রাতে হঠাৎ এক ব্যক্তির আর্তচিৎকারে গ্রামের মানুষ ছুটে গেল একটি বাড়িতে।
গিয়ে যা দেখলো, তাতে সবার চোখ চড়খগাছ। স্বামীকে বটি দিয়ে কোপাচ্ছেন এক গৃহবধূ আর মনে মনে বিরবির করে মন্ত্র আওড়াচ্ছেন। খবর আনন্দবাজার পত্রিকার।
ঘটনাটি ঘটেছে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের হুগলী জেলায়। বাড়িতে চিৎকার-চেঁচামেচি, গোঙানির শব্দ শুনে পাড়া-প্রতিবেশীরাই বৃহস্পতিবার রাত ৯টার দিকে পুলিশে খবর দিয়েছিলেন।
খবর পেয়েই সুবিকাশের বাড়িতে এসে পুলিশ দেখে, বটি দিয়ে মেয়েকে কুপিয়েই চলেছেন মা তন্দ্রা। উন্মাদের মতো আচরণ করছেন তিনি।
পাশে গুরুতর আহত অবস্থায় পড়ে রয়েছেন স্বামী সুবিকাশ। বাড়ির তিন জনকেই একতলার ঘর থেকে নগ্ন অবস্থায় উদ্ধার করেছিল পুলিশ।
আর জামাকাপড় খুলে রাখা ছিল ওপরে দোতলার ঘরে। সারা ঘরে মেঝেতে চাল ছড়ানো। এই সব তথ্য সংগ্রহের পরই তদন্তকারীদের অনুমান, গোটা ঘটনায় কালা জাদুর প্রভাব থাকতে পারে।
স্বামী সুবিকাশ ঘোষ ও মেয়ে সুলগ্না ঘোষকে বটি দিয়ে কোপানোর সময় তন্দ্রা ঘোষের মুখ থেকে বেরনো অসংলগ্ন কথা, মেঝেতে চাল ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা দেখে প্রাথমিক ভাবে এমনটাই মনে করছে পাণ্ডুয়া থানার পুলিশ।
সুবিকাশ প্রাথমিক স্কুলের সাবেক শিক্ষক। সুলগ্না ইংরেজিতে স্নাতক। এমনিতে তাদের পরিবার নিয়ে পাড়া-প্রতিবেশীদের বিশেষ অভিযোগ নেই।
তবে বৃহস্পতিবার রাতের ঘটনার পর স্থানীয়রা পুলিশকে জানান, সুবিকাশের বাড়ি থেকে প্রায়ই প্রার্থনার শব্দ শুনতে পেতেন তারা। শুধু তাই নয়, ঘটনার সময়ও তন্দ্রাকে চিৎকার করে তারা বলতে শুনেছেন, ‘শয়তান দূর হ।’ স্বামী সুবিকাশের শরীরে ‘শয়তানের বাস’ রয়েছে বলে মনে করতেন তন্দ্রা, এমনটাই জানান প্রতিবেশীরা।
সুবিকাশের চাচাতো ভাই লক্ষ্মীকান্ত ঘোষ বলেন, ঘটনার পর থেকেই অনেক অসংলগ্ন কথা বলে যাচ্ছে তার ভাবী। উন্মাদের মত আচরণ করছেন তিনি।
সুবিকাশ ও তন্দ্রা বর্তমানে চুঁচুড়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। সুলগ্নাকে কলকাতার এসএসকেএম হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। আপাতত তারা স্থিতিশীল বলে চিকিৎসকরা।
সূত্র: যুগান্তর