সুইস ব্যাংকসহ বিদেশি ব্যাংকে যেসকল বাংলাদেশি অর্থ রেখেছেন, তাদের একটি তালিকা তৈরি করতে বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটকে (বিএফআইইউ) নির্দেশ দেয়া হয়েছে আদালত থেকে।
এছাড়াও পানামা পেপারস ও প্যারাডাইস পেপারস কেলেঙ্কারিতে যেসকল বাংলাদেশি ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের নাম রয়েছে, তাদের বিরুদ্ধেও তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেয়ার নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। সিআইডি ও দুর্নীতি দমন কমিশনকে (দুদক) আগামী ৬ মার্চ এ প্রতিবেদন দাখিল করতে বলা হয়েছে।
রোববার শুনানি শেষে আদালত এই আদেশ দেন। আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী আবদুল কাইয়ুম খান ও সুবীর নন্দী দাস। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল একেএম আমিন উদ্দিন মানিক আর দুদকের পক্ষে ছিলেন খুরশীদ আলম খান।
গত ২৬ জানুয়ারি বিদেশে অর্থপাচারের অভিযোগে পানামা পেপারস ও প্যারাডাইস পেপারসে আসা ৬৯ বাংলাদেশি ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের নামের তালিকা আদালতে জমা দেয় বিএফআইইউ। তার পরের দিন দুদক দেয় ১৮ জনের তালিকা।
এসবের আগে গত বছরের ৫ ডিসেম্বর পানামা পেপারস ও প্যারাডাইস পেপারসে নাম আসা ব্যক্তিদের তালিকা করে পৃথক দুটি প্রতিবেদন হাইকোর্টে জমা দেয় দুদক।
আজ হওয়া এই শুনানিতে খুরশীদ আলম খান বলেন, বিদেশে ব্যাংক অ্যাকাউন্ট খোলা, অফশোরসহ অন্যান্য কোম্পানি রেজিস্ট্রেশন বা সম্পত্তি অর্জনসংক্রান্ত তথ্য সংগ্রহের জন্য মূলত বিএফআইইউ সর্বাধিক উপযুক্ত মাধ্যম। অভিযোগ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের বক্তব্যের সত্যতা যাচাইয়ে, অর্থাৎ মূল অনুসন্ধানাধীন বিষয় তথা ওই ব্যক্তি কর্তৃক সংশ্লিষ্ট দেশে অফশোর কোম্পানি খোলা এবং তাতে বিনিয়োগ ও লেনদেনসংক্রান্ত তথ্যাদি বিএফআইইউ থেকে পেয়ে- তা দাখিল করেছি।
হাইকোর্ট বেঞ্চের জ্যেষ্ঠ বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার এসময় তাকে বলেন, পানামা পেপারসে যাদের নাম এসেছে তাদের বিষয়ে কী করা হয়েছে, সেটা আমরা দেখতে চাই। আগামী ৬ মার্চ এ প্রতিবেদন দাখিল করতে বলা হলো।
এদিকে সুইস ব্যাংকসহ অন্যান্য বিদেশি ব্যাংকে বাংলাদেশের কে কত টাকা পাচার করেছে, সে তথ্যও জানতে চেয়েছে হাইকোর্ট। বিদেশি ব্যাংক, বিশেষ করে সুইস ব্যাংকে পাচার করা ‘বিপুল পরিমাণ’ অর্থ উদ্ধারের যথাযথ পদক্ষেপের নির্দেশনা চেয়ে গত বছর ১ ফেব্রুয়ারি হাইকোর্টে রিট করেছিলেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী আবদুল কাইয়ুম খান ও সুবীর নন্দী দাস।
এছাড়াও পানামা পেপারস ও প্যারাডাইস পেপারসে যেসকল বাংলাদেশি নাগরিক ও কোম্পানির নাম এসেছে, তাদের বিষয়ে তদন্তের নির্দেশ কেন দেওয়া হবে না এবং সে তদন্তের অগ্রগতি প্রতি মাসে আদালতকে জানাতে কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না- সেটিও জানতে চাওয়া হয় আদলতের পক্ষ থেকে।
প্রসঙ্গত গত বছরের ২৪ অক্টোবর হাইকোর্টের কাছে ঢাকা ও চট্টগ্রামে তদন্ত চলমান এমন ৭ মামলায় ব্যক্তি-প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে ৩১০ কোটি ৮০ লাখ ৭৪৮ টাকা পাচারের তথ্য দিয়েছিল পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। সিআইডির সেই প্রতিবেদনে বলা হয় অভিযুক্ত ঐসকল ব্যক্তি-প্রতিষ্ঠান মালয়েশিয়া, ফিলিপাইন, শ্রীলংকা, সিঙ্গাপুর, দুবাই ও থাইল্যান্ডে টাকা পাচার করেছেন।
সূত্রঃ বাংলাদেশ জার্নাল