ঘুমন্ত অবস্থায় চিরনিদ্রায় তিন ভাই-বোন। আগুন নামের যমদূত নির্মমভাবে কেড়ে নিয়েছে তাদের প্রাণ। মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়লেন জাহাঙ্গীর (১৯), রুমা আক্তার (১৭) ও আফরিন
(১৪)। রাজধানীর তুরাগের চন্ডালবুক এলাকায় একটি বস্তির টিন শেড ঘরে অগ্নিকান্ডের ঘটনায় রীতিমতো বাকরুদ্ধ এলাকাবাসী। তাদের অনেকের আশঙ্কা ষড়যন্ত্র করেই এই নাশকতার ঘটনা ঘটানো হয়েছে। নিহতদের মধ্যে রুমা ও জাহাঙ্গীর সহোদর। আর আফরিন তাদের খালাতো বোন।
পুলিশ ও এলাকাবাসী জানান, গতকাল ভোরে চন্ডালবুক এলাকায় খালপাড়ের মানিক মিয়া বস্তিতে সরকারি খাসজমিতে নির্মিত সুরুজ মিয়ার টিনশেড ঘরে মর্মান্তিক ঘটনাটি ঘটে। সকালে পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা দগ্ধ তিনজনের লাশ উদ্ধার করেন। আগুন লাগার পর নিহত জাহাঙ্গীর ও রুমার বড় ভাই আলমগীর ঘর থেকে বের হতে পারায় প্রাণে বেঁচে যান। ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্স অধিদফতরের মিডিয়া সেলের কর্মকর্তা রায়হান জানান, ভোর সোয়া ৪টার দিকে আগুনের খবর পায় ফায়ার সার্ভিস। পরে উত্তরা ফায়ার স্টেশনের তিনটি ইউনিট দুর্ঘটনাস্থলে গিয়ে পৌনে ৬টার দিকে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। দুই কক্ষ বিশিষ্ট একটি টিন শেড ঘর আগুনে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তিনজনের লাশ তুরাগ থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। শর্টসার্কিট থেকে অগ্নিকান্ড ঘটেছে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে জানান রায়হান। জাহাঙ্গীর ও রুমার ভাই আলমগীর বলেন, ভোরে হঠাৎ ঘুম ভেঙে আগুন দেখতে পান। তিনি বের হতে পারলেও তিনজন ভিতরে আটকা পড়ে। পরে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা যখন এসে আগুন নেভায় ততক্ষণে তিনজন আর বেঁচে নেই।
আলমগীর জানান, তাদের বাড়ি দিনাজপুরে। জাহাঙ্গীর ও রুমা স্থানীয় পোশাক কারখানার চাকরি করতেন। আর আফরিন পরিবারের সঙ্গে পাশেই আরেকটি ভাড়া বাসায় থেকে একটি মাদরাসায় পড়তা। খালাতো-ভাইবোনের বাসায় বেড়াতে এসেছিল সে। জাহাঙ্গীরের বাবা সুরুজ মিয়া ও মা আলেয়া বেগম কয়েকদিন আগে গ্রামের বাড়ি দিনাজপুরের বীরগঞ্জে যায়। তুরাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মেহেদী হাসান বলেন, ঘটনার সময় ঘরটিতে চারজন ছিল। এদের মধ্যে আলমগীর নামে একজন বেরিয়ে যেতে সক্ষম হলেও বাকি তিনজন আটকা পড়ে। প্রাথমিকভাবে শর্টসার্কিট থেকে অগ্নিকান্ড ঘটেছে বলে জানা গেছে। ময়নাতদন্তের জন্য লাশ তিনটি শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। ঘটনার পেছনে অন্য কোনো কারণ আছে কি না তাও খতিয়ে দেখা হবে।
সূত্র: বিডি প্রতিদিন