দক্ষিণ আমেরিকার দেশ কলম্বিয়ায় করোনাভাইরাসের একটি নতুন পরিবর্তিত ধরন শনাক্ত হয়েছে। গ্রীক বর্ণমালার ক্রম অনুযায়ী এই ধরনটির নাম দেওয়া হয়েছে ‘মিউ’।
বর্তমানে করোনার এই ধরনটি বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) পর্যবেক্ষণের তালিকায় (ভ্যারিয়েন্ট অব ইন্টারেনস্ট) রয়েছে বলে মঙ্গলবার সাপ্তাহিক প্যানডেমিক বুলিটিনে জানিয়েছে ডব্লিউএইচও।
চলতি বছর জানুয়ারিতে প্রথম মিউয়ে আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়েছে উল্লেখ করে বুলেটিনে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলেছে, ‘প্রাথমিক গবেষণায় আমাদের মনে হচ্ছে, টিকা নেওয়ার পর মানবদেহে যে সুরক্ষা তৈরী হয়, তাকে ফাঁকি দিতে সক্ষম এই ধরনটি।’
‘তবে এর সংক্রমণ ক্ষমতা ঠিক কতখানি এবং করোনার অন্যান্য ধরনসমূহের তুলনায় এটি কী পরিমাণ প্রাণঘাতী- তা জানার জন্য আরো বিস্তারিত গবেষণা হওয়া প্রয়োজন।’
গত দেড় বছরেরও বেশি সময় ধরে অসংখ্যবার মানুষ ও অন্যান্য প্রাণীদের দেহে সংক্রমিত হতে হতে বেশ কয়েক দফা পরিবর্তনের মধ্যে দিয়ে গেছে সার্স কোভ-২ ভাইরাস বা নভেল করেনাভাইরাস। ফলে, বিশ্বে আবির্ভাব ঘটেছে এর অনেকগুলো বিবর্তিত ধরনের।
সাধারণ মানুষের সুবিধার্থে পরিবর্তিত এই ধরনসমূহের মধ্যে প্রধান বা প্রতিনিধিত্বশীল ধরনগুলোর বৈজ্ঞানিক নামের পাশাপাশি গ্রিক বর্ণমালা অনুসারে সেগুলোর নামকরণ করেছে ডব্লিউএইচও।
এর আগে এ রকম ছয়টি ধরনকে করোনাভাইরাসের প্রধান ও প্রতিনিধিত্বশীল ধরন হিসেবে অন্তর্ভূক্ত করেছিল বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থ। এগুলো হলো- আলফা, বিটা, গ্যামা, ডেল্টা, কাপ্পা ও ল্যাম্বডা। এবার এই তালিকায় সপ্তম হিসেবে যুক্ত হলো মিউ, যার বৈজ্ঞানিক নাম বি.১.৬২১।
গত প্রায় দেড় বছরে বিবর্তনের ফলে মূল করোনাভাইরাসের যে পরিবর্তিত ধরনসমূহের আবির্ভাব ঘটেছে সেগুলোকে দু’টি তালিকায় ভাগ করেছে ডব্লিউএইচও- পর্যবেক্ষণ তালিকা (ভ্যারিয়েন্ট অব ইন্টারেস্ট) এবং উদ্বেগজনক তালিকা (ভ্যারিয়েন্ট অব কনসার্ন)।
বর্তমানে ডব্লিউএইচওর উদ্বেগজনক ধরনের তালিকায় রয়েছে আলফা ও ডেল্টাসহ ভাইরাসের চারটি পরিবর্তিত ধরন। বিশ্বের ১৯৩ টি দেশে আলফায় আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়েছে, আর ডেল্টায় আক্রান্ত রোগী পাওয়া গেছে ১৭০ টি দেশে।
অন্যদিকে, মিউসহ আরও ৫ টি পরিবর্তিত ধরনকে পর্যবেক্ষণ তালিকাভূক্ত করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা।
সাপ্তাহিক বুলেটিনে সংস্থার পক্ষ থেকে বলা হয়েছে- কলম্বিয়া, দক্ষিণ আমেরিকার কয়েকটি দেশ এবং ইউরোপে ইতোমধ্যে এই ধরনটিতে আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়েছে। এছাড়া কলম্বিয়ায় বর্তমানে সক্রিয় করোনা রোগীদের ৩৯ শতাংশ মিউয়ে আক্রান্ত।
সূত্র : এএফপি