যশোরে ৩ ফুট উচ্চতার ছেলে ও মেয়ের বিয়ে দিয়েছেন এলাকাবাসী। কনে যশোরের সদর উপজেলার আন্দুলিয়া গ্রামের নাজির মোল্লার মেয়ে ময়না খাতুন। শুক্রবার রাতের এই বিয়েতে ধুমধামের কোনো কমতি ছিল না। গতকাল শনিবার ছিল বৌভাতের আয়োজন।
বর একই উপজেলার নরেন্দ্রপুর পোস্ট অফিস এলাকার মৃত আকবার আলীর ছেলে রবিউল ইসলাম। দুজনেরই শারীরিক বিকাশ স্বাভাবিক নয়। বর-কনে ও তাদের অভিভাবকদের সম্মতিতে দুপুরে এ বিয়ের আয়োজন করেন স্থানীয়রা। ৩ ফুট উচ্চতার বর-কনের বিয়ের খবরে আশপাশের গ্রাম থেকে হাজারো লোক ছুটে আসেন এই নবদম্পতিকে একনজর দেখার জন্য। এলাকাবাসীর এই প্রশংসনীয় উদ্যোগে খুশি নবদম্পতি।
সদর উপজেলার নরেন্দ্রপুর ইউনিয়ন পরিষদের ইউপি সদস্য সুজিত বিশ্বাস গণমাধ্যমকে বলেন, বর রবিউল ইসলামের বয়স ২৬ বছর হলেও তার উচ্চতা ৩ ফুট। আর ৩৬ বছর বয়সী কনে ময়না খাতুনের উচ্চতাও ৩ ফুট।
এলাকাবাসীর সার্বিক সহযোগিতায় বিয়ের গেট সাজিয়ে, প্যান্ডেল নির্মাণ করে ধুমধাম করে বিয়ে দেওয়া হয়েছে। বিয়েতে দুইটি মাইক্রোবাসসহ ২০টি মোটরসাইকেলে ৬০ জন বরযাত্রী এসেছিল। মুসলিম শরিয়াহ অনুযায়ী সব আনুষ্ঠানিকতা শেষে ১ হাজার ১ টাকা কাবিনে তাদের বিয়ে সম্পন্ন হয়।
বরের খালু জাহাঙ্গীর হোসেন গণমাধ্যমকে বলেন, বর রবিউলের জন্ম খুবই দরিদ্র পরিবারে। ছোটবেলা থেকে তার বাবা-মা কেউ নেই। ছোট থেকে আমরাই রবিউলকে মানুষ করেছি। কৃষিকাজ করেই সে জীবিকা নির্বাহ করে আসছে। রবিউলের বিয়ের বয়স হলেও অনেকদিন ধরে বিয়ের জন্য মেয়ে খুঁজে পাচ্ছিলাম না। অবশেষে পাশের আন্দুলিয়া গ্রামে একটি মেয়ে খুঁজে পাই। জানতে পারি ওই গ্রামের নাজির মোল্লার মেয়েও কম উচ্চতার। স্থানীয় ব্যক্তিদের সার্বিক সহযোগিতায় তাদের বিয়ের কাজ সম্পন্ন হয়েছে। বিয়ের পরে নতুন বর-বউকে দেখতে ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রাম থেকে লোকজন আসছে। সেইসঙ্গে তাদের জন্য দোয়াও করছেন দেখতে আসা বিভিন্ন শ্রেণির এসব মানুষ।
বর রবিউল উচ্ছ্বাস প্রকাশ করে গণমাধ্যমকে বলেন, দুজনের সম্মতিতেই আমাদের বিয়ে হয়েছে। বিয়ে করতে পেরে অনেক আনন্দ লাগছে। দেশবাসীর কাছে এই দম্পতি দোয়া চেয়েছেন।
কনে ময়না স্বভাবসুলভ ভঙ্গিতে গণমাধ্যমকে বলেন, আমাদের বিয়ে খুব ধুমধামে হয়েছে। অনেক ভালো লাগছে। এভাবে বিয়ে হবে কখনো স্বপ্নও দেখেনি। বিয়েতে আসা দুই পক্ষ অনেক আনন্দ করেছে। আমাদের জন্য দোয়া করবেন সবাই।
সুত্র: বিডি প্রতিদিন