দলে আছেন সাকিব আল হাসান। এরপরও আরেক জন বাঁহাতি স্পিনারের দলে জায়গা পেতে হলে উজাড় করে দিতে হবে নিজের যোগ্যতার সবটাই। সিলেটের ২৬ বছর বয়সী নাসুম আহমেদ সেটিই করেছেন। অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজে ১০ ম্যাচে দলের হয়ে তুলে নিয়েছেন ১৬ উইকেট। আর সব মিলিয়ে ১৪ ম্যাচে তার শিকার ১৮ উইকেট। দুই টি-টোয়েন্টি সিরিজে দুর্দান্ত বোলিং করেছেন নাসুম। তার এমন পারফরম্যান্সের পুরষ্কার পেতেও বেশি সময় লাগেনি। জায়গা করে নিয়েছেন অক্টোবর-নভেম্বরে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের দলে।
এ একটি ব্যবহৃত গাড়ির মূল্য লোকজন বিশ্বাস করতে পারবে না
ব্যবহৃত গাড়ির দাম | বিজ্ঞাপন অনুসন্ধান
এবার সেই আসর নিয়ে দেখছেন বড় স্বপ্ন। তার বিশ্বাস সেমিফাইনাল খেলবে বাংলাদেশ দল। অবশ্য এই জন্য নিজেদের সেরাটা দিতে হবে তাও বলতে ভোলেননি। তিনি বলেন, ‘আমরা সবাই বিশ্বকাপে ভালো করব, ইনশাআল্লাহ। সিনিয়ররা তো পারফর্ম করবেই, আমাদেরও চেষ্টা থাকবে তাদের চেয়েও ভালো খেলার। আশা করি আমরা সেমিফাইনালে খেলতে পারবো।’
সাকিব আল হাসানের সঙ্গে একাদশে আরেক বাঁহাতি স্পিনারের খুব একটা প্রয়োজন হয় না। এরপরও নাসুম নিজের যোগ্যতা দিয়ে জায়গা করে নিয়েছেন। অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে সিরিজে ৮টি উইকেট শিকার করেছিলেন নাসুম। নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজে তো টম ল্যাথামের সাথে যৌথভাবে সিরিজ সেরা খেলোয়াড়ই নির্বাচিত হয়েছেন এই বাঁহাতি স্পিনার। সাকিব খুব একটা সফল না হলেও একাদশে দু‘জন বাঁহাতি স্পিনারের খেলার সুফলও দেখছেন এই তরুণ। তিনি বলেন, ‘একটা দলে দুইজন বাঁহাতি স্পিনার থাকলে দেখা যায় প্রতিপক্ষ যেকোনো একজনকে টার্গেট করে। ওরা সাকিব ভাইকে টার্গেট করেছিল আর আমাকে আক্রমণ করে খেলতে চেয়েছিল। সেইজন্য আলহামদুলিল্লাহ আমি উইকেট পেয়ে গেছি।’
তবে ঘরের মাঠে স্পিনারদের সাফল্যের বড় কারণ উইকেট। বিশ্বকাপে এমন উইকেট পাওয়া কঠিন হবে। সব শেষ জিম্বাবুয়ে সফরে নাসুম এক ম্যাচে খেলে কোন উইকেট নিতে পারেননি। এবার বিশ্বকাপে ওমান ও আরব আমিরাতের কন্ডিশনে যতটা জানা গেছে ব্যাটসম্যানরাই উইকেটে রাজত্ব করবেন। তবে নাসুম বিশ্বাস করেন পেশাদার ক্রিকেটার হিসেবে যে কোন উইকেটে তিনি তার সেরাটা দিতেই চেষ্টা করবেন। তিনি বলেন, ‘বিশ্বকাপে উইকেটে সুবিধা না থাকলেও আমাকে খেলতে হবে। আমি একজন পেশাদার খেলোয়াড়, আমাকে যেকোনো অবস্থায় খেলতে হবে। ফ্ল্যাট উইকেট কিংবা স্পিন উইকেট যেটাই হোক আমাকে দলের জন্য ভালো করতে হবে।’
দুই সিরিজে ১৬ উইকেট বলতে গেলে দারুণ সাফল্য। তবে বিশ্বকাপে বা পরেও একই ধারাবাহিকতা থাকবে তাও বলার কোন উপায় নেই। ক্রিকেটে শেষ বলে আসলে কোন কথা নেই। নাসুম আহমেদ নিজেও জানেন সেই বাস্তবতা। তবে এগিয়ে যাওয়ার বিশ্বাস রেখেই তিনি লড়াই করতে চান সবসময়। তিনি বলেন, ‘সবসময় তো একই রকম হয় না। খুব বেশি আশা করাও আবার ভালো না। তবে নিজের ভেতরে বিশ্বাস রাখাটা ভালো। আমার ভেতরে বিশ্বাস আছে, আমি কিছু একটা করতে পারব। সবার ভেতরেই এমন বিশ্বাস আছে যে আমরা ভালো কিছু একটা করব। আমরা চেষ্টা করব, বাকিটা আল্লাহর ইচ্ছা।’ বিশ্বকাপে সেমিফাইনাল খেলার ব্যাপারেও আত্মবিশ্বাসী নাসুম। তবে ভারতের বিপক্ষে কিংবা কোনো নির্দিষ্ট দলের বিপক্ষে বেশি ভালো করার করার লক্ষ্য নয়। তার লক্ষ্য প্রতিটি ম্যাচকে ঘিরে। নাসুম বলেন, ‘ইনশাআল্লাহ, আমরা চেষ্টা করব। যেহেতু অস্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ডকে হারিয়ে বিশ্বকাপে যাচ্ছি, আমাদের বিশ্বাস আছে। ভালো করার চেষ্টা সব ম্যাচেই থাকবে। আমার চেষ্টা থাকবে ভালো জায়গায় বোলিং করার, দলের জন্য যতটুকু রান আটকে বল করা যায়। আমার কাছে অধিনায়ক বা দল যা চায়, আমি সেটা দেওয়ার চেষ্টা করব।’ বাংলাদেশ দল আমিরাত-ওমানের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে কেমন করবে এ নিয়ে চলছে নানা জল্পনা-কল্পনা। টাইগার ক্রিকেটের ভক্তরাও আশায় বুক বেঁধেছেন দারুণ কিছু হবে সেই বিশ্বাস নিয়ে। নাসুমও ভক্ত ও দেশবাসীর প্রতি অনুরোধ জানিয়েছেন তাদের উপর বিশ্বাস ও আস্থা রাখতে। তিনি বলেন, ‘সবাই আমাদের জন্য দোয়া করবেন। ইনশাআল্লাহ আমরা ভালো কিছু করব। আমাদের প্রতি সেই বিশ্বাসটা রাখবেন। ভালো করার চেষ্টা করেছি এবং আলহামদুলিল্লাহ সাফল্য পেয়েছি। আমি আমার বোলিং ও ফিল্ডিং উপভোগ করেছি।
সূত্র: মানবজমিন