নওগাঁর মান্দায় প্রতিবন্ধী এক শিশু ধর্ষণের শিকার হয়েছে বলে জানা গেছে। অসুস্থ শিশুটিকে কোনো হাসপাতালে না নিয়ে স্থানীয়ভাবে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। বিষয়টি ধামচাপা দিতে আট হাজার টাকায় নিষ্পত্তি করে দেন স্থানীয় মাতবররা। তবে ঘটনাটি প্রকাশ হলে এলাকাবাসীর মাঝে চরম ক্ষোভের সৃষ্টি হয়।
স্থানীয়রা জানান, গত ৬ জানুয়ারি মাছ ধরার কথা বলে খালের পাড়ের একটি সরিষার ক্ষেতে নিয়ে শিশুটিকে ধর্ষণ করেন আশরাফুল ইসলাম ওরফে সুটকা (৪৫) নামে এক ব্যক্তি। সম্পর্কে তিনি ওই শিশুটির দাদা হন।
ভুক্তভোগী শিশুর মা জানান, তার মেয়ে শারীরিক প্রতিবন্ধী ও স্থানীয় বিদ্যালয়ের প্রথম শ্রেণির শিক্ষার্থী। গত ৬ জানুয়ারি মাছ ধরার কথা বলে আমার মামা শ্বশুর সুটকা মেয়েকে খালের পাড়ে নিয়ে যায়। পরে পাশের একটি সরিষা ক্ষেতে নিয়ে তাকে পাশবিক নির্যাতন করেন। একপর্যায়ে অসুস্থ মেয়েকে বাড়ি পৌঁছে দেন মামা শ্বশুরের পরিবারের লোকজন। এ সময় আমার স্বামী বাড়িতে ছিলেন না। রাতে বাড়ি ফিরলে ঘটনার বিষয়ে তাকে অবহিত করি। স্থানীয়ভাবে চিকিৎসা দিয়ে তাকে সুস্থ করে তোলা হয়েছে।
ভুক্তভোগীর দাদা বলেন, নাতনিকে ধর্ষণের ঘটনায় গত ৯ জানুয়ারি রাতে প্রতিবেশী আনোয়ারা বিবির নেতৃত্বে তার বাড়িতে সালিশের আয়োজন করা হয়। বৈঠকে এলেঙ্গা গ্রামের নাসির উদ্দিন, স্থানীয় কামাল হোসেন, সৈয়দ আলী সরদার, দীনু কবিরাজ, আব্দুল জলিল, বাবুল হোসেন লেদু, জিন্নাতুন নেছাসহ আরও অনেকে উপস্থিত ছিলেন। তিনি আরও বলেন, সালিশে ধর্ষণের কথা স্বীকার করায় তাকে জুতাপেটা করেন মাতবররা। পরে শিশুটির চিকিৎসার জন্য আট হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।
সালিশের আয়োজক আনোয়ারা বিবি ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, বিষয়টি নিজেদের মধ্যে হওয়ায় নিষ্পত্তি করে দেওয়া হয়েছে। ধর্ষণের ঘটনা সালিশে নিষ্পত্তি করে দেওয়া যায় কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমরা গ্রামের মানুষ, আইন বিষয়ে এত কিছু জানি না।
এ বিষয়ে মান্দা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহিনুর রহমান বলেন, এ ধরনের কোনো ঘটনা আমার জানা নেই। কেউ অভিযোগও করেননি। খোঁজ নিয়ে দেখা হচ্ছে।
সূত্র: বিডি প্রতিদিন