উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢল আর ভারী বৃষ্টিতে যমুনা নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় সিরাজগঞ্জে বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি হয়েছে। গত ২৪ ঘন্টায় যমুনা নদীর পানি সিরাজগঞ্জ শহর রক্ষা বাঁধ পয়েন্টে ০৮ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়ে বিপদসীমার ৩৩ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
প্রতিদিন পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় প্লাবিত হচ্ছে জেলার নিম্নাঞ্চল ও চরাঞ্চল। বন্যার পানিতে তলিয়ে যাচ্ছে গ্রামীণ রাস্তা ঘাট। এতে এসব এলাকার মানুষ পানি বন্দি হয়ে পড়ছে। নিমাঞ্চলে বসবাস করা মানুষের ঘরবাড়িতে বন্যার পানি ঢুকে পড়েছে। তারা চলাচল করছে নৌকায়। বন্যার পানিতে প্লাবিত হয়েছে অনেক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান।
পানি বৃদ্ধির কারণে বিভিন্ন এলাকায় কৃষকের রোপা আমন ধানও তলিয়ে গেছে। একই সঙ্গে নদী সংলগ্ন অনেক এলাকায় ভাঙন দেখা দিয়েছে। জেলার চৌহালী, এনায়েতপুর ও শাহজাদপুরে ব্যাপক নদী ভাঙন হওয়ায় ভাঙ্গন কবলিত মানুষ গুলো খোলা আকাশের নিচে বসবাস করছে। এসব এলাকায় বিশুদ্ধ পানির সংকট দেখা দিয়েছে।
রবিবার সকাল ৬টার দিকে সিরাজগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের শহর রক্ষা বাঁধ পয়েন্টের গেজ মিটার (পানি পরিমাপক)আব্দুল লতিফ জানান, গত ২৪ ঘন্টায় যমুনা নদীর পানি শহর রক্ষা বাঁধ পয়েন্টে ০৮ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়ে বিপদসীমার ৩৩ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
গত ১৪ আগস্ট থেকে শুরু করে রবিবার (২৯ আগস্ট) পর্যন্ত যমুনা নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় জেলার নদী তীরবর্তী আরও কিছু নিম্নাঞ্চল ও চরাঞ্চল বন্যা কবলিত হয়ে পড়েছে। এ সকল এলাকার বসতবাড়ি ও রাস্তাঘাটে পানি উঠে পড়ায় বিপাকে পড়েছেন বন্যা দুর্গতরা। বন্যা কবলিত এলাকার বিস্তীর্ণ ফসলি জমি তলিয়ে যাওয়ায় নষ্ট হচ্ছে রোপা আমন ক্ষেত, বীজতলা, আখ, পাট, তিল ও সবজিবাগানসহ বিভিন্ন ফসল।
সিরাজগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) নির্বাহী প্রকৌশলী মো: শফিকুল ইসলাম বলেন, যমুনায় পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। যমুনা নদীর পানি গত ২৪ ঘন্টায় ০৮ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়েছে। বন্যা পূর্ভাবাস সতর্কীকরণ কেন্দ্র জানিয়েছে, যমুনা নদীর পানি আরও বাড়তে পারে। তবে পানি বিপদসীমার ৩৩ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হলেও এখন পর্যন্ত বন্যার তেমন কোনও খারাপ পরিস্থিতি তৈরি হয়নি বলেও জানান এই কর্মকর্তা।
সিরাজগঞ্জ জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা আব্দুর রহিম জানান, যমুনা নদীতে পানি বেড়ে বিপদসীমার ৩৩ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হওয়ার বিষয়টি আমাদের জানা আছে। আমরা নিয়মিত পানির খোঁজ খবর রাখছি। তিনি আরও বলেন, ৫টি উপজেলায় ১২৫ মেট্রিক টন চাল ও দেরলক্ষ করে নগদ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। তারা সেটা তাদের চাহিদা অনুযায়ী বিতরণ করবেন। এছাড়াও জেলায় ৫১ মেট্রিক টন চাল ও দুই লক্ষ টাকা মজুদ রাখা হয়েছে। কোনও এলাকায় ত্রাণের প্রয়োজন আছে কি না তা নিয়মিত খোঁজ নেয়া হচ্ছে।
সূত্র: মনবজমিন