প্রতিপক্ষকে ফাঁসাতে অপহরণের নাটক সাজিয়ে ৩ বছর ধরে আত্মগোপনে ছিলেন শাহজাহান আলী নাহিদ (৪০) নামে এক যুবক। বাড়ির পাশে নাহিদের রক্তমাখা পোশাকও উদ্ধার করে পুলিশ। প্রচার করা হয় তাকে প্রতিপক্ষক হত্যা করে মরদেহ গুম করেছে।
অবশেষে পুলিশের ফাঁদে ৩ বছর পর ধরা পড়লেন সেই শাহজাহান আলী নাহিদ। জানা গেলো নাহিদ অপহরণ ও হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়নি। সবি ছিলো তাদের স্বামী-স্ত্রীর সাজানো নাটক।
বৃহস্পতিবার দুপুরে আটক শাহজাহান আলী নাহিদকে আদালতে পাঠায় লালমনিরহাট সদর থানা পুলিশ। তিনি জেলার কালীগঞ্জ উপজেলা কাকিনা ইউনিয়নের ইশোরকোল গ্রামের মৃত হবিবর রহমানের ছেলে। বর্তমানে লালমনিরহাট শহরের হাড়িভাঙ্গা মাজার এলাকার বাসিন্দা।
পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, প্রতিবেশীর সাথে জমি নিয়ে বিরোধের জের ধরে মামলা হয় শাহজাহান আলীর নাহিদের বিরুদ্ধে। সেই জেরে প্রতিপক্ষকে ফাঁসাতে ২০১৯ সালের ২৭ মার্চে আত্মগোপন করেন তিনি। এ ঘটনায় ২০১৯ সালের ৮ এপ্রিল শাহজাহান আলীর স্ত্রী মতিয়া বেগম দিপা বাদী হয়ে স্বামী নিখোঁজের বিষয়ে সদর থানায় একটি জিডি (৪১৪) করেন। এরপর একই বছরের ২৫ এপ্রিল তার বাড়ির পাশ থেকে নাহিদের রক্তমাখা পোশাক উদ্ধার করে পুলিশ।
এ ঘটনায় নাহিদের স্ত্রী মতিয়া বেগম দিপা এলাকায় প্রচার করেন তার স্বামীকে প্রতিপক্ষক হত্যা করে মরদেহ গুম করেছে। যা নিয়ে সেসময় কিছু গণমাধ্যমে খরব প্রকাশিত হয়। নাহিদ হত্যা হতে পারে- এমন ক্লু নিয়ে তদন্তে মাঠে নামে সদর থানা পুলিশ। হত্যার বিষয়টি পুলিশের কাছে রস্যজনক মনে হলে জিডি হিসেবে নথিভুক্ত রেখে তদন্ত চলমান রাখে পুলিশ।
অবশেষে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে বুধবার (২৬ জানুয়ারি) মধ্যরাতে প্রায় ৩ বছর পর লালমনিরহাট শহরের মিশন মোড় এলাকা থেকে শাহজাহান আলী নাহিদকে আটক করে সদর থানা পুলিশ।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে নাহিদ পুলিশকে জানায়, প্রতিপক্ষকে ফাঁসাতেই নিজে অপহারণের নাটক করেন। জিডির বাদী স্ত্রী মতিয়া বেগম দিপাও জানতেন তার স্বামী কোথায় আছেন।
লালমনিরহাট সদর থানা ওসি (তদন্ত) শহিদুল ইসলাম জানান, প্রতিপক্ষকে ফাঁসাতে শাহজাহান আলী নাহিদ নিজে আত্মগোপনে ছিলেন বলে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তিনি স্বীকার করেছেন। মিথ্যা তথ্য দিয়ে হয়রানী করার দায়ে আটক ব্যক্তির বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
সূত্রঃ বাংলাদেশ জার্নাল