কিডনি মানবদেহের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি অংশ। কিডনিকে ভালো রাখতে হলে কিছু নিয়ম মেনে চলতে হবে। যেটিকে ‘রুল অব এইটস বা আট নিয়ম’ বলা হয়। এটি ঠিকমত পালন করলে কিডনি ভালো রাখা যেতে পারে। এ প্রসঙ্গে বিস্তারিত জানিয়েছেন ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের নেপ্রোলোজি বিভাগের ডা. এএসএম তানিম আনোয়ার।
তিনি জানান, ‘রুল অব এইটস বা আট নিয়ম’ অনুযায়ী, আমাদের পর্যাপ্ত পরিমাণ পানি খেতে হবে। যাদের প্রেশার আছে, তাদের প্রেশার নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। যাদের ডায়াবেটিস আছে, তাদের ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করতে হবে।
নিয়মিত ব্যায়াম করতে হবে। সেটা সাইক্লিং হতে পারে, সুইমিং হতে পারে কিংবা হাঁটাহাঁটি হতে পারে। যাদের ব্যাথার ওষুধ খাওয়ার অভ্যাস আছে, তাদের তা পরিহার করতে হবে। আর যারা ভাতের সঙ্গে অতিরিক্ত কাঁচা লবণ খান, তা পরিহার করতে হবে। এ ছাড়া নিয়মিয়ত স্ক্রিনিং করতে হবে। যদিও আমাদের দেশে এই ব্যবস্থা নেই। তবুও অন্তত একবার হলেও কিডনিটা ভালো আছে কিনা চেক আপ করতে হবে।
ডা. এএসএম তানিম আনোয়ার আরও জানান, আর খাদ্যাভ্যাসের ব্যাপারে বলতে চাই, আপনারা ফ্রুটস জাতীয় খাবার কম খাবেন। দেড় লিটারের বেশি পানি খাবেন না। যদি ঘাম বেশি হয়, তখন দুই লিটার পর্যন্ত খেতে পারবেন। ভাতের সাথে কাঁচা লবণ খাবেন না।
তেলচর্বি জাতীয় খাবার কম খাবেন। গরুর মাংস, খাসির মাংস কম খাবেন। খেলেও এক টুকরার বেশি খাবেন না। যেসব মাছ তেল আছে- যেমন ইলিশ মাছ, চিংড়ি মাছ, শুটকি মাছ, পাঙ্গাস মাছ ইত্যাদি কম খাবেন।
আর যাদের ডায়াবেটিস আছে, তারা মিষ্টি জাতীয় খাবার একদম খাবেন না। ডালের ওপরের পাতলা পানিটা খেতে পারবেন, ঘন ডাল কম খাবেন। যাদের ক্রিয়েটিনিন ২ এর ওপরে তাদেরকে রমজানের রোজা রাখতে মানা করি। রাখলেও ছোলা-বুট, পিঁয়াজু-বেগুনি, হালিম ইত্যাদি খাওয়া যাবে না।শাক-সবজির মধ্যে পুঁই শাক ও পালং শাক খেতে না করি। বিচি জাতীয় সবজি যেমন- শিম, ঢেড়শ, পটল না খাওয়াই ভালো এবং ফুলকপি, বাধাকপি কম খাবেন।
এ ছাড়া যেকোনো ধরনের ফল আর ফলের রস কম খাবেন। বেশি খেতে চাইলে আপেল, নাশপাতি, পেয়ারা বিচি ফেলে খেতে পারবেন। তিনটা ফল আমরা একদম নিষেধ করি। সেগুলো হলো- কামরাঙা, বেলম্বু, এলোবেরা একদমই নিষেধ। ডিম-দুধ খেতে পারবেন। প্রেশার বেশি থাকলে ডিমের কসুমটা বাদ দিয়ে খাবেন। ক্যালসিয়াম কম হলে দুধ খাবেন। তবে সেক্ষেত্রে যদি আধা গ্লাস দুধ খান তাহলে আধা গ্লাস পানি কম খেতে হবে।