সাইপ্রাসে ১৯৭৪ সালে তুরস্কের অভিযানের পর থেকে দেশটির ওপর আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের চাপ ও অস্ত্র নিষেধাজ্ঞা বাড়তে থাকে। এতে বিপদে পড়ে যায় মধ্যপ্রাচ্যের দেশটি। তখন দেশটি প্রতিরক্ষা খাতে স্বয়ংসম্পূর্ণ হয়ে উঠার প্রয়োজনীয়তা অনুভব করে।
অভ্যন্তরীণ প্রতিরক্ষা খাত এবং তার্কিশ আর্মড ফোর্সেসের (টিএসকে) আধুনিকায়নে ১৯৮৫ সালে তুরস্কের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী তুরগুত ওজালের সময়ে ডিফেন্স ইন্ডাস্ট্রি ডেভেলপমেন্ট অ্যান্ড সাপোর্ট অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (এসএজিইবি) প্রতিষ্ঠিত হয়। এরপর প্রতিষ্ঠানটি কাঠামো পরিবর্তন করে।
তবে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে তুরস্কের প্রতিরক্ষা খাত প্রেসিডেন্সি অব ডিফেন্স ইন্ড্রাস্ট্রিজের (এসএসবি) নেতৃত্বে গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্প চালিয়ে যাচ্ছে।
আর এ প্রতিষ্ঠানই তুরস্ককে অন্য দেশের ওপর নির্ভরশীলতা কমানোর পাশাপাশি বিশ্বের বৃহত্তর অস্ত্র রপ্তানিকারক দেশগুলোর অন্যতম প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে আত্মপ্রকাশে সহযোগিতা করছে।
এসএসবির ৩৬তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে সংস্থাটির প্রধান ইসমাইল দেমির এসব কথা বলেন। খবর ডেইলি সাবাহর।
তুরস্কের প্রেসিডেন্সি অব ডিফেন্স ইন্ড্রাস্ট্রিজের প্রধান ইসমাইল দেমির বলেন, তুরস্কে ২০০২ সালে মাত্র ৬২টি প্রতিরক্ষা প্রকল্প চলমান ছিল। বর্তমানে তুরস্কের প্রতিরক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো প্রায় ৭৫০টি প্রকল্প পরিচালনা করছে। গত পাঁচ বছরের মধ্যে শুরু হয়েছে এগুলোর অর্ধেকের মতো প্রকল্প। আগে প্রজেক্ট ভলিয়ম ছিল মাত্র ৫.৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের। এখন তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে প্রায় ৬০ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে। অভ্যন্তরীণ ও বাহ্যিক সংকটের পর এসএসবি এখন রাষ্ট্রীয় সংস্থা।
তুরস্কের বর্তমান এরদোগান সরকার তুরগুত ওজালের স্বপ্নপূরণে আরও এক ধাপ এগিয়ে যাচ্ছে।
এসএসবির প্রধান বলেন, তুরস্কের প্রতিরক্ষা শিল্প দেশের নিরাপত্তার জন্য স্থল, আকাশ, সমুদ্র, মহাকাশ এবং সাইবার স্পেসের ক্ষেত্রে কাজ করে চলেছে। আমরা বেশ কিছু ক্ষেত্রে বিশ্বের নেতৃত্ব দেওয়া দেশের একটি এবং আমরা প্রতিযোগিতামূলক পণ্য উৎপাদন করছি। আমরা সব সময় বলে আসছি, আমাদের লক্ষ্য প্রতিরক্ষা শিল্পে স্বয়ংসম্পূর্ণ হওয়া। ভিন্ন অর্থে যদি বলা হয়, যে প্রযুক্তি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ও কৌশলগত আমরা সেটিই অর্জন করতে চাই।
কে এই তুরগুত ওজাল
১৯২৭ সালে তুরস্কের মালাতিয়ায় জন্ম হয় তুরগুত ওজালের। তিনি ইস্তান্বুল টেকনিক্যাল ইউনিভার্সিটির ইলেক্ট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং থেকে ১৯৫০ সালে স্নাতক সম্পন্ন করেন।
মাদারল্যান্ড পার্টির (এএনএপি) নেতা হিসেবে ওজাল ১৯৮৩ থেকে ১৯৮৯ পর্যন্ত তুরস্কের ২৬তম প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। এরপর ১৯৮৯ থেকে ১৯৯৩ পর্যন্ত ছিলেন দেশটি ৮ম প্রেসিডেন্ট।
একটি সফর থেকে ফেরার পর ১৯৯৩ সালের ১৭ এপ্রিল হঠাৎ হার্ট অ্যাটাকে তুরস্কের জনপ্রিয় এ রাজনীতিবিদের মৃত্যু হয়।
সূত্র: যুগান্তর