মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলায় জঙ্গলে গাছে ঝুলন্ত শাড়ি দেখা যায়। এর নিচে মাটিতে ছড়ানো-ছিটানো অবস্থায় মানুষের হাড়-খুলি দেখা যায়।
সোমবার সন্ধ্যায় উপজেলার লাউয়াছড়ার স্টুডেন্ট ডরমিটরি লেকের পাশে বন বিভাগের ৫০ একরের থল এলাকা থেকে ওই কঙ্কাল উদ্ধার করে পুলিশ।
এদিকে গাছের সঙ্গে ঝুলানো শাড়িটি দেখে কঙ্কালটি গত ২৯ জুলাই নিখোঁজ হওয়া হাজেরা বিবি কুঠিলের (৪৮) বলে দাবি করেন তার ছেলে সোহেল আহমেদ। সোহেল স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান আসিদ আলীর ভাগিনা ও মানিক মিয়ার ছেলে।
ছেলে সোহেল জানান, মা (হাজেরা বিবি) গত ২৮ জুলাই রাতে একই এলাকায় ভাই আসিদ আলির বাড়ি থেকে রাতের খাবার শেষে নিজ বাড়িতে ফেরার পথে নিখোঁজ হয়েছিলেন। সেই সময় সম্ভাব্য সব জায়গায় খোঁজ নিয়ে তার কোনো সন্ধান পাওয়া যায়নি।
উদ্ধারকৃত কঙ্কালটি গৃহবধূ হাজেরা বিবির হলে তার কঙ্কালটি নিখোঁজের প্রায় ৫ মাস ২৬ দিন পর পাওয়া গেল।
হাজেরা বিবি উপজেলার মাধবপুর ইউনিয়নের লংগুরপাড় এলাকার মানিকের স্ত্রী ও মাধবপুর ইউনিয়নের নবনির্বাচিত চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগ সভাপতি মো. আসিদ আলির ছোট বোন।
স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, সোমবার বিকালে ফুলবাড়ি চা বাগানের চা শ্রমিক বনো বাউরী ও তার স্ত্রী জঙ্গলে ছন কাটতে যান। এ সময় সেখানে একটি গাছে শাড়ি ঝুলানো দেখতে পান তারা।
পরে স্থানীয় কয়েকজনকে সঙ্গে নিয়ে সেখানে শাড়ির নিচে দেখতে পান মাটিতে মাথার খুলি ও কয়েকটি হাড় পড়ে আছে। পরে তারা বিষয়টি পুলিশে জানায়। পরে ঘটনাস্থলে গিয়ে শাড়ি, মাথার খুলি ও হাড় উদ্ধার করে।
মাধবপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আসিদ আলীর বড় ছেলে শাহ্আলম গাছে ঝুলানো শাড়ি দেখে বলেন, এটি আমার ফুফু হাজেরা বিবির।
জানতে চাইলে কমলগঞ্জ থানার পরিদর্শক (তদন্ত) সোহেল রানা বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে একটি মাথার খুলি ও কয়েকটি হাড় উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসা হয়েছে। এ কঙ্কাল কার ডিএনও টেস্ট করার পর শনাক্ত করা যাবে। এ বিষয়ে আইনি প্রদক্ষেপ গ্রহণ করা হচ্ছে।
উল্লেখ, গত বছরের ২৯ জুলাই হাজেরা বিবি নিখোঁজ হন। নিখোঁজের পর ৩০ জুলাই ভাই মো. আসিদ আলি কমলগঞ্জ থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেছিলেন।
সেই সময় ঢাকায় কর্মস্থলে ছিলেন তার ছেলে সোহেল আহমেদ। তিনি মায়ের নিখোঁজের খবর পেয়ে ২ আগস্ট কঠোর লকডাউনের মধ্যেই প্রায় ১৪ ঘণ্টায় ২৩০ কিলোমিটার সাইকেল চালিয়ে মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলায় নিজ বাড়ি পৌঁছে ছিলেন।
সূত্র: যুগান্তর