহ বিভিন্ন জায়গায় আটকের বিষয়ে খোঁজ নেয়। কিন্তু কেউ আটকের বিষয়ে কিছু বলতে পারে না। পরে অপহরণকারীরা মোবাইলে জহুরা বেগমের স্বামী লুৎফর রমান ও দেবর রমজানের কাছে ১৫ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে।
মঙ্গলবার হাজি দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে স্ত্রী ও সন্তানকে উদ্ধারে মুক্তিপণের টাকা দিতে যায় স্বামী লুৎফর রহমান ও দেবর রমজান আলী। তাদের সাথে সিভিল পোশাকে পুলিশ রয়েছে টের পেয়ে অপহরণকারীরা সঙ্গে থাকা মাইক্রোবাস নিয়ে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। এ সময় ১০ মাইল নামক স্থানে পুলিশ তাদের ধরে ফেলে।
যৌন সম্পর্কে সেলিব্রেটিদের প্রাইভেট আলোচনা
অভিযানে জেলা পুলিশ ও চিরিরবন্দর থানার পুলিশ অংশ নেয়।
আটকের পর পুলিশ জানতে পারে অপহরণকারীদের মধ্যে রংপুর সিআইডি জোনের এএসপি সারোয়ার কবীর, এএসআই হাসিনুর রহমান ও কনস্টেবল আহসানুল রয়েছে।
তাদেরকে দিনাজপুর ডিবি অফিসে রাখা হয়েছে। অপহৃত মা জহুরা বেগম ও ছেলে জাহাঙ্গীরকেও ডিবি অফিসে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য রাখা হয়েছে।
চিরিরবন্দর থানার ওসি সুব্রত কুমার সরকার ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, আটককৃতদের বিরুদ্ধে অপহরণ মামলা দায়ের প্রস্তুতি চলছে।
দিনাজপুর পুলিশ সুপার মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন বলেছেন, ঘটনার বিস্তারিত সাংবাদিকদের জানানো হবে। বিষয়টি আমরা খতিয়ে দেখছি।
এ বিষয়ে রংপুর সিআইডির পুলিশ সুপার আতাউর রহমান গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন, অভিযুক্তরা কোন প্রকার অনুমতি না নিয়ে সেখানে (চিরিরবন্দর) গেছে। তাদের আটকের বিষয়টি শুনেছি। তারা কেন সেখানে গেছে, কাকে অপহরণ করেছে, এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় খোঁজখবর নিয়ে তদন্ত স্বাপেক্ষে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, রংপুর সিআইডির কাছে পলাশ নামে এক ব্যক্তি চিরিরবন্দর উপজেলার আব্দুলপুর ইউনিয়নের নান্দেড়াই গ্রামের গাদুশা পাড়ার জনৈক চ্যালেঞ্জ মৌলানার ছেলে লুৎফর রহমানের বিরুদ্ধে ৫০ লাখ টাকার প্রতারণার অভিযোগ আনে। এ অভিযোগের প্রেক্ষিতে গত ২৩ আগস্ট সোমবার দিবাগত রাত সাড়ে ৯ টায় সিআইডির সহকারি পুলিশ সুপার মোঃ সারোয়ার কবির সোহাগ, এএসআই হাসিনুর রহমান ও কনস্টেবল আহসান উল ফারুক, ফসিউল আলম পলাশ ও হাবিব মিয়া উক্ত লুৎফরের বাড়িতে যায়। তাকে না পেয়ে তার স্ত্রী ও ছেলেকে কালো মাইক্রোবাসে করে তুলে নিয়ে যায়।
এ ঘটনায় চিরিরবন্দর থানায় দুপুর ২ টা পর্যন্ত কোন মামলা না হলেও নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কর্মকর্তা জানান, পুলিশ সুপারের নির্দেশনা মোতাবেক মামলা দায়ের প্রস্তুতি চলছে।
সূত্র: মানবজমিন