রাজশাহীতে এক ব্যবসায়ীকে প্রাণনাশ, ব্যবসায়ীক ও আর্থিক ক্ষতি করার একটি হুমকির অডিও রেকর্ড গত কয়েকদিন থেকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ঘুরছে। আর এই হুমকি দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে দুর্গাপুর থানায় কর্মরত সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) আশরাফুল ইসলামের বিরুদ্ধে।
ভাইরাল হওয়া ৫ মিনিট ৪৬ সেকেন্ডের অডিওটি শুনে জানা গেছে, এএসআই আশরাফুল ইসলাম রাজশাহীর দুর্গাপুর উপজেলার এক ব্যবসায়ীর প্রাণনাশ ও আর্থিকভাবে ক্ষতি করার হুমকি দিয়েছেন। এমনকি নিজে পুলিশে চাকরি করার সুবাদে ওই ব্যবসায়ীকে মিথ্যা মামলায় ফাঁসানোর হুমকিও দেওয়া হয়েছে অডিও রেকর্ডটিতে। এএসআই আশরাফুল ইসলাম অডিও রেকর্ডটিতে নার্গিস বেগম নামে এক নারীর সঙ্গে কথা বলেছেন। ওই নারী এএসআই আশরাফুলের ভাবি বলে জানা গেছে।
মোবাইল ফোনে রেকর্ড করা কথোপকথনে এএসআই আশরাফুল বলছেন ‘আজ হোক কাল হোক, দুই বছর পর হোক, আর ২০ বছর পরে হোক, বকুলকে আমি ছাড়বো না। বকুলের যে কি ক্ষতি হবে সে (বকুল) নিজেও কল্পনা করতে পারবে না। তাকে (বকুল) আমি সামাজিকভাবে, ব্যবসায়ীকভাবে, আর্থিকভাবে ক্ষতি করবো। তাতে আমার যা হয় হবে। পুলিশের ট্রেনিং করা আছে। সহজেই বকুলকে আমি ছাড় দেবো না। ওর একটা বিহীত করেই ছাড়বো। এতে আমি যদি মরেও যাই, তাতে আমার স্ত্রী সন্তানের কোনো ক্ষতি হবে না। মাসে মাসে তারা ১০ হাজার টাকা করে পাবে। ১০ মণ করে ধান পাবে। এমনকি প্রয়োজনে দুর্গাপুর থানায় অথবা পুঠিয়া থানায় পোস্টিং নিয়ে আসব। আমি মরতে রাজি আছি, তবুও শত্রুকে আমি ক্ষমা করবো না।’
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এএসআই আশরাফুল বর্তমানে বসবাস করেন রাজশাহীর দুর্গাপুর পৌর সদরের সিংগা গ্রামে নানার বাড়িতে। তার গ্রামের বাড়ি রংপুর জেলার পলাশবাড়ী থানা এলাকায়। তার বাবার নাম মৃত জসিম উদ্দিন। তার বাবাও পুলিশে কর্মরত ছিলেন। গ্রামের বাড়ি রংপুরে হলেও নওগাঁ জেলায় ঠিকানা দেখিয়ে এএসআই আশরাফুল পুলিশের কনস্টেবল পদে যোগ দেন। নানার বাড়ি সিংগা এলাকাতেই সে এখন পরিবার নিয়ে বসবাস করে। জমিজমা নিয়ে তার আপন খালাতো ভাই ব্যবসায়ী বকুল ইসলামের সঙ্গে বিরোধ আছে।
ব্যবসায়ী বকুল ইসলামের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘আমিও লোক মারফত খবর পাই যে আমার সামাজিক, আর্থিক ক্ষতি করার হুমকি ও আমার প্রাণনাশ করার হুমকি দিয়ে আশরাফুল এক মহিলার সঙ্গে কথা বলেছেন। ওই অডিও রেকর্ডটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম থেকে আমিও শুনেছি।’
বকুল আরও বলেন, ‘ভাইরাল হওয়া অডিও রেকর্ডের ব্যাপারে আমার জীবনের নিরাপত্তা চেয়ে থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করবো। এছাড়াও পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের কাছে আবার লিখিত অভিযোগ দেব।’
পুলিশের এপিবিএন-এ কর্মরত এএসআই আশরাফুলের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘আমার কোনো বক্তব্য ফেসবুকে ছড়িয়েছে বলে আমি শুনিনি।’ এরপর এসপি অফিসে আছেন জানিয়ে সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেন।
সূত্রঃ বিডি প্রতিদিন