চাঁদপুরের শাহরাস্তিতে আলোচিত নওরোজ আফরিন প্রিয়া (২১) হত্যা মামলায় জড়িত সন্দেহে তার মায়ের পরকীয়া প্রেমিক হান্নানকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। বৃহস্পতিবার সকালে তাকে আদালতে পাঠানো হয়েছে।
শাহরাস্তি মডেল থানা সূত্র জানায়, বুধবার বিকেলে নিহত প্রিয়ার প্রতিবেশী দেবকরা গ্রামের মৃত মুনসুর আলী ভূঁইয়ার ছেলে মো: আ: হান্নানকে (৩১) গ্রেফতার করা হয়। প্রিয়ার মায়ের সাথে তার পরকীযঅ প্রেমের সম্পর্ক ছিল বলে পুলিশ জানতে পেরেছে।
পুলিশ জানায়, পাঁচ-ছয় বছর আগে মামলার বাদী প্রিয়ার মা তাহমিনা সুলতানা রুমি ও আ: হান্নানের পরকীয়ার বিষয়টি প্রকাশ পায়। এ ঘটনা জানাজানি হলে হান্নান সৌদি আরব চলে যান। ঘটনার এক মাস আগে তিনি দেশে আসেন। পুলিশের ধারণা, এ হত্যার সাথে হান্নান যুক্ত থাকতে পারেন।
এলাকায় খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, প্রিয়া ও হান্নানদের বাড়ি পাশাপাশি। প্রিয়ার বাবা বিদেশে থাকার সুবাদে পাঁচ-ছয় বছর আগে প্রিয়ার মা রুমির সাথে হান্নানের অবৈধ পরকীয়া প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে। প্রিয়া নিজেই একদিন আপত্তিকর অবস্থায় তাদের ধরেন। পরে বিষয়টি মামলা পর্যন্ত গড়ায়। রুমির স্বামী ইসমাইল হোসেন স্ত্রীর অবৈধ সম্পর্কের বিষয়ে সৌদি আরব থেকে জানতে পেরে তার সাথে ছাড়াছাড়ির সিদ্ধান্ত নিলে স্থানীয়ভাবে বেশ কয়েকটি সালিশের মাধ্যমে বিষয়টি নিষ্পত্তি হয়। এরপর হান্নান বিদেশে চলে যান। প্রিয়া হত্যার এক মাস পূর্বে হান্নান দেশে আসে।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পুলিশ পরিদর্শক আসাদুল ইসলাম জানান, ঘটনায় জড়িত সন্দেহে আ: হান্নানকে আটক করা হয়েছে। তদন্ত সম্পন্ন হওয়ার আগে এ বিষয়ে মন্তব্য করা যাবে না।
থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো: আবদুল মান্নান জানান, প্রিয়া হত্যার রহস্য উদঘাটনে পুলিশ কাজ করছে। এ ঘটনায় সন্দেহভাজন হিসেবে প্রিয়ার মায়ের প্রেমিক আ: হান্নানকে গ্রেফতার করা হয়েছে। আশা করি অল্প সময়ের মধ্যে আসামিদের শনাক্ত করে আইনের আওতায় আনা সম্ভব হবে।
প্রসঙ্গত, ১৬ সেপ্টেম্বর রাত ৮টার দিকে উপজেলার রায়শ্রী দক্ষিণ ইউনিয়নের আহাম্মদ নগর ছোটপোদ্দার বাড়িতে নওরোজ আফরিন প্রিয়াকে কুপিয়ে হত্যা করে দুর্বৃত্তরা। তিনি ওই বাড়ির প্রবাসী ইসমাইল হোসেনের একমাত্র মেয়ে। তার স্বামীর বাড়ি কুমিল্লায়। স্বামী খাইরুজ্জামান চৌধুরী হৃদয় কুমিল্লায় চাকরি করেন। নিহতের আবরীন জামান উম্মে আনহার (২) নামে একটি সন্তান রয়েছে।
ঘটনার সময় নিহতের মা তাহমিনা সুলতানা রুমি প্রিয়ার মেয়ে আনহার জন্য ওষুধ আনতে পাশের বাড়িতে স্থানীয় গ্রাম্য চিকিৎসক গৌরাঙ্গের কাছে গিয়েছেলেন বলে মামলায় উল্লেখ করেছেন। মামলার বর্ণনা অনুযায়ী, সেখান থেকে ফিরে তিনি ঘরে মেয়ে প্রিয়ার রক্তাক্ত লাশ দেখতে পান।
ঘটনার পর দিন প্রিয়ার মা তাহমিনা সুলতানা রুমি শাহরাস্তি মডেল থানায় অজ্ঞাতদের আসামি করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
সূত্র: বি ডি প্রতিদিন