গুলশানে ফিরোজা নামের ভবনের দোতলায় নিজ কক্ষে শুয়ে-বসে সময় কাটাচ্ছেন বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া। গত মঙ্গলবার রাতে তিনি হাসপাতাল থেকে বাসায় ফেরেন; তার শারীরিক অবস্থা আগের মতোই রয়েছে। নিয়ম করে চিকিৎসকরা চেকআপ করছেন। গতকাল পর্যন্ত পরিবার ছাড়া দলের কাউকে সাক্ষাৎ দেননি তিনি।
বাসভবন সূত্র জানায়, তাঁকে বাসায় তৈরি তরল খাবার খেতে দেওয়া হয়। যেমন স্যুপ, ছোট মাছ, মুরগির মাংস ও সবজি। সময়মতো লন্ডনে থাকা ছেলে, ছেলের বউ, নাতনিদের সঙ্গে টেলিফোনে কথাও বলছেন। সকালে ঘুম থেকে উঠে হালকা গরম পানি খান। এরপর হুইল চেয়ারে করে কিছুটা সময় বারান্দায় রোদ পোহান। এ ছাড়া টেলিভিশন দেখে ও বই পড়ে সময় কাটান। করোনা পরিস্থিতি ও শারীরিক ঝুঁকি বিবেচনায় রেখেই এভারকেয়ার হাসপাতালের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক অধ্যাপক ডা. শাহাবুদ্দিন তালুকদারের নেতৃত্বে চিকিৎসা চলছে। বোন সেলিনা ইসলাম ইতোমধ্যে বাসায় গিয়েছিলেন। তাঁর সঙ্গে নানা বিষয়ে উভয়ে কথা বলেছেন। ছোট ভাই শামীম এস্কান্দারের স্ত্রী কানিজ ফাতেমাও গিয়েছিলেন খালেদা জিয়ার গুলশানের বাসভবনে। গুলশানের ফিরোজায় দিনে ও রাতে দুজন নার্স দুই শিফটে ডিউটি করছেন। মেডিকেল বোর্ডের সদস্য ডা. আল মামুনসহ দুজন চিকিৎসক বাসায় গিয়ে দেখে এসেছেন। নতুন কোনো জটিলতা হয়নি। বাসায় খালেদা জিয়াকে সার্বক্ষণিক দেখভাল করেন তাঁর ব্যক্তিগত কর্মী ফাতেমা। ফাতেমা ছাড়াও একজন নার্স আছেন যিনি থেরাপি দিয়ে থাকেন এবং ওষুধপত্র এগিয়ে দেন।
খালেদা জিয়াকে বাসায় নেওয়ার পর চিকিৎসকদের পরামর্শে সুরক্ষার নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। শুধু কর্তব্যরত চিকিৎসক ছাড়া বাইরের কাউকে ভিতরে ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না। নেতা-কর্মীদেরও ভিড় করতে নিষেধ করা হয়েছে।
বিএনপি চেয়ারপারসনের প্রেস উইং সদস্য শায়রুল কবির খান বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, নিয়মিত মেডিকেল বোর্ডের চিকিৎসকরা ম্যাডামের খোঁজ নিতে বাসায় যান। তিনি জানান, তার জানামতে গতকাল পর্যন্ত দলের কেউ বাসায় যাননি। দুই-এক দিনের মধ্যে গণমাধ্যমে বিএনপি চেয়ারপারসনের সর্বশেষ শারীরিক অবস্থা সম্পর্কে জানানো হতে পারে। উল্লেখ্য, এভারকেয়ার হাসপাতালের মেডিকেল বোর্ডের সিদ্ধান্তে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় খালেদা জিয়া ৮১ দিন পর বাসায় ফেরেন। ৭৬ বছর বয়সী সাবেক এই প্রধানমন্ত্রী বহু বছর ধরে আর্থ্রাইটিস, ডায়াবেটিস, কিডনি, ফুসফুস, চোখের সমস্যাসহ নানা জটিলতায় ভুগছেন।
সূত্রঃ বিডি প্রতিদিন