কক্সবাজার সদরের লিংকরোডে মুখোশধারীদের গুলিতে নিহত জেলা জাতীয় শ্রমিক লীগের সভাপতি জহিরুল ইসলাম সিকদার হত্যা মামলায় ছাত্রশিবিরের শহর শাখার সাবেক সভাপতি ইমাম খাইরকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
ইমাম খাইর কক্সবাজারের নবগঠিত ঈদগাঁও উপজেলার ইসলামপুর ইউনিয়নের নতুন অফিস ফুলছড়ি এলাকার ফরিদুল আলমের ছেলে।
শুক্রবার র্যাব-১৫ কক্সবাজার ব্যাটালিয়নের অতিরিক্ত অধিনায়ক মেজর মেহেদী হাসান জানান, চাঞ্চল্যকর এ হত্যা মামলার সঙ্গে জড়িত সন্দেহে বৃহস্পতিবার মধ্যরাতে কক্সবাজার শহরে চাউল বাজার এলাকা থেকে ইমাম খাইরকে (৩৭) আটক করা হয়।
তিনি জানান, আটকের পর তাকে কক্সবাজার সদর থানায় পাঠানো হয়েছে বলেও জানান ওই র্যাব কর্মকর্তা।
র্যাব জানায়, ইমাম খাইর শ্রমিক লীগ নেতা জহিরুল ইসলাম সিকদার হত্যা পরিকল্পনায় জড়িত ছিল। পাশাপাশি তার কাছ থেকে ওই হত্যাকাণ্ডের অনেক গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাওয়া গেছে।
এছাড়াও তার সঙ্গে হত্যাকারীদের সর্বদায় যোগাযোগ ও দেখা-সাক্ষাৎ হয়েছে। যার সমস্ত প্রমাণ র্যাবের কাছে রয়েছে। আটক ইমাম খাইর ছাত্রশিবিরের কক্সবাজার সরকারি কলেজ শাখার সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও কক্সবাজার শহর শাখার সাবেক সভাপতি ছিলেন।
গত ৫ নভেম্বর রাত সাড়ে ১০টায় কক্সবাজার সদরের লিংকরোড স্টেশনে ঝিলংজাইউ নিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও ইউপি সদস্য কুদরত উল্লাহ সিকদারের ব্যক্তিগত অফিসে অবস্থান করছিলেন তার বড়ভাই জেলা শ্রমিক লীগের সভাপতি জহিরুল ইসলাম সিকদার।
এসময় একদল মুখোশধারী মোটরসাইকেলে এসে তাদের লক্ষ্য গুলি ছুড়ে এবং কুপিয়ে জখম করে। এতে তিনজন গুলিবিদ্ধ হন। পরে স্থানীয়রা তাদের উদ্ধার করে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে নিয়ে যায়।
প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে আহতদের মধ্যে কুদরত উল্লাহ সিকদার ও তার বড়ভাই জহিরুল ইসলাম সিকদারের শারীরিক অবস্থা আশংকাজনক হওয়ায় ওই দিনরাতে চিকিৎসকরা তাদের চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠান। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গত ৭ নভেম্বর দুপুরে জহিরুল ইসলাম সিকদার মারা যায়।
এ ঘটনায় গত ৯ নভেম্বর হামলায় আহত কুদরত উল্লাহ সিকদার বাদী হয়ে ১৯ জনের নাম উল্লেখ করে আরও কয়েকজন আজ্ঞাতের বিরুদ্ধে কক্সবাজার সদর থানায় মামলা দায়ের করেন। পরে এ মামলা নিয়ে পুলিশের পাশাপাশি মাঠে নামে র্যাব-১৫। উন্নত প্রযুক্তির মাধ্যমে মূল আসামিসহ সন্দেহভাজনদের আইনের আওতায় আনার জন্য অভিযান চালায় র্যাব।
কক্সবাজারস্থ র্যাব-১৫ এর অধিনায়ক লে. কর্নেল খায়েরুল ইসলাম যুগান্তরকে বলেন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষা করা আমার ঈমানি দায়িত্ব। আমি আমার পেশাগত দায়িত্বকে ইবাদত মনে করি। সুতরাং চাঞ্চল্যকর জহির হত্যা মামলা নিয়ে র্যাব শতভাগ পেশাগত দায়িত্ব নিয়ে কাজ করছে। আর হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদঘাটন করতে গিয়ে মামলার প্রধান আসামিদের সঙ্গে ইমাম খাইরের নিবিড় সম্পর্কের এবং যোগাযোগের অনেক গুরুত্বপূর্ণ তথ্য র্যাবের কাছে আসে। তাই তাকে গ্রেফতার করে ওই মামলায় কক্সবাজার সদর থানায় পাঠানো হয়েছে।
কক্সবাজার সদর মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) বিপুল চন্দ্র দে যুগান্তরকে বলেন, র্যাব-১৫ কর্তৃক সোপর্দকৃত আসামি ইমাম খাইরকে জেলা শ্রমিক লীগের সভাপতি জহিরুল ইসলাম হত্যা মামলায় আদালতে পাঠানো হয়েছে।
সূত্র: যুগান্তর