মিরপুরে নাসুম আহমেদের অসাধারণ স্পিন ঘূর্ণিতে অসহায় আত্মসমর্পণ করল মিনিস্টার ঢাকার তারকা ব্যাটসম্যানরা। ওপেনার তামিম ইকবাল টুর্নামেন্টে টানা দ্বিতীয় ফিফটি পেলেও হার এড়াতে পারেনি তার দল ঢাকা। এক নাসুমেই দিশেহারা হয়ে চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্সের কাছে ৩০ রানে হেরেছে তারা।
হার দিয়ে বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগ শুরু করা ঢাকা থাকলো হারের বৃত্তেই। আর প্রথম ম্যাচে হারের পর ব্যাটে-বলে দারুণ খেলে দ্বিতীয় ম্যাচেই তারকায় ঠাসা ঢাকাকে হারিয়ে সাগরিকা পাড়ের দলটি পেয়েছে প্রথম জয়ের দেখা।
শনিবার বিপিএলের দ্বিতীয় দিন টস হেরে আগে ব্যাটিং করে ৮ উইকেট হারিয়ে ১৬১ রান করে চট্টগ্রাম। টার্গেটে খেলতে নেমে ১ বল বাকি থাকতে ১৩১ রানে অলআউট হয় ঢাকা।
এক তামিম ছাড়া ঢাকার ব্যাটসম্যানরা ছিলেন ছায়া হয়ে। মুকিদুল ইসলামের শিকার হয়ে মোহাম্মদ শাহজাদ (৯) ফেরেন শুরুতে। শাহজাদ ফিরলেও তামিমের ব্যাটে সেই চাপ সামলে ওঠার চেষ্টা ছিল ঢাকার।
শরিফুলের করা পঞ্চম ওভারে দুই চার এক ছয়ে ১৫ রান নিয়ে সেই বার্তায় দিয়েছিলেন দেশসেরা ওপেনার। তবে আগের দিনের মতো থেমে যান ফিফটির পরেই। ৪২ বলে ৬ চার ও ২ ছয়ে ফিফটির দেখা পেয়েছিলেন। আউট হয়েছেন ৫২ রানে।
শরিফুলের শিকার হয়ে জহুরুল ইসলাম (১০) ফেরেন দুই অঙ্কের ঘর স্পর্শ করেই। এক ওভার পরেই নাসুমের জোড়া আঘাতে চাপে পড়ে যায় ঢাকা। ফেরেন মোহাম্মদ নাঈম (৪) ও মাহমুদউল্লাহও (৫)। এরপর ভরসা ছিলেন ক্যারিবীয়ান সুপারস্টার রাসেল। এক ছয় এক চার মেরে সেই আভাসও দিয়েছিলেন।
কিন্তু আবারও নাসুমে ভঙ্গ হলো ঢাকার স্বপ্ন। ক্যারিবীয়ান সুপারস্টারকে যখন মিড উইকেটে শামীম হোসেন পাটোয়ারির ক্যাচ বানিয়ে সাজঘরে ফেরালেন, তখনই লেখা হয়ে যায় চট্টগ্রামের জয়ের চিত্রনাট্য। রাসেলের ব্যাট থেকে আসে ১০ বলে ১২ রান। এরপর শুভাগত হোম (১২) ও ইসিরু উদানা (১৬) শুধু জয়ের ব্যবধানটাই কমিয়েছেন।
বল হাতে নাসুম ৪ ওভারে মাত্র ৯ রান দিয়ে নিয়েছেন ৩ উইকেট। কৃপণ বোলিংয়ের সঙ্গে গুরুত্বপুর্ণ সময়ে মাহমুদউল্লাহ-রাসেলদের ফিরিয়ে যেন আসল কাজটাই করেছেন এই বাঁহাতি স্পিনার। সর্বোচ্চ ৪ উইকেট নিয়েছেন শরিফুল। রান দিয়েছেন ৩৪টি। এর আগে, টস হেরে ব্যাটিং করতে নেমে সম্মিলিত প্রয়াসে চ্যালেঞ্জিং স্কোর ছুড়ে দেয় চট্টগ্রাম। জ্যাকসের বিধ্বংসী ব্যাটিংয়ে চট্টগ্রাম ভুলে যায় শুরুতে কেনার লুইসকে হারানোর ব্যথা।
আন্দ্রে রাসেলকো এলোমেলো করে ৬ চার ও ২ ছয়ে জ্যাকস করেছেন ২৪ বলে ৪১ রান। তাকে বোল্ড করে স্বস্তি এনে দিয়েছেন শুভাগত হোম। রাসেল-তামিমের হাতে দুই জীবন পেয়েও আফিফ খেলতে পারেননি লম্বা ইনিংস। থেমেছেন ১২ বলে ১২ করে।
জ্যাকসরা ফিরলেও চট্টগ্রামের রানের চাকা সচল রেখেছেন দেশি মেহেদি হাসান মিরাজ ও সাব্বির রহমান। দুজনের জুটি থেকে আসে ৪৪ রান। ব্যাটিং অর্ডারে পাঁচে উঠে আসা মিরাজ পেয়েছেন রানের দেখা। ৪ চারে ২৫ বলে ২৫ করেন তিনি। তবে সাব্বিরকে শুরুতে জড়সড় দেখালেও ধীরে ধীরে তার বাড়ান স্ট্রাইকরেট। তার ব্যাট থেকে আসে ১৭ বলে ২৯ রান। দারুণ এক ডেলিভারিতে তার স্ট্যাম্প ভেঙে দিয়েছেন রুবেল। একই ওভারে ফেরান শামীম হোসেনকেও (১)।
রুবেলের করা ১৬তম ওভারে জোড়া উইকেট হারলেও সাগরিকার পাড়ের দলটির রানের চাকা থামেনি। হাওয়েলের ঝড়ে শেষ চার ওভারে তারা তোলে ৪১ রান। যাতে হাওয়েল একাই করেন ২৬! ইনিংসের শেষ বলে তিনি রানআউট হয়েছেন মাত্র ১৯ বলে ৩৭ রান করে।
দিনটা নিজের করে নিতে পারতেন রুবেল। প্রথম ৩ ওভারে মাত্র ১২ রান দিয়ে ৩ উইকেট নেওয়া এই বোলার নিজের শেষ ওভারে দেন ১৪ রান। ৪ ওভারে দেন ২৬ রান। এ ছাড়া ১টি করে উইকেট নেন আরাফাত সানি, ইসিরু উদানা, শুভাগত ও মাহমুদউল্লাহ।
সূত্র: আমাদের সময়.কম