স্বপ্নে মোড়ানো বছর কাটিয়েছেন নোভাক জকোভিচ। ২০২১ সালে একের পর এক শিরোপা জিতে কীর্তি কুঁড়িয়েছেন বেশ। সর্বাধিক ২১টি গ্র্যান্ড স্লাম জয়ীর আখ্যা পেতে মাত্র একটি শিরোপা দূরত্বে এই সার্বিয়ান টেনিস তারকা। ২০২২ সালের প্রথম গ্র্যান্ড স্লাম অস্ট্রেলিয়ান ওপেন জিতে সেই রেকর্ডটি গড়ার হাতছানি ছিল জোকারের। ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়ন জকোভিচের আগুনে ফর্মের কারণে সেই সম্ভাবনাটা ছিল তুঙ্গে। তবে শিরোপা উঁচিয়ে ধরা তো দূরে থাক প্রতিযোগিতাতেই অংশ নিতে পারছেন না জকোভিচ। ভিসা জটিলতার দ্বিতীয় শুনানিতে হেরে গিয়েছেন তিনি।
করোনার টিকা না নেয়ায় অস্ট্রেলিয়ান বর্ডার ফোর্সের তোপের মুখে পড়েন জকোভিচ। বাতিল করে দেয়া হয় তার ভিসা।
কোর্টের দ্বারস্থ হয়ে প্রথম দফায় আইনি লড়াইয়ে সাফল্য পেলেও দ্বিতীয়বারে হেরে গেলেন জকোভিচ। রায়ের পর জকোভিচ বলেছেন, ‘এটি খুবই হতাশাজনক। তবে আমি আদালতের সিদ্ধান্তকে সম্মান জানাই।’ রোববার বিচারক ডেভিড ও’ক্যাল্লাঘানের অধীনে অনুষ্ঠিত হয় শুনানিটি।
রায়ে পক্ষে না আসায় অস্ট্রেলিয়া ওপেন না খেলেই ফিরতে হবে জকোভিচকে। দেশে ফিরতে সংশ্লিষ্টদের সাহায্য করার আশ্বাস দিয়েছেন তিনি। জকোভিচ বলেন, ‘আমার অস্ট্রেলিয়া ত্যাগের প্রক্রিয়ায় সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে আমি সাহায্য করব।’
অস্ট্রেলিয়ান ওপেনে অংশ নিতে মেলবোর্নে পৌঁছে করোনার প্রতিষেধক টিকা না নেয়ায় বিমানবন্দরের ইমিগ্রেশনে বাধা পান জকোভিচ। ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়নকে বিশেষ ছাড়পত্র দেয়া হলেও, সেই বিশেষ ছাড় পাওয়ার প্রয়োজনীয় নথি পেশ না করতে পারেননি তিনি। এমনকি ভ্যাকসিন না নেয়ার যুক্তিপূর্ণ কোনো কারণও দেখাতে পারেননি জকোভিচ। এরপরই তার অস্ট্রেলিয়ায় প্রবেশের ভিসা বাতিল করে দেয়া হয় এবং তাকে নিয়ে রাখা হয় ডিটেনশন হোটেলে।
এই জটিলতার পেছনে অনেকাংশে দায়ী অস্ট্রেলিয়ান ওপেনের প্রধান ক্রেগ টিলে। তিনি ক্রমাগত নির্দেশিকা বদল করেছেন। অপর দিকে অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী স্কট মরিসন আগেই টেনিস অস্ট্রেলিয়া’কে জানিয়েছিল প্রতিযোগীদের ভিসা পাওয়ার গাইডলাইনের বিষয়ে। মূলত আয়োজকরা সঠিক নির্দেশনা দিতে ব্যর্থ হওয়ায় ঝামেলা পোহাতে হয় জকোভিচকে। এরপর আদালতের দ্বারস্থ হন তিনি।
গত সপ্তাহে জকোভিচের পক্ষে রায় দেন বিচারক অ্যান্থনি কেলি। কিন্তু এরপরই শোনা গিয়েছিল, অস্ট্রেলিয়া সরকার নির্বাহী ক্ষমতাবলে জকোভিচের ভিসা বাতিল করতে পারে। বৃহস্পতিবার অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী স্কট মরিসন বলেছিলেন, জকোভিচের ভিসা বাতিল করা নিয়ে কোনো সিদ্ধান্ত নেয়নি তার সরকার। তবে জনস্বার্থের কথা বিবেচনায় শেষে কঠিন সিদ্ধান্তই নিতে হলো অস্ট্রেলিয়া সরকারকে।
২০১৯, ২০২০ এবং ২০২১ অস্ট্রেলিয়ান ওপেনে পুরুষ এককে চ্যাম্পিয়ন জকোভিচ। মোট নয়বার এই টুর্নামেন্ট জিতেছেন সার্বিয়ার এই টেনিস তারকা। দুই অপর প্রতিদ্বন্দ্বী রাফায়েল নাদাল এবং রজার ফেদেরারের সঙ্গে একই বিন্দুতে দাঁড়িয়ে রয়েছেন জোকার। এই তিন টেনিস তারকাই ২০টি করে গ্র্যান্ডস্ল্যাম জিতেছেন ক্যারিয়ারে।
সূত্র: মানবজমিন