উত্তরের জেলা পঞ্চগড়ে বিরাজ করছে ঘন শীত। প্রায় দিনই এই জেলায় দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা বিরাজ করছে। শনিবার এই জেলায় দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ৮ দশমিক ৩ ডিগ্রী রেকর্ড করা হয়েছে। তীব্র এই শীতের সময়ে এ মাসের শুরুর দিকে জীবিকার সন্ধানে পঞ্চগড়ে এসে খোলা মাঠে তাবু ফেলেছেন একদল বেদে সম্প্রদায়ের মানুষ। সদর উপজেলার অমরখানা ইউনিয়নের বোর্ডবাজার এলাকার একটি মাদ্রাসা মাঠে প্লাষ্টিক আর বাঁশ দিয়ে বানানো একটি তাবুতেই থাকছে পরিবারের সবাই।
স্থানীয়দের সহযোগিতায় ধানের খর সংগ্রহ করে মাটিতে পেতেছেন বিছানা। সারাদিন গ্রামে গ্রামে ঘুরে নানা ধরনের অসুখ বিসুখের ঝাড়-ফুঁক আর গাছ গাছালির ওষুধ বিক্রি করে যা আয় হয় তা দিয়েই তিনবেলা খাবারের ব্যবস্থা করেন তারা। কেউ কেউ সাপ খেলাও দেখিয়ে আয় করেন। তাদের সাথে রয়েছে তাদের শিশুরাও। হঠাৎ করে গভীর শীতের কবলে পড়ে বিপাকে পড়েছেন তারা। বেদেরা জানান, তারা জানতেন না এদিকে এতো শীত পড়ে। বর্তমানে মাটিতে শোয়ার কারণে প্রায় প্রত্যেকেই ভুগছেন শীত জনিতে সর্দি জ্বরে। তারা যশোর এবং ঢাকা সাভার থেকে এসেছেন বলে জানিয়েছেন।
সরেজমিন দেখা যায়, মাঠের মধ্যে হু হু করে বইছে বাতাশ। মাটিতে বিছানা পাতার কারণে ঠান্ডা এসে জাপটে ধরছে। অনেকের শীতের কাপড় নেই। পুরোনো কাপড়গুলো দিয়ে শরীর ঢেকে কোনো রকমে রাত পার করছেন তারা। শীতের তীব্রতা বেড়ে যাবার কারণে আয় রোজগারও কমে গেছে তাদের। নিদারুণ সংকটে পড়েছে তারা। একবেলা খেয়ে দিন পার করছেন। জানা গেছে এই মাদ্রাসা মাঠে ১৫ টি পরিবার ১৫ টি তাবুর মধ্যে গাদাগাদি করে আছেন। বেদেরা শীতের কাপড় চেয়েছেন।
এই সম্প্রদায়ের সখিনা আক্তার জানান, এদিকে এতো শীত পড়ে আমরা জানতাম না। শীতের কারণে আমাদের সবার জ্বর সর্দি ধরেছে। দিনের বেলা সবাই গ্রামে গ্রামে চলে যাই। দিনে ২শ থেকে ৩ শ টাকা আয় হয়। তা দিয়েই সংসার চলে। এই জেলায় আরও বিভিন্ন এলাকায় বেদেরা তাবু ফেলেছে। তাদের শীতের কাপড় নাই। আমাদের এখানে প্রায় ৪০/৪৫ জন বেদে সম্প্রদায়ের মানুষ আছি। দুইবেলা খেতে পাই না। একবেলা খেয়ে কোন রকমে দিন পার করছি।
পঞ্চগড় সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাসুদুল হক জানান, উপজেলা প্রশাসন থেকে অচিরেই তাদেরকে কম্বল দেয়া হবে। আমি নিজে গিয়ে খোঁজ খবর নেবো।
সূত্র: বিডি প্রতিদিন