হত্যার পর প্রথমে খালে ফেলে দেয়া হয়েছিল ছেলের লাশ। ছেলে হত্যার বিচার চাওয়ায় ৯ মাসের মাথায় বৃদ্ধ বাবাকেও একই কায়দায় হত্যা করে দুর্বৃত্তরা। পরে ওই ঘটনাকে ধামাচাপা দিতে জোড়া খুনের দায় চাপানো হয় পাহাড়ি সন্ত্রাসীদের ওপর।
মঙ্গলবার পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) ১৮ ঘণ্টার অভিযানে খাগড়াছড়ি ও চট্টগ্রামের ফটিকছড়ি থেকে হত্যার সাথে জড়িত তিনজনকে আটকের পর বের হয়ে আসে পিতা-পুত্রের খুনের রহস্য।
কখনো গুঁড়ি গুঁড়ি আবার কখনো মুষলধারে বৃষ্টি। এর মধ্যে মঙ্গলবার সকালে চট্টগ্রামের ফটিকছড়ির দুর্গম কাঞ্চননগর পাহাড়ি কাদা-মাটির পথে হেঁটে হেঁটে সাঁড়াশি অভিযান শুরু করে পিবিআই কর্মকর্তারা। সন্ধ্যার মধ্যেই একে একে গ্রেফতার হয় জোড়া খুনের মূল পরিকল্পনাকারী ফিরোজসহ কিলিং মিশনের আরো দু’জন।
চট্টগ্রাম জেলা পিবিআইয়ের পুলিশ সুপার নাজমুল হাসান এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
এ দিকে বছরের ২৮ সেপ্টেম্বর খাগড়াছড়ির লক্ষ্মীছড়ি এলাকার খামারে কাজ করতে গিয়ে নিখোঁজ হন ফটিকছড়ির কাঞ্চননগর এলাকার বাসিন্দা ফকির আহমদ। পরদিন দুর্গম এ অঞ্চলের দুধ্যাছড়ি খাল থেকে গলা কাটা অবস্থায় ফকির আহমদের লাশ উদ্ধার করা হয়।
এ ঘটনায় তার বাবা এজাহার মিয়া একটি মামলা দায়ের করেন। পাহাড়ি সন্ত্রাসীরাই ফকির আহমেদকে হত্যা করেছে বলে গুজব ছড়িয়ে পড়ায় থানা পুলিশের তদন্তে তেমন কোনো অগ্রগতি হয়নি। কিন্তু এজাহার মিয়া তদন্তে গতি আনার চেষ্টা করলে চলতি বছরের ২৫ জুন একইভাবে বাবাকেও হত্যা করে দুষ্কৃতকারীরা। মাত্র ৬ দিন আগে এজাহার মিয়া হত্যা মামলার তদন্তের দায়িত্ব পায় পিবিআই। আর এ মামলার তদন্ত করতে গিয়ে বের হয়ে আসে পিতা-পুত্রের জোড়া খুন একই সূত্রে গাঁথা। আর এ মামলার তদন্তের দায়িত্ব পান পিবিআই কর্মকর্তা কামাল আব্বাস। আটকের পর পরই তিনজনের মধ্যে দু’জন স্বীকার করে ফকির আহমেদ খামার এলাকায় অন্যদের গরু চরাতে না দেয়ায় ফিরোজ তাকে হত্যার পরিকল্পনা করে। সে অনুযায়ী ভাড়াটিয়া খুনিদের দিয়ে প্রথমে ফকির আহমেদকে হত্যা করা হয়। কিন্তু পরে এ হত্যাকাণ্ডে ফেঁসে যাওয়ার ভয়ে তারা বৃদ্ধ এজাহার মিয়াকেও হত্যা করে। দুটি হত্যাকাণ্ডের মূল পরিকল্পনাকারী আটক ফিরোজ মিয়া হলেও এর সাথে কিলিং মিশনে অন্তত ৮ জন ছিল বলে নিশ্চিত হয়েছে পিবিআই। দু’টি মামলারই তদন্তভার পাওয়ার পর বাকি আসামিদেরও গ্রেফতার অভিযান চলছে বলে জানিয়েছে সংস্থার কর্মকর্তারা।
সূত্র: নয়াদিগন্ত