স্বর্ণাক্ষরে লেখা কোরআন তৈরি হচ্ছে পাকিস্তানে। পবিত্র কোরআনটির অক্ষরগুলো খোদাই করতে ব্যবহার করা হচ্ছে ২০০ কেজি সোনা। শুধু তা–ই নয়, এ কাজে প্রয়োজন পড়বে দুই হাজার কেজি অ্যালুমিনিয়ামও। বলা হচ্ছে, কাজ পুরোপুরি শেষ হলে এটিই হবে স্বর্ণাক্ষরে লেখা বিশ্বের সবচেয়ে বড় কোরআন। পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যম ডন এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানান।
প্রতিবেদনে বলা হয়, কোরআন তৈরির কেন্দ্রে রয়েছেন চিত্রশিল্পী ও ভাস্কর শাহিদ রাসাম। ২০১৬ সাল থেকে কোরআনটি তৈরির কাজে হাত লাগিয়েছেন তিনি। গত বুধবার করাচিতে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ বিষয়ে কথা বলেন।
শাহিদ রাসাম জানান, কোরআনটির ৫৫০ পাতায় থাকবে ৮০ হাজার শব্দ। প্রতি পাতার দৈর্ঘ্য ২ মিটার ও প্রস্থ ২ দশমিক ৬ মিটার। কোরআনের আয়াতের শব্দগুলো কালি বা রঙের বদলে খোদাই করা হবে ধাতু দিয়ে। কাগজের বদলে থাকবে ক্যানভাস।
কোরআনটি তৈরির কাজ শুরুর পর এ নিয়ে কয়েকজন শিল্পী বন্ধুর সঙ্গে কথা বলেন শাহিদ। সে সময় পুরো কাজ শেষ হতে কত সময় লাগবে, জিজ্ঞাসা করেছিলেন আনোয়ার মাকসুদ নামের একজন লেখক ও শিল্পী। কারণ, কোরআনটির দুটি পাতার কাজ পুরোপুরি শেষ করতেই শাহিদের লেগেছিল দুই বছর।
এরপর আনোয়ার মাকসুদের পরামর্শে কোরআনটি তৈরির কাজে গতি আনতে ২০০ তরুণকে দলে নেন শাহিদ। তাদের মধ্যে রয়েছেন ক্যালিগ্রাফার থেকে শুরু করে নকশাবিদ, চিত্রশিল্পী এমনকি ভাস্করও।
কোরআনটি তৈরির কাজ শেষ হলে সেটি বিশেষ কোনো জাদুঘরে প্রদর্শন করার পরিকল্পনা রয়েছে শাহিদের। এ জন্য সরকারি ও বেসরকারি সংস্থার সহায়তা চেয়েছেন তিনি। পাকিস্তানের উন্নয়নমূলক বেসরকারি সংস্থা আগা খান ফাউন্ডেশনের পৃষ্ঠপোষকতাও চান শাহিদ।
স্বর্ণাক্ষরে লেখা বিশ্বের সবচেয়ে বড় কোরআনের কাজ চালিয়ে যেতে এ ফাউন্ডেশন একটি ভালো পৃষ্ঠপোষক হবে বলে মনে করেন আনোয়ার মাকসুদ। তিনি বলেন, ‘আপনি যদি কোনো জাদুঘরে এটি (কোরআন) প্রদর্শনের জন্য বলেন, তাহলে এর পাহারার জন্য আপনাকে হাজার হাজার নিরাপত্তাকর্মীর ব্যবস্থার জন্যও বলতে হবে। কারণ, এটি সোনায় ভর্তি থাকবে।’
এদিকে এই কোরআনের ‘সুরা আর রহমান’ অংশ মুদ্রণের কাজ এরই মধ্যে শেষ হয়েছে। এ মুহূর্তে সেটি সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাই এক্সপোর পাকিস্তান প্যাভিলিয়নে প্রদর্শন করা হচ্ছে।
সূত্র: আমাদের সময়.কম