করোনার সংক্রমণের প্রথম ঢেউ ও লকডাউনের ধাক্কায় দুর্ভোগে দিন কাটিয়েছিলেন ভারতের যৌনকর্মীরা। বলতে গেলে রোজগারটাই প্রায় বন্ধ ছিল তাদের। তবে গত বছর থেকে পরিস্থিতি যখন ধীরে ধীরে উন্নতির দিকে যেতে শুরু করছিল। এরই মধ্যে আবারও বিধিনিষেধ। ফলে জীবিকা নির্বাহ নিয়ে চিন্তায় আছেন যৌনকর্মীরা। এবার পেটের দায়ে করোনার ঝুঁকি নিয়েও কাজ চালিয়ে যেতে চাইছেন তারা।
এ প্রসঙ্গে কলকাতার বৌবাজারের এক যৌনকর্মী বলছেন, ‘পেট চালানোই যখন দায়, তখন করোনার কথা কে ভাবে! সংক্রমণ সামলে সংসার চালানোর মতো রোজগারটুকু যেন তৃতীয় ঢেউয়ের ধাক্কায় ফের বন্ধ না হয়ে যায় আপাতত এতটুকুই চাওয়া যৌনকর্মীদের।’
যৌনকর্মীদের নিয়ে কাজ করা ভারতের ‘দুর্বার মহিলা সমন্বয় সমিতি’র সেক্রেটারি ও যৌনকর্মী কাজল বসু বলেন, ‘রোজগার কমেছে ঠিকই, তবে সোনাগাছি চলছে এখনও। তবে সেটা সম্ভব হচ্ছে, যৌনকর্মীদের জন্য তৈরি ঊষা মাল্টিপারপাস কো-অপারেটিভ ব্যাংকে যারা আগে নিজেদের সঞ্চিত টাকা রেখেছিলেন, তারা প্রয়োজনে সেই টাকা তুলে সংসার চালাচ্ছেন। আর যাদের পক্ষে সঞ্চয় করা সম্ভব হয়নি, তারা সংক্রমণের ভয় নিয়েই কাজ করে যাচ্ছেন।’
তিনি আরও জানান, মাস্ক পরা ও জীবাণুনাশক ব্যবহারের প্রচার করা হলেও যৌনপল্লীতে দূরত্ব-বিধি মেনে চলা কার্যত অসম্ভব। তাই সংক্রমণও বেড়ে যাচ্ছে। জ্বর-সর্দি-কাশির মতো উপসর্গ দেখা দিলেও ওষুধ খেয়েই সামাল দেওয়ার চেষ্টা করছেন তারা।
এ বিষয়ে দুর্বারের প্রেসিডেন্ট বিশাখা বলছেন, ‘শুধু সোনাগাছিই নয়, কালীঘাট-খিদিরপুর-বৌবাজার সর্বত্র রোজগারের অবস্থা বেশ খারাপ। তা সত্ত্বেও সেখানে নতুন আসা মেয়েদের সংখ্যা বেড়েই যাচ্ছে।’
অনেকেই বলছেন, পরিচারিকার কাজ হারিয়ে বাধ্য হয়েই এই পেশায় আসছেন তারা। তবে বহু মানুষ এই কঠিন সময়েও সংগঠনে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন, সেটা বড় পাওনা বলেই মনে করছেন কাজল-বিশাখারা।
সূত্র: আনন্দবাজার