গাইবান্ধা জেলার সীমানা চম্পাগঞ্জ এলাকায় বুধবার ভোর রাতে ঢাকা-রংপুর মহাসড়কে হানিফ পরিবহনের একটি নৈশকোচে ডাকাতি সংঘটিত হয়েছে। এ ঘটনায় ডাকাতদলের ছুরিকাঘাতে নৈশকোচের চালক নিহত হয়েছেন।
নিহত চালকের নাম মনজুর হোসেন (৫৫)। তিনি ঢাকার লালবাগ এলাকার বাসিন্দা। তিনি ওই এলাকার মৃত মনজু মিয়ার ছেলে। এ সময় ডাকাতরা যাত্রীদের মোবাইল ও নগদ টাকাসহ কয়েক লাখ টাকা লুট করে নিয়ে যায়।
পুলিশ ও যাত্রীরা জানায়, হানিফ পরিবহনের একটি নৈশকোচ মঙ্গলবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় ঢাকা থেকে পঞ্চগড়ের উদ্দেশে রওনা দেয়। এ সময় কোচে ৩০ জন যাত্রী ছিল। নৈশকোচটি রাত আড়াইটার দিকে গাইবান্ধার সাদুল্লাপুর উপজেলার ধাপেরহাট এলাকায় পৌঁছে। পরে নৈশকোচে যাত্রীবেশে থাকা ডাকাতরা ধাপেরহাট ও সংলগ্ন রংপুর জেলার পীরগঞ্জের মাঝামাঝি এসে নৈশকোচটি তাদের নিয়ন্ত্রণ নেয়। তারা প্রথমে কোচের চালক মনজুর হোসেনকে ছুরিকাঘাত করে। এতে চালক কোচটি ঘুরিয়ে নেয়া চেষ্টা করলে তারা আবারো সজোরে চালকের কাঁধে ধারালো অস্ত্র দিয়ে আঘাত করে নৈশকোচটি নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নেয়।
এরপর ডাকাতদল লুটপাট করতে করতে রংপুর জেলার শটিবাড়ি এলাকা পর্যন্ত পৌঁছে। সেখান থেকে কোচটি উল্টাপথে ঘুরিয়ে নিয়ে ডাকাতরা গাইবান্ধার পলাশবাড়ী শহরের দিকে রওনা দেয়। পলাশবাড়ী পৌঁছার আগে ডাকাতরা ঢাকা-রংপুর জাতীয় মহাসড়কের পীরগঞ্জের চম্পাগঞ্জ হাইস্কুলের সামনে রাত ৩টার দিকে যাত্রীসহ হানিফ পরিবহনটি রেখে পালিয়ে যায়। এ সময় ডাকাতরা যাত্রীদের মোবাইল ও নগদ টাকাসহ কয়েক লাখ টাকা লুট করে নিয়ে যায় বলে যাত্রীরা জানান। পরে আহত চালক মনজুর হোসেনকে সংলগ্ন পলাশবাড়ী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেয়া হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় কর্তব্যরত চিকিৎসক রাতেই তাকে মৃত ঘোষণা করেন। চালকের লাশ পলাশবাড়ী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে পীরগঞ্জ থানায় নেয়া হয়েছে। ময়নাতদন্তের জন্য লাশটি রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
এদিকে ডাকাতি হওয়া হানিফ পরিবহনের নৈশকোচটি পীরগঞ্জ থানা পুলিশের হেফাজতে রয়েছে। ডাকাতির বিষয়টি নিশ্চিত করেন পলাশবাড়ী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মাসুদ রানা এবং পীরগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) সরেস চন্দ্র।
এ ব্যাপারে ওসি সরেস চন্দ্র বলেন, এই ঘটনায় নৈশকোচের সুপারভাইজার পইমল ইসলাম পীরগঞ্জ থানায় ডাকাতি ও হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলায় অজ্ঞাত আসামি দেখানো হয়। এ পর্যন্ত কাউকে গ্রেফতার করা হয়নি। তবে ঘটনাটি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।
সূত্র: নয়াদিগন্ত