বিশ্বজমিন (১ ঘন্টা আগে) জানুয়ারি ১৮, ২০২২, মঙ্গলবার, ১০:০০ পূর্বাহ্ন | সর্বশেষ আপডেট: ১০:০৭ পূর্বাহ্ন
আফগানিস্তানের পশ্চিমাঞ্চলে ভূমিকম্পে কমপক্ষে ২৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। কমপক্ষে ৭০০ বাড়িঘর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। কর্মকর্তারা বলছেন, সোমবার বাদঘিস প্রদেশের কাদিসে ৫.৩ মাত্রার ভূমিকম্প আঘাত হানে। এ সময় বাড়ির ছাদ ধসে হতাহতের ঘটনা ঘটে। ওই প্রদেশের মুখপাত্র বাজ মোহাম্মদ সারওয়ারি এ তথ্য দিয়েছেন মিডিয়ার কাছে। তিনি বলেছেন, নিহত ২৬ জনের মধ্যে চারটি শিশু এবং ৫ জন নারী রয়েছেন। আহত হয়েছেন অনেক মানুষ। এ খবর দিয়েছে অনলাইন আল জাজিরা।
বাজ মোহাম্মদ সারওয়ারি বলেছেন, ভারি বৃষ্টিপাত হচ্ছে বিভিন্ন এলাকায়।
তার মধ্যে প্রথম উদ্ধারকারীরা ঘটনাস্থলে পৌঁছেছেন। তিনি আরো বলেছেন, মৃতের সংখ্যা আরো বাড়ার আশঙ্কা আছে। কারণ, বাদঘিস হলো তুর্কমেনিস্তান সীমান্ত সংলগ্ন একটি পাহাড়ি এলাকা। আফগানিস্তানের সবচেয়ে বঞ্চিত ও অনুন্নত অঞ্চল এটি। প্রথম কম্পনের প্রায় দুই ঘন্টা পরে একই এলাকায় ৪.৯ মাত্রার দ্বিতীয় কম্পন আঘাত হানে। জরুরি ব্যবস্থাপনা বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের ইমার্জেন্সি অপারেশন্স সেন্টারের প্রধান মোল্লা জানান সাইকি হতাহতের কথা নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানিয়েছেন কমপক্ষে ৭০০ বাড়িঘর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
এতে আরো ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে একই প্রদেশের মুকর জেলা। সেখানেও ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। অনেকে হতাহত হয়েছেন। তবে সেখানকার হতাহতের পরিসংখ্যান এখনও পাওয়া যায়নি। বাজ মোহাম্মদ সারওয়ারি বলেন, পুরো প্রদেশেই ভূকম্পন অনুভূত হয়েছে। প্রাদেশিক রাজধানী কালায়ে নাও-এর অনেক বাড়িঘরে ফাটল দেখা দিয়েছে। তবে ভয়াবহ কোনো বিপদ ঘটেনি। ইউরোপিয়ান-মেডিটারেনিয়ান সিসমোলজিক্যাল সেন্টারের হিসাব অনুযায়ী, ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থল ৩০ কিলোমিটার গভীরে।
এমনিতেই এই দেশটির ক্ষমতা তালেবানরা কেড়ে নেয়ার পর সেখানকার মানবিক বিপর্যয় ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। পশ্চিমা দেশগুলো আন্তর্জাতিক সহায়তা বন্ধ করে দিয়েছে। বিদেশে যেসব সম্পদ আছে দেশটির, তা স্পর্শ করতে দিচ্ছে না তারা। এখন শীতকাল। ভয়াবহ ঠাণ্ডা আফগানিস্তানে। এ সময়ে মানুষের অবর্ণনীয় দুর্ভোগ নিয়ে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান সতর্ক করেছে। কিন্তু আফগানিস্তানের জব্দ করা সম্পদ বা অর্থ অবমুক্ত করছে না পশ্চিমারা। এর ওপর ভূমিকম্প যে কাদিস এলাকায় আঘাত করেছে, সেখানে ভয়াবহ খরা দেখা দিয়েছে। এ অঞ্চল গত ২০ বছর আন্তর্জাতিক সহায়তার ওপর ভর করে টিকে ছিল। এখন সেখানে ভূমিকম্পে পরিস্থিতিকে আরো ভয়াবহ করে তুলেছে।
এমনিতেই আফগানিস্তানে ঘন ঘন ভূমিকম্প দেখা দেয়। বিশেষ করে হিন্দুকুশ পর্বতমালা যে অংশে সেখানে এই ভূমিকম্প বেশি হয়। এই অঞ্চলটি ইউরেশিয়ান এবং ইন্ডিয়ান টেকটোনিক প্লেটের সংযোগস্থলের কাছে। আফগানিস্তানের বাড়িগুলো দুর্বল। ফলে অল্প মাত্রার ভূমিকম্প হলেই তা ধসে পড়ে। ২০১৫ সালে শক্তিশালী ৭.৫ মাত্রার ভূমিকম্প আঘাত হানে দক্ষিণ এশিয়ায়। এ সময় প্রায় ২৮০ জন মারা যান।
সূত্র: মানবজমিন