খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে হাঁটছিলেন। অতি কষ্টে স্ন্যাচে ৭৫ কেজি তোলেন। ক্লিন অ্যান্ড জার্কে ৯৫ কেজি তুলতে বেগ পেতে হয়েছে। শরীর যেন সায় দিচ্ছে না। তা সত্ত্বেও বুধবার জাতীয় ভারোত্তোলনে ৬৪ কেজি ওজন শ্রেণিতে ১৭০ কেজি তুলে সেরা বাংলাদেশ আনসারের মাবিয়া আক্তার। ২০১৯ নেপাল এসএ গেমস এবং এ বছর এপ্রিলে বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশ গেমসের পর তৃতীয় স্বর্ণ জিতলেন মাবিয়া। তারপরও তার আক্ষেপ, ইনজুরি ও শারীরিক অসুস্থতা তাকে রেকর্ড গড়তে দেয়নি। মাবিয়া বলেন, ‘চেষ্টা করেছি রেকর্ড গড়ার। চোট সারিয়ে উঠতে পারিনি এখনো। শারীরিকভাবে অসুস্থ। ইচ্ছা করে সেরাটা দেওয়ার চেষ্টা করিনি। চাইলেও পারতাম না।’
টানা দুটি এসএ গেমসে স্বর্ণজয়ী মাবিয়ার ক্ষোভ, ‘আমি আর অলিম্পিকের স্বপ্ন দেখি না। পরপর তিনবার হোঁচট খেয়েছি। আর ওই পথে যাব না। আমি কোথা থেকে কোথায় উঠে এসেছি, সবাই তা জানে। আমি যখন খেলায় আসি ফেডারেশন আমাকে যথেষ্ট সাপোর্ট করেছে। সহসভাপতি উইং কমান্ডার (অব.) মহিউদ্দিন স্যার সাপোর্ট করেছেন। আমি যে লড়াই করে এসেছি, এখনকার জুনিয়ররা তা করে না। তারা যে সুবিধা পায় আমি তা পাইনি। আমি যা চাই তা পাই না। আমি স্ট্যাম্পে লিখে দেব, আমাকে যদি ট্রেনিং প্ল্যানে রাখা হয়, আমার পক্ষে কমনওয়েলথ গেমসে মেডেল আনা সম্ভব।’ মাবিয়া বলেন, ‘আজ সেরাটা দিতে পারিনি বলে অপরাধবোধ হচ্ছে। এটা কাউকে বলতে পারব না। যদি ভবিষ্যতে আর না-ও খেলতে পারি, তাহলেও বাংলাদেশ গেমসের রেকর্ড রয়ে গেল। জুনিয়ররা ভালো খেলছে। আমি না খেললেও ওরা ভালো খেলবে। কষ্ট একটাই, মাইলফলক করে যেতে পারিনি। সামনে আমি এমন একটি রেকর্ড করে যেতে চাই, যা বাংলাদেশের কোনো ভারোত্তোলক ভাঙতে পারবে না। এটা আমার নিজের কাছে নিজের প্রমিজ। আমি এসএ গেমসে টানা তৃতীয় স্বর্ণপদক এনে দিতে চাই।’ ফেডারেশনের সহসভাপতি মহিউদ্দিন বলেন, ‘মাবিয়াকে অলিম্পিকের বাছাইয়ের জন্য ১১ বার বিদেশে পাঠিয়েছি। এটা ওর জন্য যথেষ্ট। ও অলিম্পিকে সুযোগ পায়নি র্যাংকিংয়ে আসতে পারেনি বলে। ইনজুরিতেও ছিল। ওর চাহিদামতো সব দিয়েছি আমরা।’ তিনি যোগ করেন, ‘এবারের সিনিয়র আসরে অনেক নতুন মুখ দেখা যাবে। ওরা কোয়ালিফাই করেছে। এটা শুভ লক্ষণ। ১০ ছেলে ও ১০ মেয়ে বাছাই করতে হবে। কমনওয়েলথ সামনে। বাছাই করতে সুবিধা হবে।
সূত্র: যুগান্তর