ঢাকাই ছবির অভিনেতাকে অনিক রহমান অভিকে নয় মাস আটকে রেখে যৌন নির্যাতন করার অভিযোগ উঠেছে। একটি মাদকাসক্ত পুনর্বাসন কেন্দ্রে তাকে আটকে রেখে ওই প্রতিষ্ঠানটির মালিক তাকে নির্যাতন করে বলে জানা গেছে। বিষয়টি নিয়ে বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির পক্ষ থেকে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটেলিয়ন (র্যাব)-এর কাছে লিখিত অভিযোগ জানানো হয়। পরে র্যাব গতকাল মঙ্গলবার গাজীপুরের নগরীর ভাওয়াল মাদকাসক্ত পুনর্বাসন কেন্দ্রে অভিযান চালিয়ে অভিসহ ২০ জনকে উদ্ধার করে। আর প্রতিষ্ঠানটির মালিক ফিরোজা নাজনীনসহ পাঁচজনকে আটক করে।
বিষয়টি নিয়ে চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির সাধারণ সম্পাদক জায়েদ খান বললেন, ‘আসলে অভি এত দিন কোথায় ছিল, আমরা খুঁজেছি তাকে, পাইনি। ওর সমিতির চাঁদাও বাকি ছিল। আমি মা-বাবার কবর জিয়ারত করছিলাম। হঠাৎ করে একটি ফোন আসে। আমি সেই ফোন পেয়ে অবাক হয়ে যাই। অভি ফোন দিয়েছিল। কোথায় থেকে ফোন দিয়েছিল জানি না। শুধু বলেছিল, তাঁকে আটকে রেখে ৯ মাস ধরে যৌন নির্যাতন করে এক নারী। আরো অনেককেই নাকি আটকে রেখে ছিল।’
তিনি আরও বলেন, ‘পরে আমি জানতে পারি, গাজীপুর ভাওয়াল মাদকাসক্ত কেন্দ্রে অভিকে আটকে রাখা হয়েছে। র্যাবকে বিষয়টি লিখিতভাবে জানাই। র্যাব অভিযান চালিয়ে গতকাল অভিসহ ২০ জনকে গাজীপুরের ওই মাদকাসক্ত পুনর্বাসন কেন্দ্র থেকে উদ্ধার করে। আমি আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর প্রতি কৃতজ্ঞ।’
অভিকে আটকে রেখে যৌন নির্যাতন চালানো হতো, এমনটা ফেসবুকেও উল্লেখ করেছেন জায়েদ খান। তিনি এক পোস্টে বলেন, ‘চিত্রনায়ক অনিক রহমান অভি মাদকাসক্ত না হওয়া সত্ত্বেও দীর্ঘ ৯ মাস শিকল দিয়ে বেঁধে রেখে শারীরিক যৌন নির্যাতন চালাতেন ওই প্রতিষ্ঠানের মালিক এক নারী। বিষয়টি গোপন সূত্রের ভিত্তিতে চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির অভিযোগের প্রেক্ষিতে র্যাব অভিযান চালিয়ে সেখানে চিত্রনায়ক অভি’সহ আর ২০ জনকে উদ্ধার করেছে। সেখানে জানানো হয়েছে, সেই প্রতিষ্ঠানের মালিক পক্ষের লোকজন অভিযান পরিচালনার সময় মাদকাসক্ত ছিলেন!’
তবে র্যাব বলছে, অভি মাদকাসক্ত হয়ে পড়লে তাকে ওই মাদক নিরাময় কেন্দ্রে ভর্তি করানো হয়। অভিযানের পর কেন্দ্রটি মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর সিলগালা করে দিয়েছে বলে গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন। তিনি বলেন, ‘যেভাবে নিরাময় কেন্দ্র পরিচালনা, চিকিৎসা ও রোগীদের সেবা দেওয়ার কথা, তার কিছুই এখানে মানা হয়নি। ভর্তি রোগীরা অভিযোগ করেন, কেন্দ্রের মালিকের নেতৃত্বে তাদের মানসিক, শারীরিক ও যৌন নির্যাতন করা হতো। ’
অভিকে মেডিক্যাল টেস্টের জন্য পাঠানো হয়েছে এবং তাকে কিসের জন্য আটকে রাখা হয়েছিল, সে বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলেও জানান তিনি। উল্লেখ্য, চিত্রনায়ক অনিক রহমান অভি জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পাওয়া অভিনেত্রী পপির সঙ্গে অভিনয় করেছেন ‘সাহসী যোদ্ধা’ সিনেমায়। এছাড়াও তিনি অভিনয় করেছেন ‘চটপটি ভালোবাসা’, ‘দুষ্টু ছেলে’, ‘ভালোবাসা ডটকম’সহ একাধিক সিনেমায়।
সূত্রঃ বিডি-প্রতিদিন