মুখ-হাতের ত্বকের যত্ন আমরা নিয়েই থাকি, কিন্তু বেশিরভাগ সময়ই আমরা ভুলে যাই পায়ের কথা। শীতে পায়ের চামড়া শুষ্ক-রুক্ষ হয়ে ফাটতে শুরু করে এবং সেখানে ধুলো-ময়লা জমতে শুরু করে। এতে অনেক সময় পা ফেটে পায়ের সৌন্দর্যও নষ্ট হয়।
পায়ের নীচে বা গোড়ালির আশেপাশে শক্ত ও শুষ্ক ত্বক, মরা চামড়া এবং ত্বকে ফাটল ধরার সমস্যা অনেকেরই হয়ে থাকে, বিশেষ করে শীতকালে এই সমস্যা আরও প্রকট হয়। তবে সঠিকভাবে দেখভাল করলে পায়ের ত্বক নরম ও মসৃণ হয়ে উঠতে পারে। চলুন, জেনে নেওয়া যাক পায়ের সৌন্দর্য ফেরাতে কী করবেন-
১. এক্সফোলিয়েট: এক্সফোলিয়েশনের মাধ্যমে পায়ের পাতা থেকে সহজেই মৃত ত্বক অপসারণ করা যায়। এই ফুট স্ক্রাব কিনতে পাওয়া যায় দোকানগুলোতে, আবার ফল, মধু, চিনি এবং গরম পানি মিশিয়ে বাড়িতেও তৈরি করে নেওয়া যেতে পারে। এছাড়া, পা এক্সফোলিয়েট করার জন্য বিভিন্ন প্রোডাক্টও ব্যবহার করা যেতে পারে।
২. পা নিয়মিত ময়শ্চারাইজ করা: নিয়মিত পায়ের ময়শ্চারাইজিং করলে পায়ের পাতায় থাকা শুষ্ক ত্বকের সমস্যা কমে এবং পায়ের পাতার নীচে নতুন করে শুষ্ক ত্বক হতেও বাধা দেয়। এক্সফোলিয়েটর ব্যবহার করার পরের ধাপই হচ্ছে পা ময়শ্চারাইজ করা।
৩. পিউমিক স্টোন বা ফুট ফাইল ব্যবহার: পিউমিক স্টোন বা মেটাল ফুট ফাইল পায়ের শুষ্ক, শক্ত ত্বক এবং কড়া পড়ে যাওয়া ত্বক অপসারণ করতে সাহায্য করে। পিউমিক স্টোন হল প্রাকৃতিক লাভা পাথর, যা পায়ের মরা চামড়া অপসারণ করতে সাহায্য করে। এটি ব্যবহারের প্রথম ধাপে ডেড স্কিন নরম করতে কিছুক্ষণ গরম পানিতে পা ভিজিয়ে রাখতে হবে। তারপর একটি পিউমিক স্টোন বা ফুট ফাইল নিয়ে ডেড স্কিনের উপর বৃত্তাকার গতিতে আলতোভাবে ঘষতে হবে। ডেড স্কিন উঠে গেলে পা ধুয়ে ও ভালোভাবে শুকিয়ে নিয়ে ভাল লোশন, ক্রিম বা তেল লাগাতে হবে।
৪. উষ্ণ গরম পানিতে পা ভিজিয়ে রাখা: হালকা গরম পানিতে কিছুক্ষণ পা ভিজিয়ে রাখলে শক্ত চামড়া ও ডেড স্কিন আলগা হয়ে যায়। এটি পায়ে রক্তসঞ্চালনকেও উন্নত করে এবং ত্বককে আবার শুষ্ক হওয়া থেকেও রক্ষা করতে পারে। পা ভেজানোর আগে অল্প পরিমাণ ভিনেগার গতম পানিতে যোগ করতে হবে। ভিনেগার পা জীবাণুমুক্ত করতে এবং পায়ের দুর্গন্ধ দূর করতে সাহায্য করবে। এছাড়াও নিম্নলিখিত উপাদানগুলির মধ্যে যেকোনও অন্তর্ভুক্ত করা যেতে পারে -
লেবুর রস- গবেষণা অনুযায়ী, লেবুতে থাকা সাইট্রিক অ্যাসিড মৃত ত্বক এবং শক্ত চামড়া দূর করতে পারে। তবে এ বিষয়ে গবেষণা সীমিত। লেবু ত্বককে মসৃণ করতে পারে। লেবুর রসের সাথে সামান্য চিনি মিশিয়ে মিশ্রণটি দিয়ে রুক্ষ জায়গায় আলতো করে ঘষতে হবে, তারপর ৫-৭ মিনিট রেখে গরম পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলতে হবে।
এপসম লবণ- এপসম লবণ মূলত ম্যাগনেসিয়াম সালফেট নামক খনিজ যৌগের একটি স্ফটিক রূপ। পানিতে এপসম লবণ গুলে তাতে পা ভিজিয়ে রাখতে হবে ২০ মিনিট। তারপর পা এক্সফোলিয়েট করতে ফুট ব্রাশ বা পিউমিক স্টোন ব্যবহার করা যেতে পারে। এতে পায়ের মরা চামড়া অপসারণ হতে পারে এবং ত্বকের হাইড্রেশন বাড়াতে পারে।
ওটমিল স্ক্রাব- ওটমিল ও গোলাপ জল সমান অংশে নিয়ে মিশিয়ে আলতো করে পায়ে এই স্ক্রাব লাগাতে হবে। ২০-৩০ মিনিট রেখে তারপর পা এক্সফোলিয়েট করার জন্য ফুট ব্রাশ ব্যবহার করতে হবে। এরপর ঠান্ডা পানি দিয়ে পা ধুয়ে, শুকিয়ে লাগাতে হবে ভাল লোশন, ক্রিম বা তেল।