আফগানিস্তানে তালেবান ক্ষমতায় আসার পর থেকে প্রতিবেশী রাষ্ট্র পাকিস্তানে সন্ত্রাসী হামলা বেড়েছে বলে জানিয়েছে আর্ন্তজাতিক অধিকার ও নিরাপত্তা ফোরাম (আইএফআরএএস)। সেইসঙ্গে দেশটিতে জঙ্গি দমন নিয়ে পাক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের দাবি সাংঘর্ষিক বলেও প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়। গত বুধবার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানায় সংস্থাটি।
প্রতিবেদনে বলা হয়, তালেবান ক্ষমতায় আসার পর পাকিস্তানে ৫৬ শতাংশ হামলা বেড়েছে। গত বছরের মে মাসে পাকিস্তানে অবস্থানরত জঙ্গি গোষ্ঠী তেহরিক-এ-তালেবান পাকিস্তান (টিটিপি) এবং চরম সুন্নি পন্থীদের সামগ্রিক সহযোগিতায় ক্ষমতায় আসে আফগানিস্তানের ক্ষমতা দখল করে তালেবান।
এদিকে, এ অঞ্চলে জঙ্গি গোষ্ঠী ইসলামিক স্টেট খোরাসার (আইএস-কে) অবস্থার সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। আর আইএসের নজর দক্ষিণ এশিয়ার দিকে রয়েছে। জঙ্গি গোষ্ঠীটির তালেবানকে চ্যালেঞ্জ করা পাকিস্তানের জন্যও হুমকি হতে পারে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। আর এই কৌশলগত ল্যান্ডমাইনে পাকিস্তান পা রেখেছে বলে মন্তব্য করেছেন তারা।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, যুক্তরাষ্ট্রের আফগানিস্তান ছাড়ার পর দেশটিতে বেশ কয়েকটি হামলার দাবি করেছে আইএস-কে। সাম্প্রতিক মাসগুলোতে পাকিস্তানে কিছু হামলার পেছনেও এই দলটির হাত রয়েছে। রাজনৈতিক সুযোগকে কাজে লাগিয়ে তালেবান এবং পাকিস্তানে অবস্থানরত তাদের মিত্রদের বিরুদ্ধে নিজেদের শক্তিশালী হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করার জন্য আইএস-কে এই হামলাগুলো চালিয়েছে।
ইসলামাবাদ ভিত্তিক থিঙ্ক ট্যাঙ্ক পাকিস্তান ইনস্টিটিউট ফর কনফ্লিক্ট অ্যান্ড সিকিউরিটি স্টাডিজ (পিআইসিএসএস) এর পরিসংখ্যানে দেখা যায়, দেশটিতে গত ৬ বছরে জঙ্গি হামলা ধারাবাহিকভাবে কমলেও ২০২১ সালে ৫৬ শতাংশ হামলা বৃদ্ধি পেয়েছে।
আইএফআরএএস এর প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০২১ সালে পাকিস্তানে ২৯৪টি সন্ত্রাসী হামলায় প্রাণ হারিয়েছেন ৩৮৮ জন এবং আহত হয়েছেন আরও ৬০৬ জন মানুষ। এর মধ্যে বেলুচিস্তানে সর্বোচ্চ ১০৩টি হামলায় মারা গেছে ১৭০ জন এবং সর্বোচ্চ সংখ্যক মানুষ আহত হয়েছেন।
এ ছাড়া এসব হামলার মধ্যে দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে খাইবার পাখতুনখোয়া। এ অঞ্চলে ১০০ এর বেশি হামলায় নিহতের সংখ্যা ১১৭ জন এবং আহত হয়েছেন ১০৩ জন। আর সিন্ধুতে ১৫টি জঙ্গি হামলায় মারা গেছে ২৩ জন এবং আহত হয়েছেন ২৯ জন।
সূত্র: আমাদের সময়.কম