পেনাল্টি মিস করলেন নেইমার। প্রতিপক্ষের মাঠ থেকে বড় হার নিয়ে বাড়ি ফিরলো মেসি, নেইমার, এমবাপ্পেরা। আজ রোববার ভোরে স্বাগতিক নান্টেসের কাছে লীগ ওয়ানের ম্যাচটি ৩-১ গোলে হেরেছে পিএসজি। নান্টেসের হয়ে গোল তিনটি করেন কলো মাউনি, কুয়েন্টিন মার্লিন ও লুডোভিক ব্লাস। পেনাল্টি মিস করলেও পিএসজির একমাত্র গোলটি করেন নেইমার।
লিগ ওয়ানে ১৫ ম্যাচ পর হারল প্যারিসের দলটি। চলতি মৌসুমে লিগে এর আগে একবারই হেরেছিল তারা। গত অক্টোবরে রেনের মাঠে ২-০ গোলে। গত নভেম্বরে নান্টেসের বিপক্ষে প্রথম দেখায় ঘরের মাঠে ৩-১ গোলে জিতেছিল পিএসজি। সেদিন দলটির জার্সিতে লিগ ওয়ানে প্রথম গোল পেয়েছিলেন মেসি। একই দলের বিপক্ষে লড়াই দিয়ে এবার ক্লাব ক্যারিয়ারে ৮০০ ম্যাচ খেলার মাইলফলক স্পর্শ করলেন সাবেক বার্সেলোনা ফরোয়ার্ড। কিন্তু রাঙাতে পারলেন না উপলক্ষটা।
আক্রমণ পালটা আক্রমণের ম্যাচে পিএসজিকে ছেড়ে কথা বলেনি স্বাগতিক নান্টেস। প্রথমার্ধেই তিন গোল করে চালকের আসনে বসে স্বাগতিকরা। পিছিয়ে পড়ে সমতায় ফিরতে মরিয়া মেসি-নেইমাররা সুযোগ বানিয়েও গোল মিসের মহড়ায় নামে। সুবর্ণ সুযোগ নষ্ট করে প্রথমার্ধে পায়নি গোলের দেখা। দ্বিতীয়ার্ধের শুরুর দিকে নেইমারের গোল ম্যাচে ফেরার আভাস দিলেও সেই নেইমারই পেনাল্টি মিস করে ডুবিয়েছে পিএসজিকে। গোল মিসের মহড়ায় নেমেছিল এমবাপ্পে ও মেসিও। দুজনই গোলরক্ষককে একা পেয়েও নিখুত ফিনিশিং করতে পারেনি। শেষ পর্যন্ত হার নিয়ে ফিরতে হয়েছে পিএসজিকে।
চতুর্থ মিনিটে কাউন্টার আক্রমণে গোল করে এগিয়ে যায় স্বাগতিক নান্টেস। বাঁ দিক দিয়ে আক্রমণে উঠে নান্টেস, সিমনের বাড়ানোর বল বক্সের ভেতর নিয়ন্ত্রণে নেন কোলো মুয়ানি। পোস্ট ছেড়ে এগিয়ে আসেন কেইলর নাভাস, কিন্তু মুয়ানির শট আটকাতে পারেনি এই কোস্টারিকান গোলরক্ষক। দূরের পোস্টে লক্ষ্যভেদ করেন মুয়ানি। অষ্টম মিনিটে দারুন সুযোগ নষ্ট করেন লিওনেল মেসি। বক্সের ভেতর থেকে গোলরক্ষকের সোজাসুজি শট নেন এই আর্জেন্টাইন তারকা।
১২ মিনিটে গিরিত্তর বক্সের বাইরে থেকে নেওয়া শট বাঁ দিকে ঝাঁপিয়ে রক্ষা করেন কেইলর নাভাস। ১৬ মিনিটে দুর্দান্ত গোল করে নান্টেসের ব্যবধান বাড়ান কুইন্টিন মারলিন। ডি বক্সের ভেতর থেকে বাম পায়ের গতির শটে দূরের পোস্টের ওপরের দিকে লক্ষ্যভেদ করেন এই ফরাসি ফরোয়ার্ড। ২৬ ও ২৭ মিনিটে দুই দুইবার গোলরক্ষককে একা পেয়েও বল জালে জড়াতে পারেনি নেইমার। দুইবারই গোলরক্ষকের সোজাসুজি মারেন এই ব্রাজিলিয়ান।
২৯ মিনিটে আবারো পিএসজির ত্রাতা হয়ে আসেন নাভাস। বক্সের ভেতরের কোনাকুনি থেকে সিমনের গতির শট পোস্ট ছেড়ে খানিকটা সামনে এসে ঠেকিয়ে দেন তিনি। কর্নার পায় নান্টেস। ৪৪ মিনিটে বক্সের সামনে কিলিয়ান এমবাপ্পেকে পেছন থেকে ফাউল করেন ডেনিশ আপিয়া। রেফারি প্রথমে সরাসরি লাল কার্ড দেখালেও ভিএআর দেখে লাল কার্ড তুলে হলুদ কার্ড দেখেন আপিয়াকে। প্রথমার্ধের যোগ করা ছয় মিনিটের মাথায় তিন গোলে এগিয়ে যায় নান্টেস। পেনাল্টি থেকে গোল করেন লুদোভিচ ব্লাস।
দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেই পিএসজিকে ম্যাচে ফেরার শক্তি জোগান নেইমার। লিওনেল মেসির সঙ্গে রসায়ন জমিয়ে ৩-১ ব্যবধান করেন এই ব্রাজিলিয়ান তারকা। ৫৯ মিনিটে ব্যবধান কমানোর সুযোগ পেয়েও কাজে লাগাতে পারেনি নেইমার। পেনাল্টি থেকে গোল করতে ব্যর্থ হন এই ব্রাজিলিয়ান ফরোয়ার্ড। তার নেওয়া দুর্বল শট সহজেই রুখে দিয়েছেন নান্টেস গোলরক্ষক। ৭৪ মিনিটে সবচেয়ে সহজ সুযোগ নষ্ট করেন কিলিয়ান এমবাপ্পে। গোলরক্ষককে একা পেয়েও ক্রস বারের ওপর বল মেরে হতাশা প্রকাশ করেন এই বিশ্বকাপ জয়ী ফুটবলার। নেইমারকে তুলে দি মারিয়াকে নামান পচেত্তিনো। মাউরো ইকার্দি, আশ্রাফ হাকিমিরা নেমে শেষ দিকে বেশ কয়েকবার নান্টেসের রক্ষণ ভাঙার চেষ্টা করলেও তা আর পারেনি।
২৫ ম্যাচে ৫৯ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে আছে পিএসজি। এক ম্যাচ কম খেলে ৪৬ পয়েন্ট নিয়ে দুইয়ে মার্সেই। তাদের সমান ম্যাচে ৪২ পয়েন্ট নিয়ে তিন নম্বরে আছে নিস। ২৫ ম্যাচে ৩৮ পয়েন্ট নিয়ে পঞ্চম স্থানে উঠে এসেছে নান্টেস।
সূত্র: বিডি-প্রতিদিন