উত্তর কোরিয়ার একনায়ক কিম জং উনকে ধরাশায়ী করতে বার বার চেষ্টা করছে আমেরিকা। আর্থিক নিষেধাজ্ঞার পাশাপাশি ওয়াশিংটনের নির্দেশে দেশটির বিরুদ্ধে অন্তর্ঘাত চলছে বলেও অভিযোগ উঠেছে। কিন্তু কিমের পাশে দাঁড়িয়ে সেই সকল প্রয়াস ভেস্তে দিচ্ছে চীন ও রাশিয়া। সম্প্রতি মিসাইল উৎক্ষেপণ নিয়ে জাতিসংঘে পিয়ংইয়ংয়ের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞার প্রস্তাব আনে আমেরিকা। কিন্তু মস্কো ও বেইজিংয়ের আপত্তিতে আপাতত সেই প্রস্তাব ভেস্তে গেছে।
চলতি মাসেই একের পর এক ব্যালিস্টিক মিসাইল ছুঁড়ে শক্তি প্রদর্শন করে উত্তর কোরিয়া। পিয়ংইয়ংয়ের ব্যালিস্টিক মিসাইল উৎক্ষেপণের খবর নিশ্চিত করে দক্ষিণ কোরিয়া ও জাপান। উত্তর কোরিয়ার এই অতিসক্রিয়তায় উদ্বেগ প্রকাশ করে দুই প্রতিবেশী দেশ। এরপরই বিষয়টি নিয়ে ফের রুদ্ধদ্বার বৈঠকে বসে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ।
বৃহস্পতিবার (২০ জানুয়ারী) বৈঠকের আগে উত্তর কোরিয়ার এমন আগ্রাসী পদক্ষেপার নিন্দা করার দাবি জানান জাতিসংঘে নিযুক্ত আমেরিকার দূত লিন্ডা থমাস। তিনি জানান- আমেরিকা, ব্রিটেন, ফ্রান্স ও জাপানসহ একাধিক দেশ কিমের ব্যালিস্টিক মিসাইল উৎক্ষেপণের নিন্দা করেছে। সূত্রের খবর, জাতিসংঘে পিয়ংইয়ংয়ের উপর আরও কড়া আর্থিক নিষেধাজ্ঞা জারি করার প্রস্তাব দেয় আমেরিকা। কিন্তু সেই প্রস্তাবে তীব্র আপত্তি জানিয়েছে নিরাপত্তা পরিষদের দুই স্থায়ী সদস্য চীন ও রাশিয়া।
উল্লেখ্য, করোনা আবহে দেশের চরম খাদ্যসংকটে অস্ত্রভাণ্ডার ভরপুর করার দিকে চিন্তা না করে খাদ্য উৎপাদনে জোর দিয়েছিলেন উত্তর কোরিয়ার রাষ্ট্রপ্রধান কিম। কিন্তু নতুন বছর শুরু হতেই ফের যুদ্ধাস্ত্রে শান দেওয়া শুরু করেছে উত্তর কোরিয়া। ফের ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষায় নেমেছেন কিম জং উন। প্রসঙ্গত, কোনওরকম ব্যালিস্টিক বা পরমাণু ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণে উত্তর কোরিয়ার উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছিল জাতিসংঘ। তা উপেক্ষা করেই প্রোজেক্টাইল ছুঁড়েছে দেশটি।
প্রসঙ্গত, ২০২১ সালের জানুয়ারি মাসে কমিউনিস্ট দেশটির রাজধানী পিয়ংইয়ংয়ে সামরিক কুচকাওয়াজে দৈত্যকার ক্ষেপণাস্ত্রের প্রদর্শন করেছিল উত্তর কোরিয়া। বিশ্লেষকদের মতে, দৈত্যাকার হাতিয়ারটি হচ্ছে ‘সাবমেরিন লঞ্চড ব্যালিস্টিক মিসাইল’ বা ডুবোজাহাজ থেকে উৎক্ষেপণ করার মতো ক্ষেপণাস্ত্র। এটি আণবিক অস্ত্রবহনে সক্ষম বলেও দাবি। মূলত আমেরিকাকে ভয় দেখিয়ে কূটনৈতিক মঞ্চে সুবিধা আদায় করতেই কিমের এই শক্তি প্রদর্শন কিম বলে মনে করছিলেন বিশ্লেষকরা।
সূত্রঃ বিডি-প্রতিদিন