খুলনার ফুলতলায় ধর্ষণের পর তরুণী মুসলিমা খাতুনকে গলা কেটে হত্যার ঘটনায় আসামি রিয়াজ খন্দকার ও সোহেল সরদার আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন।
রবিবার সন্ধ্যায় সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত-২ এ হত্যাকাণ্ডের দায় স্বীকার করে তারা স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয়। ফুলতলা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ইলিয়াছ তালুকদার এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
পুলিশ জানান, সাতক্ষীরা জেলার শ্যামনগর উপজেলার ইমদাদের মেয়ে মুসলিমা। সে একটি জুট মিলের শ্রমিক। হত্যাকাণ্ডের চারদিন আগে রাত সাড়ে নয়টার দিকে ওই জুট মিলের গাড়িতে মিলের সামনে নামে। সে সময় রিয়াজ সিগারেটের দোকানে বসে ধূমপান করছিল। মুসলিমাকে দেখে লোলুপ দৃষ্টি পড়ে রিয়াজের। মোবাইল নম্বর সংগ্রহ করে ফোন দিতে থাকে সে।
প্রথম দিকে রিয়াজের ফাঁদে পা দিতে রাজি হয়নি মুসলিমা। পরে রিয়াজ ও সোহেল দু’জনে মিলে পরিকল্পনা করতে থাকে কিভাবে মেয়েটিকে রাজি করা যায়। এরপর সোহেলকে দিয়ে মুসলিমার নিকট ফোন দেওয়া হয়। তখন বলা হয় দেখা না করলে রিয়াজ আত্মহত্যা করবে।
২৫ জানুয়ারি রাতে রিয়াজের ফোন থেকে সোহেল মুসলিমাকে ফোন দেয়। ঘর থেকে বাইরে আসলে তাকে নিয়ে প্রথমে বেজেরডাঙ্গা বাজারে নেওয়া হয়। সেখানে রিয়াজ তাকে বিয়ের আশ্বাস দেয়। এর মধ্যে রিয়াজ তার দু:সম্পর্কের দুলাভাই ইউসুফকে ফোন দিয়ে একটি ঘর প্রস্তুত করতে বলে। ইউসুফ ফোন করে যুগ্নিপাশা গ্রামের মুনসুরকে ঘরের জন্য জানায়। রাত সাড়ে নয়টার দিকে তারা তিনজন মিলে মুনসুরের একটি কক্ষে প্রবেশ করে। কিছুক্ষণ পরে সোহেলকে ঘর থেকে বের হতে বলে রিয়াজ। প্রথমে মুসলিমাকে ধর্ষণ করে রিয়াজ। পরে সোহেল ওই ঘরে ধর্ষণের জন্য গেলে চিৎকার করে সে। পরে ঘর থেকে বের হয়ে আসে সোহেল।
ধর্ষণ শেষে রিয়াজকে বাড়ি পৌঁছে দেওয়ার কথা বলে মুসলিমা। বাইরে এসে তারা দু’জন আলোচনা করে ধর্ষণের ঘটনা ফাঁস হলে তাদের বিপদ আছে। তারা দু’জনে তাকে হত্যার পরিকল্পনা করে। রাত দেড়টার দিকে মুনসুরের বাড়ি থেকে বের হয় ওই তিনজন। নির্জন রাস্তায় এসে মুসলিমার মুখ চেপে ধরে সোহেল। গায়ের ওড়না দিয়ে গলায় ফাঁস দেয় রিয়াজ। মৃত্যুর পরও দু’জনে তাকে ধর্ষণ করে। লাশ যেন কেউ শনাক্ত না করতে পারে সেজন্য রিয়াজ বাড়ি থেকে ধারালো বটি এনে দেহ থেকে মাথাটি বিচ্ছিন্ন করে। দেহের অংশটি উত্তরডিহির ধান ক্ষেতে আর মাথাটি নিহতের পরিধেয় কাপড় দিয়ে আবৃত করে ওই এলাকার নির্মাণাধীন বাড়ির টয়লেটের বালুর নিচে পুতে রাখে তারা।
সূত্রঃ বিডি-প্রতিদিন