দুজনেরই কিডনি প্রতিস্থাপন করতে হবে। একজন হিন্দু, অন্যজন মুসলিম। অনেক খোঁজ করেও কিডনি মিলছিল না। তাদের বাঁচাতে এগিয়ে আসেন তাদের স্ত্রীরা। তবে কিডনি ম্যাচিং হচ্ছিল না। পরে চিকিৎসক পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে দেখেন একে অপরের স্বামীকে কিডনি দিতে পারবেন ওই দুই নারী। পরে ধর্মের বেড়াজাল ছিন্ন করে পরস্পরকে কিডনি দান করে মানবিকতার অনন্য উদাহরণ তৈরি করেন তারা।
ঘটনাটি ঘটেছে ভারতের উত্তরাখণ্ডে। আজ মঙ্গলবার ভারতীয় সংবাদমাধ্যম টাইমস অব ইন্ডিয়ার এক প্রতিবেদনে বলা হয়, বিকাশ উনিয়ালের (৫০) কিডনি বিকল দুই বছর ধরে। কিডনির একই সমস্যা আশরাফ আলী (৫১) একজনেরও। তারা দুজনেই কিডনি প্রতিস্থাপন করতে চেয়েছিলেন, কিন্তু পাচ্ছিলেন না।
দুজনই উত্তরাখণ্ডের দেরাদুনের হিমালয় হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন। কিডনির খোঁজ করছিলেন তারা। এতে প্রচুর সময় লাগছিল। কারণ একজন কিডনি দাতা পাওয়ার জন্য তার রক্ত পরীক্ষা, ক্রসম্যাচ টেস্ট, এইচএলএ অ্যান্টিজেন টেস্ট এবং আরও নানা ধরনের পরীক্ষা-নিরীক্ষা করতে হয়। সেগুলো মিলছিল না।
হিমালয় হাসপাতালের জ্যেষ্ঠ নেফ্রোলোজিস্ট ডা. শাহবাজ আহমেদ বলেন, ‘বিকাশ এবং আশরাফের স্ত্রীরা নিজ নিজ স্বামীর জন্য কিডনি দানের ইচ্ছা প্রকাশ করেন। কিন্তু তাদের রক্তের গ্রুপ ম্যাচিং করছিল না। পরে দেখা যায়, বিকাশের স্ত্রী সুশমার রক্তের গ্রুপ আশরাফ আলীর সঙ্গে ম্যাচ করছে এবং আশরাফের স্ত্রী সুলতানার রক্তের গ্রুপ বিকাশের স্ত্রীর রক্তের গ্রুপের সঙ্গে ম্যাচ করছে।’ তখনই সুশমা এবং সুলতানা দুজনে একে অপরের স্বামীকে কিডনি দেওয়ার জন্য রাজি হয়ে যান।
সুশমা বলেন, ‘এটি সৌভাগ্যজনক, কাকতালীয় ঘটনা। আমার স্বামী গত আড়াই বছর ধরে ভুগছেন। অস্ত্রোপচারের আগে আমাদের সব ধরনের পরীক্ষা করা হয়। এতে কোনো সমস্যা ধরা না পড়ায় আমরা একে অপরের স্বামীকে কিডনি দিয়েছি।
সুলতানা বলেন, ‘আমাদের কাছে এর মূল্য অনেক; অর্থ এবং মানসিক উভয় দিক থেকে। কিন্তু আমরা এই পরিস্থিতিতে পরস্পরকে সাহায্য করতে পেরেছি, এটাই গুরুত্বপূর্ণ।
সূত্র: আমাদের সময়.কম