মোবাইল ফোনে আবেগে কাঁদছিলেন পঞ্চাশের কাছাকাছি বয়সী ফরিদ আহমেদ। মোবাইল ফোনে বলছিলেন, ‘তোমার পোলার চাকরিটা হইছে। কোনো ট্যাহা লাগে নাই। ১৩৩ ট্যাহা খরচ অইছে। সাকিব এহন পুলিশ সদস্য। ’ এ কথা বলেই স্ত্রীর সঙ্গে কথা শেষ করেন ফরিদ।
কোনো টাকা ছাড়া ছেলে সাকিব হাসান বাংলাদেশ পুলিশের সদস্য নির্বাচিত হয়েছে-এ আনন্দ ধরে রাখতে পারছিলেন না গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপজেলার ফুলবাড়িয়া গ্রামের ফরিদ আহমেদ। সোমবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে গাজীপুর পুলিশ লাইন্স মাঠে ট্রেইনি রিক্রুটিং কনস্টেবল (টিআরসি) পদে নিয়োগ পরীক্ষার চূড়ান্ত ফলাফল মাইকে ঘোষণা করেন জেলা পুলিশ সুপার এস এম শফিউল্লাহ।
ফরিদ আহমেদ তার ছেলে সাকিব হাসানকে নিয়ে মাঠেই অবস্থান করছিলেন। ১৫ জনের পর যখন সাকিবের নাম ঘোষণা করা হয় তখনই আনন্দে কাঁদতে থাকেন ফরিদ। সাকিবের চোখও ছলছল করে উঠে। সাকিব জানান, ছোটবেলা থেকেই পুলিশ সদস্য হয়ে মানুষের সেবা করার স্বপ্ন লালন করে আসছে। আজ তার স্বপ্ন পূরণ হওয়ার আনন্দে নিজের অজান্তেই গাল গড়িয়ে অশ্রু ঝরছে।
শুধু ফরিদ আর তার ছেলে সাকিব নয়, বিনা টাকায় চাকরি পাওয়ায় অনেককেই আনন্দ প্রকাশ করতে দেখা গেছে মধ্য রাত পর্যন্ত। এ তরুণরা জানান, ‘শুনেছি, টাকা ছাড়া পুলিশের চাকরি হয় না। পুলিশের চাকরিতে যে কোনো টাকা লাগে না, আজ এর প্রমাণ আমরা নিজেরাই। আবেদন করতে মাত্র ১৩৩ টাকা লেগেছে। খরচ বলতে এ পর্যন্তই। কোনো ধরনের টাকা ছাড়েই নানা পরীক্ষা নিরীক্ষা শেষে ৭১ জনকে চূড়ান্তভাবে নির্বাচিত করা হয়।
সূত্র: সমকাল