ইউক্রেন ইস্যুতে রাশিয়াকে জোর করে যুদ্ধে নামানোর চেষ্টা করছে যুক্তরাষ্ট্র। এ অভিযোগ করেছেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। য়েক সপ্তাহের মধ্যে এটাই তার প্রথম সবচেয়ে জোরালো বক্তব্য। পুতিন বলেন, রাশিয়ার বিরুদ্ধে আরও নিষেধাজ্ঞা দেয়ার প্রেক্ষাপট খোঁজার জন্য একটি যুদ্ধকে ব্যবহার করার লক্ষ্য স্থির করেছে যুক্তরাষ্ট্র। ইউরোপে ন্যাটো জোট নিয়ে রাশিয়ার উদ্বেগের বিষয়টি উপেক্ষা করছে যুক্তরাষ্ট্র। পুতিনে এসব বক্তব্য নিয়ে রিপোর্ট প্রকাশ করেছে যুক্তরাষ্ট্র।
ইউক্রেন সীমান্তে বেশ কিছুদিন ধরে এক লাখ সেনা মোতায়েন করেছে রাশিয়া। মোতায়েন করেছে ট্যাঙ্ক থেকে শুরু করে সামরিক গোলাবারুদ এবং আকাশ থেকে হামলা চালানোর সব উপকরণ। এতে উদ্বেগ দেখা দিয়েছে যে, যেকোনো সময় ইউক্রেনে সামরিক আগ্রাসন চালাতে পারেন পুতিন।
কিন্তু যুক্তরাষ্ট্র, বৃটেনসহ পশ্চিমাদের এসব অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করেছে রাশিয়া।
উল্টো পূর্ব দিকে শান্তি প্রতিষ্ঠায় আন্তর্জাতিক চুক্তি বাস্তবায়নে ইউক্রেন সরকারের ব্যর্থতার অভিযোগ তুলেছে মস্কো। পূর্বাঞ্চলে কমপক্ষে ১৪ হাজার মানুষকে হত্যা করা হয়েছে। রাশিয়া সমর্থিত বিদ্রোহীরা একের পর এক এলাকা নিয়ন্ত্রণ করছে। ওদিকে মঙ্গলবার সতর্কতা দিয়েছেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভোলোদিমির জেলেনস্কি। তিনি বলেছেন, রাশিয়ার আগ্রাসন ইউক্রেন ও রাশিয়ার মধ্যে যুদ্ধ সৃষ্টি করবে এমন না। তা হবে ইউরোপে একটি পূর্ণ মাত্রার যুদ্ধ।
মস্কোতে মঙ্গলবার হাঙ্গেরির প্রধানমন্ত্রী ভিক্টর অরবানের সঙ্গে আলোচনার পর বক্তব্য রাখেন পুতিন। তিনি বলেন, ইউক্রেনের নিরাপত্তা নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র যে খুব বেশি উদ্বিগ্ন তেমনটা মনে হয় না। পক্ষান্তরে তাদের বড় কাজ হলো রাশিয়ার উন্নয়নকে নিয়ন্ত্রণ করা। এ জন্য রাশিয়াকে শায়েস্তা করার শুধুই একটি হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে ইউক্রেনকে।
উল্লেখ্য, ১৯৪৭ থেকে ১৯৮৯ সাল পর্যন্ত শীতল যুদ্ধের সময় থেকেই বিশ্বের সবচেয়ে বড় পারমাণবিক অস্ত্রের অধিকারী যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়ার মধ্যে বিরোধ অব্যাহত আছে। ওই সময় রাশিয়ার পরেই কমিউনিস্ট সোভিয়েত ইউনিয়নের কাছে একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ অংশ ছিল ইউক্রেন। পুতিন বলেছেন, আইনগতভাবে নিরাপত্তা নিশ্চয়তার যে দাবি উত্থাপন করেছে রাশিয়া তা একেবারেই উপেক্ষা করছে যুক্তরাষ্ট্র। এর মধ্যে আছে পূর্বাঞ্চলে ন্যাটোর সম্প্রসারণ বন্ধ করা। তিনি আরো বলেন, যদি ন্যাটোতে যোগ দিতে ইউক্রেনকে অনুমোদন দেয়া হয়, তাহলে অন্য সদস্যদেরকে রাশিয়ার সঙ্গে যুুদ্ধে টেনে নেয়া হবে। পুতিন আরো বলেন, একবার কল্পনা করুন ইউক্রেন ন্যাটোর একটি সদস্য এবং ক্রাইমিয়া কেড়ে নেয়ার জন্য সামরিক অভিযান শুরু করলো। তাহলে আমরা কি ন্যাটোর বিরুদ্ধে যুদ্ধে জড়িয়ে পড়বো? কেউ কি এ বিষয়টি ভেবে দেখেছেন? দৃশ্যত মনে হয়, কেউ তা ভাবেননি।
সূত্র: মানবজমিন