উড়তে থাকা ভিক্টোরিয়ানদের মাটিতে নামালো মিনিস্টার গ্রুপ ঢাকা। টানা তিন জয়ের পর পরাজয়ের তিক্ত স্বাদ পেলো কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ানস। গতকাল বিপিএলের ১৫তম ম্যাচে কুমিল্লাকে ৫০ রানে হারায় ঢাকা। চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে আগে ব্যাট করে মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ ও তামিম ইকবালের অনবদ্য ব্যাটিংয়ে ২০ ওভারে ১৮১/৬-এ পৌঁছে মিনিস্টার ঢাকার সংগ্রহ। জবাবে ১৫ বল বাকি রেখেই ১৩১ রানে গুটিয়ে যায় কুমিল্লা। চলতি বিপিএলে ৬ ম্যাচে এটি ঢাকার তৃতীয় জয়। অন্যদিকে চার ম্যাচে কুমিল্লার সংগ্রহ সমান ৬ পয়েন্ট।
রান তাড়ায় কুমিল্লার ওপেনার মাহামুদুল হাসান জয় ছাড়া আর কেউই বড় ইনিংস খেলতে পারেননি। সর্বোচ্চ ৪৬ রান করেন জাতীয় দলের এই তরুণ ব্যাটার।
৩০ বলের ইনিংসটি তিনি সাজান ৮ চারে। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ২৮ রান আসে অধিনায়ক ইমরুল কায়েসের ব্যাট থেকে। করিম জানাত করেন ১৭ রান। কুমিল্লার গত ম্যাচের সেরা ক্রিকেটার ফাফ ডু প্লেসি এবার ৭ বলে ৮ রান করে কাটা পড়েন রানআউটে। লিটন দাস রানের খাতাই খুলতে পারেননি। গত ম্যাচে ফিফটি হাঁকানো ক্যামেরন ডেলপোর্টও আউট হন মাত্র ৩ রান করে। ঢাকার হয়ে বিধ্বংসী বোলিং নৈপুণ্য দেখান অলরাউন্ডার আন্দ্রে রাসেল। ২.৩ ওভারে ১৭ রানে ৩ উইকেট নেন এই ক্যারিবিয়ান পেসার। অপর পেসার ইবাদত হোসেন ৩ ওভারে ২১ রানে নেন ২টি। আফগান লেগস্পিনার কায়েস আহমেদের শিকার ৪ ওভারে ২৭ রানে দুই উইকেট। ২ ওভারে মাত্র ৫ রান দিয়ে এক উইকেট নেন ঢাকার আরেক স্বদেশি পেসার রুবেল হোসেন। ইনিংসের শুরুর ১০ ওভারে ৮২/২ সংগ্রহ নিয়ে ম্যাচে নিজেদের সম্ভাবনা ধরে রেখেছিল কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ানস। তৃতীয় ওভার শেষ হওয়ার আগেই দলীয় মাত্র ১২ রানের মধ্যে দুই ইনফর্ম ব্যাটার লিটন দাস-ফাফ ডু প্লেসি সাজঘরে ফেরার পর হাল ধরে রেখেছিলেন জয় ও ইমরুল। ৪২ বলে ৭০ রানের জুটি গড়ে দলকে কক্ষপথে রেখেছিলেন তারা। তবে ১১তম ওভারে বল হাতে জোড়া আঘাত হানেন রাসেল। ঢাকার ক্যারিবীয় পেসার জয় ও ইমরুল- দুজনকেই সাজঘরে ফেরান সরাসরি বোল্ড আউট করে। এর পর ম্যাচে ফিরতে ব্যর্থ হয় কুমিল্লা। এর আগে টসে হেরে ব্যাটিয়ে নামে ঢাকা। অধিনায়ক মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ ৪১ বলে খেলেন ৭০ রানের বিস্ফোরক ইনিংস। ৩ চারের সঙ্গে ৪টি ছক্কা হাঁকান রিয়াদ। আগের ম্যাচে ১১১* করা তামিম ইকবালও রান পেয়েছেন। ৩৫ বলে ২ চার ও ৩ ছক্কায় বাঁহাতি ওপেনার করেন ৪৬ রান। বাকিরা বড় ইনিংস খেলতে না পারলেও ১৮১ রানের পুঁজি পায় ঢাকা। কুমিল্লার হয়ে সর্বোচ্চ ২ উইকেট নেন তানভীর ইসলাম। করিম জানাত, শহিদুল ইসলাম ও মোস্তাফিজুর রহমানের শিকার একটি করে উইকেট। ম্যাচসেরা হন ঢাকার অধিনায়ক মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ। ম্যাচের পর তিনি বলেন, ‘ছেলেরা আজ যেভাবে নিজেদের প্রমাণ করলো। জয়টা খুবই দরকার ছিল। তামিমের ইনিংসটা বড় সংগ্রহের ভিত গড়ে দিয়েছে। তামিম শেহজাদ গত কয়েক ম্যাচেই ভালো ব্যাটিং করেছে। এতে আমরা একটা ভালো ফিনিশিংয়ে ভরসা পাই। আজকের উইকেটও ছিল চমৎকার। আশা করি আমাদের জয়ের ক্ষুধা কমবে না।’
কুমিল্লার অধিনায়ক কায়েস ডেথ বোলিংকে দোষারোপ করলেন। তিনি বলেন, ‘আমাদের সবই ভালো ছিল। পাওয়ার প্লেতে আমরা নিয়ন্ত্রিত বোলিং করেছি। কিন্তু ইনিংসের শেষ দিকে বোলিং ভালো হয়নি।’ ইমরুল-জয়ের জুটিতে এক পর্যায়ে ১০ ওভারে কুমিল্লার স্কোর ছিল ৮২/২। কিন্তু পাঁচ রানের ব্যবধানে ৩ উইকেট খুইয়ে ম্যাচ থেকে ছিটকে যায় তারা। ইমরুল বলেন, ‘আমি এবং জয় (মাহমুদুল হাসান) যদি এভাবে খেলে যেতে পারতাম তাহলে জয়ের ভালো সম্ভাবনা থাকতো। আমরা টপাটপ কয়েকটি উইকেট হারিয়ে বসি।’
ইমরুল ইঙ্গিত দিলেন, বোলিং বিভাগের শক্তি বাড়াতে শিগগিরই সুনিল নারিনকে একাদশে অন্তুর্ভুক্ত করতে যাচ্ছে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ানস।
সংক্ষিপ্ত স্কোর
টস: কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ানস, ফিল্ডিং
মিনিস্টার ঢাকা: ২০ ওভারে ১৮১/৬ (তামিম ৪৬, রিয়াদ ৭০, ইমরান উজ্জামান ১৫; তানভীর ইসলাম ২/৩৬, মোস্তাফিজ ১/২৬)
কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ানস: ১৭.৩ ওভারে ১৩১ (জয় ৪৬, কায়েস ২৮, করিম জানাত ১৭; রাসেল ৩/১৭, কায়েস ২/২৭, ইবাদত ২/২১)
ফল: কুমিল্লা ৫০ রানে জয়ী
ম্যাচসেরা: মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ
সূত্র: মানবজমিন