বাবা-মায়ের স্বপ্ন ছিল আরিফ বিল্লাহ চিকিৎসক হয়ে সাধারণ মানুষকে চিকিৎসাসেবা দেবে। মাত্র দুই মাস আগে ঢাকার গ্রীন লাইফ মেডিক্যাল কলেজে ভর্তি হয়েছিলেন আরিফ। কিন্তু কে জানত বিলের সলিলে সমাধি হয়ে যাবে ছেলেকে চিকিৎসক বানানোর মা-বাবার স্বপ্ন।
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিজয়নগর উপজেলার চম্পকনগর ইউনিয়নের জামালপুর গ্রামের সৌদি আরব প্রবাসী জহিরুল হক ভূইয়ার ছেলে আরিফ। দুই সন্তানের মধ্যে আরিফ ছিলেন বড়। আরিফের ছোট ভাই ফয়সাল বিল্লাহ (১২) গ্রামের একটি মাদরাসায় পড়াশোনা করে।
গত শুক্রবার (২৭) আগস্ট বিকেলে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিজয়নগর উপজেলার পত্তন ইউনিয়নের লইসকা বিলে নৌকাডুবিতে নিহত হন আরিফ। আরিফের বাবার সাথে তার মা পারভীন বেগমও বর্তমানে সৌদি আরবে ছিলেন। ছেলের মৃত্যুর খবরে সৌদি আরব থেকে শনিবার রাতে দেশে এসেছেন তারা। মা বাবাকে দেখাতে আরিফের লাশ ফ্রিজিং গাড়িতে রাখা হয়েছে। দেশে এসেই ছেলের লাশ দেখে বারবার মূর্ছা যাচ্ছেন প্রবাসী মা-বাবা। প্রবাসে বসে যে ছেলেকে ডাক্তার বানাবার স্বপ্ন দেখতেন, আজ বাড়ির পাশে কবরস্থানে চিরনিদ্রায় শায়িত হবেন সেই আদরের আরিফ।
আরিফের স্বজনরা জানান, আরিফ ছোটবেলা থেকেই মেধাবী ছিলেন। স্কুল-কলেজের সকল পরীক্ষায় ভালো নম্বর পেয়ে উত্তীর্ণ হয়েছেন তিনি। কুমিল্লার ইস্পাহানি পাবলিক স্কুল অ্যান্ড কলেজ থেকে ২০১৯ সালে এইচএসসি পরীক্ষায় বিজ্ঞান বিভাগ থেকে গোল্ডেন এ প্লাস পেয়ে উত্তীর্ণ হন আরিফ। এরপর সিলেটের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির চান্স পান। কিন্তু বাবা-মায়ের চিকিৎসক বানানোর স্বপ্ন পূরণের জন্য সেখানে ভর্তি না হয়ে মেডিক্যাল কলেজে ভর্তি হন আরিফ।
শুক্রবার এক বন্ধুর কিছু কাগজপত্র নিয়ে জেলা শহরে যাচ্ছিলেন আরিফ। কিন্তু শেষ পর্যন্ত বাড়ি ফিরল লাশ হয়ে। তার এমন অকাল মৃত্যুতে সবার স্বপ্ন যেন চূর্ণ-বিচূর্ণ হয়ে গেল।
উল্লেখ্য, গত শুক্রবার (২৭) আগস্ট বিকেলে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিজয়নগর উপজেলার পত্তন ইউনিয়নের লইসকা বিলে বালুর বাল্কহেডের ধাক্কায় নৌকাডুবিতে আরিফসহ ২২ জন নিহত হন।
সূত্র: নয়াদিগন্ত