বরিশালের বাবুগঞ্জ উপজেলার চাঁদপাশা ইউনিয়নের দুই গ্রামের মানুষের যাতায়াতের সুবিধার্থে ২ বছর আগে একটি সেতু নির্মাণ করা হয়েছে। কিন্তু সেতুতে ওঠা-নামার জন্য সংযোগ সড়ক নির্মাণ না করা হয়নি। বাধ্য হয়ে দুই পাশে বাঁশের সাঁকো মারিয়ে সেতুতে উঠতে দুর্ভোগ পোহাতে হয় স্থানীয় দুই হাজার বাসিন্দাদের। বিশেষ করে কোমলমতি শিক্ষার্থী এবং বয়স্করা সেতু পার হতে পড়ছেন চরম বেকায়দায়। এ বিষয়ে যথাযথ পদক্ষেপ নেওয়ার কথা বলেছেন স্থানীয় সরকার বিভাগের উপ-পরিচালক।
চাঁদপাশা ইউনিয়নের কোলচর ও বায়লাখালী গ্রামের মানুষের দুঃখ ছিল স্থানীয় গফুর মৃধার বাড়ি সংলগ্ন কালকিনি খালের উপর একটি নড়বড়ে বাঁশের সাঁকো। ২০১৯-২০ অর্থবছরে স্থানীয় সরকারের সহায়তা প্রকল্পের (এলজিএসপি-৩) আওতায় ১ লাখ টাকা ব্যয়ে ওই স্থানে ৫০ ফুট দীর্ঘ আয়রন স্ট্রাকচারের উপর সিসি ঢালাই করে সেতু নির্মাণ করে স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ। কিন্তু সেতুর দুই প্রান্তে সংযোগ সড়ক (অ্যাপ্রোচ রোড) নির্মাণ না করায় ওই সেতু ব্যবহার করতে পারছিলেন না দুই গ্রামের মানুষ। জীবন-জীবিকার স্বার্থে স্থানীয়রা সেতুর দুই প্রান্তে গাছের গুড়ি এবং বাঁশের সাঁকো বানিয়ে সেতু পারাপার হচ্ছেন। এতে দুর্ভোগের শেষ নেই তাদের।
স্থানীয় বাসিন্দা আলমগীর খান বলেন, ওই সেতু দিয়ে এলাকার অন্তত ২ হাজার মানুষ নিয়মিত চলাচল করে। বিশেষ করে কোমলমতি শিক্ষার্থী এবং বয়স্করা সেতুর দুই পাশের বাঁশের সাঁকো পাড় হতে সমস্যায় পড়ছেন। অনেক শিক্ষার্থী স্কুলে যাওয়া-আসার পথে পড়ে গিয়ে কাদায় মাখামাখি হয়। আহতও হয়েছেন অনেকে।
কাঞ্চন মোল্লা নামে আরেক স্থানীয় বাসিন্দা বলেন, ওই দুই গ্রামের বেশির ভাগ মানুষ কৃষির ওপর নির্ভরশীল। তাদের উৎপাদিত কৃষি পণ্য ওই সেতু দিয়ে বাজারজাত করা যায় না। এ কারণে ৪ কিলোমিটার ঘুরে আমীরগঞ্জ বাজারসহ বরিশাল সদরে কৃষি পণ্য সরবরাহ করতে হয় তাদের। এতে তাদের চরম ভোগান্তি হচ্ছে। সেতুর দুই প্রান্তে মাটি ভরাট করে সংযোগ সড়ক নির্মাণের জন্য সংশ্লিষ্টদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন স্থানীয় বাসিন্দা শাহ আলম মোল্লা।
চাঁদপাশা ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ড সদস্য মো. মামুন মোল্লা জানান, ইউপি চেয়ারম্যান মো. আনিচুর রহমান সবুজ তার নিজস্ব তত্ত্বাবধানে সেতুটি নির্মাণ করেছেন। কী কারণে সেতুর দুই প্রান্তে মাটি ভরাট করা হয়নি, তা তিনি জানেন না। তিনিও সেতুটি চলাচলের উপযোগী করার দাবি জানান।
এ বিষয়ে চাঁদপাশা ইউপি চেয়ারম্যান মো. আনিচুর রহমান সবুজ মুঠোফোনে বলেন, এলজিএসপি’র অর্থায়নে ১ লাখ টাকা ব্যয়ে সেতুটি নির্মাণ করা হয়েছে। তখন বর্ষা মৌসুম ছিল। এ কারণে মাটি ভরাটের কাজ করা সম্ভব হয়নি। সেতুর দুই প্রান্তের জমি থেকেও কেউ মাটি দিতে রাজি হয়নি। তারপরও দ্রুত সময়ের মধ্যে নিজস্ব তত্ত্বাবধানে ওই সেতুর সংযোগ সড়ক নির্মাণ করে দেওয়ার কথা বলেন তিনি।
বরিশাল স্থানীয় সরকার বিভাগের উপ-পরিচালক শহিদুল ইসলাম বলেন, কোনো উন্নয়ন কাজ যদি সাধারণ মানুষের উপকারে না আসে, তাহলে সেটাকে টেকসই উন্নয়ন বা অর্থবহ উন্নয়ন বলা যায় না। কেন সেতুর দুই পাশে সংযোগ সড়ক নির্মাণ করা হলো না বিষয়টি সরেজমিন খতিয়ে দেখে বিধি অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
সূত্র: বিডি প্রতিদিন