ফের ভয়ংকর হচ্ছে করোনা সংক্রমণ। হঠাৎ করেই সিলেটে দৈনিক শনাক্ত ১৩ শতাংশের ওপরে উঠে গেছে। খুলনা-বরিশালেও লাফিয়ে বাড়ছে সংক্রমণ। নিজস্ব প্রতিবেদক সিলেট জানান, সিলেটে ফের ভয়ংকর হয়ে উঠছে করোনা। গেল বছরের শেষের দিকে আক্রান্ত শনাক্তের সংখ্যা শূন্যের কোঠায় নেমে এলেও নতুন বছরের শুরু থেকে ফের বাড়তে শুরু করেছে সংক্রমণ। নমুনা পরীক্ষায় আক্রান্ত শনাক্তের হার ১৩ শতাংশ ছাড়িয়েছে। বাড়ছে মৃত্যুও। গতকাল সকাল ৮টা থেকে পূর্ববর্তী ২৪ ঘণ্টায় শনাক্ত হয়েছেন প্রায় দেড়’শ। যা এর আগের ছয় মাসের মধ্যে সর্বোচ্চ। এ ছাড়া ঘরে ঘরে দেখা দিয়েছে করোনার উপসর্গ জ¦র, সর্দি ও কাশি। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, স্বাস্থ্যবিধি না মানার কারণেই বাড়ছে সংক্রমণ। নমুনা পরীক্ষা বাড়লে শনাক্তের হার আরও বাড়বে বলেও আশঙ্কা বিশেষজ্ঞদের। স্বাস্থ্য অধিদফতরের সিলেট বিভাগীয় পরিচালক ডা. হিমাংশু লাল রায় জানান, মানুষ স্বাস্থ্যবিধি নিয়ে উদাসীন। ইতোমধ্যে যারা করোনা আক্রান্ত হয়ে সুস্থ হয়েছেন তারা ভাবছেন আবার করোনা হলেও তাদের কিছু হবে না। আবার কেউ কেউ টিকা নিয়ে ভাবছেন তাদের করোনা হওয়ার আশঙ্কা কম। এ ছাড়া প্রশাসনের পক্ষ থেকেও স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিতকরণে উদ্যোগ কমে গেছে। সব মিলিয়ে মানুষের বেপরোয়া চলাচল, উদাসীনতা ও জনসমাগম বৃদ্ধির কারণে সংক্রমণ বাড়ছে।
নিজস্ব প্রতিবেদক খুলনা জানান, খুলনা বিভাগে ১০ জেলায় করোনা সংক্রমণ ক্রমেই বাড়ছে। গত ২৪ ঘণ্টায় করোনা শনাক্ত হয়েছে ৮৯ জনের। এর আগে ১৫ জানুয়ারি শনাক্ত হয় ৩২ জনের। ২৪ ঘণ্টার ব্যবধানে শনাক্তের হার বেড়েছে দ্বিগুণের বেশি। খুলনা মেডিকেল কলেজের উপাধ্যক্ষ ডা. মেহেদী নেওয়াজ জানান, গতকাল খুমেকের পিসিআর মেশিনে ১৮৮ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়। যার মধ্যে ১৭ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। এদিকে শনাক্ত বাড়লেও খুলনায় স্বাস্থ্যবিধি মানছে না কেউ। নগরীর ডাকবাংলা মোড়, ক্লে রোড, বড় বাজার, নিউমার্কেট, রেলস্টেশন, রূপসা, ময়লাপোতা এলাকায় অধিকাংশের মুখে মাস্ক দেখা যায়নি। মানুষের চলাচল ছিল স্বাভাবিক সময়ের মতো। খুলনা সিভিল সার্জন ডা. নিয়াজ মোহাম্মদ বলেন, স্বাস্থ্যবিধি প্রতিপালনে অনীহা, এক স্থানের মানুষ অন্য স্থানে যাতায়াত, যথাযথভাবে মাস্ক না পরাসহ বিভিন্ন কারণে সংক্রমণ বাড়ছে। চলতি মাসের শুরু থেকে খুলনায় করোনা সংক্রমণ বাড়তে শুরু করেছে।
নিজস্ব প্রতিবেদক বরিশাল জানান, বরিশাল শেরেবাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের (শেবাচিম) করোনা ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন রোগীর সংখ্যা আরও বেড়েছে। পিসিআর ল্যাবেও বাড়ছে নতুন শনাক্তের সংখ্যা। মেডিকেলের পরিচালক কার্যালয় সূত্র জানায়, গত শনিবার শেবাচিমের করোনা ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন ছিল ১০ জন রোগী। বিগত ২৪ ঘণ্টায় চিকিৎসায় সুস্থ হয়ে দুজন রোগী হাসপাতাল ত্যাগ করেছেন। একই সময় উপসর্গ নিয়ে করোনা ওয়ার্ডে ভর্তি হয়েছেন ৫ জন রোগী। গতকাল সকাল পর্যন্ত করোনা ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন ছিল ১৩ জন রোগী। এ নিয়ে করোনা ওয়ার্ডে এ পর্যন্ত ৭ হাজার ৪৬০ রোগী ভর্তি হয়েছেন। যার মধ্যে মৃত্যু হয়েছে ১ হাজার ৪৫০ জনের।
সূত্রঃ বিডি প্রতিদিন