ঠাকুরগাঁও জেলা প্রতিনিধিঃ
ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার ধন্দোগাঁও গ্রামের কৃষক ভূষণ চন্দ্র। বর্তমানে তিনি ঘোড়া দিয়ে হালচাষ করে জীবিকা নির্বাহ করছেন।
এক সময় গরু দিয়ে অন্যের জমিতে হাল চাষ করতেন ভূষণ চন্দ্র। পারিবারিক সমস্যার কারণে একটি গরু বিক্রি করে দেওয়ায় হাল চাষ করা বন্ধ হয়ে যায় তার৷ পরে তিনি অপর গরুটি বিক্রি করে দুটি ঘোড়া ক্রয় করেন ৷ বর্তমানে ঘোড়া দিয়ে দিব্যি হালচাষ করছেন তিনি৷
কৃষক ভূষণ বলেন, আমি গত এক বছর থেকে ঘোড়া দিয়ে জমি চাষ করে আসছি৷ শুরুতে ঘোড়াগুলোকে হালের কসরত শেখাতে অনেক কষ্ট হয়েছে।বউকে সাথে নিয়ে আমি ঘোড়াগুলোকে আয়ত্ত করার চেষ্টা করেছি৷ ঘোড়ার কাধের উপর লাঙল-জোঁয়াল জুড়ে দিয়ে অনেকবার চেষ্টা করার পর আয়ত্তে আসে। এই ঘোড়ার হাল দিয়ে নিজের যেটুকু আছে সেই জমির পাশাপাশি অন্যের জমি বেশী চাষাবাদ করছি৷ প্রতি বিঘা জমি চাষ করতে নিচ্ছি ৫০০ টাকা৷ এতে যা আয় হয় তা দিয়ে পরিবার চালাই। বৃহস্পতিবার ২৭ জানুয়ারি সরেজমিনে গিয়ে ভূষণের ঘোড়া দিয়ে হাল চাষের এমন দৃশ্য চোখে পড়ে।
ওই এলাকার কৃষক রমজান বলেন,আগে আমি মহেন্দ্র দিয়ে জমিতে হালচাষ করতাম। এখন ঘোড়া দিয়ে হালচাষ করাছি। এতে করে চাষ করার সময় জমির অনেকটা গভির থেকে চাষ হচ্ছে এবং সাশ্রয়ী। আমি আশা করছি ফলনও ভাল হবে৷
কৃষক মনসুর আলী বলেন, আমরা এর আগে গরু দিয়ে হালচাষ করতাম৷ এখন আমরা ঘোড়া দিয়ে হালচাষ করাছি।হাল অধিক গভির হওয়ায় মাটির উর্বরতা বাড়বে বলে আশা করছি৷ এছাড়াও ঘোড়া দিয়ে হাল চাষ করায় একটি আলাদা অনুভূতির সৃষ্টি হচ্ছে এবং আনন্দ লাগছে৷ বিভিন্ন জায়গা থেকে লোকজনও দেখতে আসছে।
এলাকার ধনেশ্বর রায় বলেন, আগে ঘোড়া ব্যবহার করা হত মালামাল টানার জন্য। আর আধুনিক যন্ত্রাংশ দিয়েই মূলত হালচাষ করা হয়৷ কিন্তু ধন্দোগাঁও গ্রামের কৃষক ভূষণ চন্দ্র রায় ঘোড়া দিয়ে হাল চাষ করে চমক সৃষ্টি করেছেন। আমার জানামতে এটি ঠাকুরগাঁওয়ে প্রথম ঘোড়া দিয়ে হাল চাষ৷ যেখানে বর্তমানে হালচাষে এক জোড়া গরুর দাম ১ লাখ টাকার উপরে সেখানে এক জোড়া ঘোড়া হাল ৪০ থেকে ৫০ হাজার টাকায় পাওয়া যাচ্ছে। যেটি অনেক সাশ্রয়ী ও জমির উর্বরতা বৃদ্ধিতে উপকারী। আর সাধারণ মানুষ উৎসুক হয়ে এটি দেখতে আসছে৷ এবং বিরল প্রকৃতির হওয়াতে কৃষকের চাহিদাও প্রচন্ড।।