নানা সমস্যা ও সংকটে জর্জরিত সিলেটের নবগঠিত বিশ্বনাথ পৌরসভা। পৌরসভায় উন্নীত হবার দু’বছর পার হলেও সহসা হচ্ছে না নির্বাচন। প্রশাসক দিয়েই কোনো রকমে খুড়িয়ে খুড়িয়ে চলছে এর কার্যক্রম। ওয়ার্ড বিভক্তি চূড়ান্তকরণের পর তা গেজেট আকারে প্রকাশে বিলম্ব ও ভোটার তালিকা প্রণয়ন না হওয়ায় নির্বাচন নিয়ে দেখা দিয়েছে অনিশ্চয়তা। ফলে নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি না থাকায় প্রাপ্য সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন নাগরিকরা।
বেহাল সড়ক, অপর্যাপ্ত ড্রেনেজ ব্যবস্থা, ময়লা-আবর্জনা ফেলার নির্দিষ্ট জায়গা না থাকা, সরকারি ভূমি, নদীপাড়-খাল ও পৌরশহরের ফুটপাত বেদখল, সড়কে গাড়ি স্ট্যান্ড, যত্রতত্র পার্কিং, বিশুদ্ধ পানির সংকটসহ সমস্যার অন্ত নেই পৌরবাসীর। এসব সমস্যা-সংকট নিরসন ও পৌরসভার কাঙ্ক্ষিত উন্নয়নের জন্যে দ্রুত নির্বাচনের দাবী তাদের।
২০১৯ সালের ২১ অক্টোবর প্রশাসনিক পুনর্বিন্যাস সংক্রান্ত জাতীয় বাস্তবায়ন কমিটির (নিকার) সভায় প্রবাসী অধ্যুষিত বিশ্বনাথকে পৌরসভা হিসেবে ঘোষণা করা হয়। পৌরসভায় উন্নীত হওয়ার পর ওই বছরের ১৯ ডিসেম্বর তৎকালীন বিশ্বনাথ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) বর্ণালী পালকে প্রশাসক নিয়োগ করা হয়।
এর ১৩ মাস পর চলতি বছরের ৪ জানুয়ারি উপজেলা পরিষদের সরকারি একটি আবাসিক কোয়ার্টারের দ্বিতীয় তলায় আনুষ্ঠানিক কার্যক্রম শুরু হয় বিশ্বনাথ পৌরসভার। পৌরসভার বাসিন্দা সুন্দর আলী রুহুল জানান, ‘পৌরসভায় উন্নীত হওয়ার দুই বছর পেরিয়ে গেলেও পৌর এলাকার প্রায় সবগুলো সড়কই ভাঙ্গাচোরা অবস্থায় আছে। এর মধ্যে বিশ্বনাথ-হাবড়া, বিশ্বনাথ জানাইয়া গেট-মুফতিরগাঁও স্কুল সড়ক ও বিশ্বনাথ পৌরশহর-খাজাঞ্চী সড়কের অবস্থা অত্যন্ত নাজুক। পাড়া-গ্রামের অনেক সড়কেরও একই অবস্থা।’
বিশ্বনাথ প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক প্রনঞ্জয় বৈদ্য অপু জানান, ‘পৌর শহরে নেই পর্যাপ্ত ড্রেনেজ ব্যবস্থা। বৃষ্টি হলেই জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়।
ময়লা ফেলারও নির্দিষ্ট জায়গা নেই। নতুন-পুরান দু’বাজারের বেশিরভাগ ফুটপাত বেদখলে থাকা, সড়কের উপরে গাড়ি স্ট্যান্ড ও যত্রতত্র পার্কিংয়ের কারণে সৃষ্টি হয় যানজটের। পৌরশহরের অনেক এলাকায় প্রভাবশালীদের দখলে রয়েছে সরকারি ভূমি, নদীপাড় ও খাল। অনেক এলাকায় রয়েছে বিশুদ্ধ পানির সংকট। শহরের কোথাও নাগরিকদের জন্যে নেই চিত্তবিনোদনের ব্যবস্থা। এসব সমস্যা-সংকট নিরসন ও পৌরসভার কাঙ্ক্ষিত উন্নয়নের জন্যে দ্রুত নির্বাচনের ব্যবস্থা করা জরুরি।’
এ বিষয়ে বিশ্বনাথ পৌরসভার প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নুসরাত জাহান ‘বাংলাদেশ প্রতিদিন’কে বলেন, গেজেট পুনর্বিন্যাসের কাজ চলছে। এরপর ভোটার তালিকা প্রণয়ন হলেই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।
সূত্র: বিডি প্রতিদিন