বরিশাল সিটি করপোরেশনের (বিসিসি) দায়িত্বশীল পদে থেকে বেআইনি ও অবৈধ কর্মকাণ্ডে লিপ্ত থাকার অভিযোগে সিটি মেয়রসহ তিনজনকে আইনি নোটিশ পাঠিয়েছেন একই পরিষদের ৭ জন ওয়ার্ড কাউন্সিলর।
রবিবার ওই ৭ কাউন্সিলর আইনজীবী আজাদ রহমানের মাধ্যমে এই নোটিশ পাঠিয়ে আগামী ১৫ কার্যদিবসের মধ্যে জবাব প্রেরণের অনুরোধ জানিয়েছেন।
ডাক রেজিস্ট্রিযোগে এই নোটিশ প্রেরণ করা হয় বলে জানিয়েছেন আজাদ রহমান।
নোটিশ দাতারা হলেন, ২৬ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিল হুমায়ুন কবির, ৪ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর তৌহিদুল ইসলাম, ২৯ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর ফরিদ আহমেদ, ২০ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর জিয়াাউর রহমান, ১ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর আমির হোসেন বিশ্বাস, ২৪ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর শরীফ মো. আনিছুর রহমান এবং ২৩ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর এনামুল হক বাহার।
সিটি মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহ ছাড়াও নোটিশের অপর দুই প্রাপক হলেন, প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ও সচিব।
নোটিশ দাতাদের আইনজীবী আজাদ রহমান জানান, ২০১৮ সালের সিটি নির্বাচনে ওই ৭ জন কাউন্সিলর নির্বাচিত হন। তাদেরসহ সকল কাউন্সিলরদের সেপ্টেম্বর, ২০২১ পর্যন্ত ৪৩ হাজার ৫০০ টাকা হারে সম্মানি ও অন্যান্য ভাতা প্রদান করা হয়। অক্টোবর ও নভেম্বর মাসে সম্মানি ভাতা ও অন্যান্য ভাতা ৫০ হাজার টাকায় উন্নীত করা হয়। নোটিশ গ্রহীতারা ওই ৭ কাউন্সিলর ব্যতিত অন্যান্য কাউন্সিলরদের গত বছরের অক্টোবর ও নভেম্বরে সম্মানিসহ অন্যান্য ভাতা ৫০ হাজার টাকা হারে দেয়া হয়। সমহারে তাদের ডিসেম্বরের বেতন ভাতা প্রদানের প্রক্রিয়া চলছে। কিন্তু নোটিশদাতা ৭ জন কাউন্সিলরকে গত অক্টোবর ও নভেম্বরে ৪৩ হাজার ৫০০ টাকা হারে বেতন-ভাতা দেয়া হয়। পরবর্তী মাসেও তাদের পুরনো হারে বেতন ভাতা প্রদানের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।
নোটিশে বলা হয়, নোটিশ গ্রহীতাগণ একই আইনে পরিচালিত হলেও নোটিশ দাতাদের সহিত বৈষম্যমূলক আচরণ করছে। যা আইনত গ্রহণযোগ্য নয়।
এছাড়া ওই ৭ কাউন্সিলরকে পরিষদের ১ম সভায় নগর ভবনে যাওয়া নিষিদ্ধ করা, জনস্বার্থ উপেক্ষা করে হোল্ডিং ট্যাক্স হাজারভাগ পর্যন্ত বৃদ্ধি করে জনমনে বিরূপ প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি করা, করপোরেশনের স্থায়ী কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেআইনিভাবে ওএসডি রাখা, মাস্টার রোলে অদক্ষ কর্মকর্তা ও কর্মচারী নিয়োগ এবং বিধি মোতাবেক টেন্ডার না করে এক শ্রেণির ব্যক্তিদের স্বার্থে হাট বাজার সমূহ নির্দিষ্ট ব্যক্তিবর্গের মাধ্যমে খাস আদায় করার অভিযোগ করা হয় নোটিশে।
নোটিশ প্রাপ্তির ১৫ কার্য দিবসের মধ্যে উল্লেখিত বিষয়ে লিখিত জবাব প্রেরণের অনুরোধ করা হয়। নির্ধারিত সময়ে জবাব প্রেরণ না করলে নোটিশ দাতাগণ ধরে নেবেন বিষয়ে আপনাদের কোনো বক্তব্য নাই। সেই প্রেক্ষিতে নোটিশ দাতাগণ উপযুক্ত আদালতে আইনের আশ্রয় নিতে বাধ্য হবেন।
নোটিশের অনুলিপি স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী ও সিনিয়র সচিব, বিভাগীয় কমিশনার, স্থানীয় সরকারের বিভাগীয় পরিচালক, জেলা প্রশাসক, স্থানীয় সরকার বিভাগের উপ-পরিচালক, জনতা ব্যাংক কর্পোরেট শাখার ব্যবস্থাপক এবং জনতা ব্যাংক লিমিটেড বরিশাল বিভাগীয় কার্যালয়ের মহাব্যবস্থাপক বরাবর রেজিস্ট্রি ডাকযোগে প্রেরণ করা হয়।
এ বিষয়ে সিটি করপোরেশনের আইন উপদেষ্টা অ্যাডভোকেট গোলাম সরোয়ার রাজিব বলেন, আইনি নোটিশের বিষয়ে তাদের কিছু জানা নেই। আইনি বিষয় হলে আইনগতভাবেই সেগুলো মোকাবেলা করার কথা বলেন তিনি।
সাম্প্রতিক সময়ে ওই ৭ জন দলীয় কাউন্সিলর সিটি মেয়রের পক্ষ ত্যাগ করে প্রকাশ্যে সদর আসনের এমপি ও জেলা আওয়ামী লীগ সহসভাপতি কর্নেল (অব.) জাহিদ ফারুকের পক্ষাবলম্বন করেন।
সূত্র: বিডি-প্রতিদিন