খেলা ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০২২, বুধবার
বড় ভাই নাফিস ইকবালের সঙ্গে বাংলাদেশের ওয়ানডে অধিনায়ক তামিম ইকবালবাংলাদেশ দল সবশেষ ওয়ানডে খেলেছে ২০২১ এর জুলাই মাসে। জিম্বাবুয়েকে তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজে হোয়াইটওয়াশ করে সুপার লীগের পয়েন্ট তালিকাতে শক্ত অবস্থান করে নেয়। এই পর্যন্ত ১২ ম্যাচে ৮ জয়ে ৮০ পয়েন্ট নিয়ে অবস্থান এখন তালিকার দ্বিতীয় স্থানে। এক সমান জয় হলেও তৃতীয় স্থানে ভারত। আর ৯৫ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে রয়েছে ইংল্যান্ড। প্রায় ৭ মাস পর আজ আফগানিস্তানের বিপক্ষে ফের ওয়ানডে সিরিজ খেলতে নামছে টাইগাররা। সিরিজ জিতলেই ইংলিশদের পিছনে ফেলে শীর্ষে ওঠার দারুণ সুযোগ। অন্যদিকে সুপার লীগের পয়েন্ট তালিকায় আফগানদের অবস্থান ৬ষ্ঠ স্থানে।
৬ ম্যাচে সবক’টিতেই জয় নিয়ে তুলে নিয়েছেন ৬০ পয়েন্ট। বলার অপেক্ষা রাখেনা নিজের ঘরের মাঠে বাংলাদেশ অধিনায়কের সামনে আফগানিস্তানকে থামার মিশন। সব মিলিয়ে টাইগার দলনেতার এখন অন্য রকম চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি। তবে ম্যাচ শুরুর আগেই সিরিজ জয় হোয়াটওয়াশ নিয়ে ভাবতে চাননা তামিম। তিনি বলেন, ‘৩-০ এখনও অনেক দূরের ব্যাপার। আমরা কালকের ম্যাচ কীভাবে শুরু করি এটা বেশি গুরুত্বপূর্ণ। কে চাইবে না ৩-০ না করতে? ওরাও চাইবে। তবে দূরেরটা চিন্তা না করে আমরা আগে কাল (আজ) শুরু করি।’ আজ সিরিজের প্রথম ম্যাচটি মাঠে গড়াবে চট্টগ্রাম জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে বেলা ১১টা বাজে।’ এই সিরিজেই চট্টগ্রামের দর্শকরা মাঠে এসে খেলা দেখার সুযোগ পেতে যাচ্ছে। তবে করোনা পরিস্থিতির কারণে স্টেডিয়ামের ধারণক্ষমতার ৫০ শতাংশ দর্শকই মাঠে প্রবেশ করতে পারবে।
চট্টগ্রামের সন্তান তামিম ইকবাল, নিজ শহরে দলকে নেতৃত্ব দিতে নামছেন। তাই মাঠের চ্যালেঞ্জও যোগ হয়েছে ভিন্ন মাত্রা। তার উপর দীর্ঘদিন পর ওয়ানডে লড়াইয়ে মাঠে নামতে টাইগাররা দারুণ রোমাঞ্চিত। এ বিষয়ে তামিম বলেন, ‘গত জুলাইয়ে সর্বশেষ ওয়ানডে খেলেছিলাম। ৬-৭ মাস পর এসেছি। তবে সবাই রোমাঞ্চিত। দ্বিধাহীনভাবে এটা আমাদের প্রিয় ফরম্যাট। এ বছর বেশ কয়েকটা ওয়ানডে আছে। গত বছর এভাবে ছিল না। কালকের জন্য মুখিয়ে আছি। আশা করছি ভালো শুরু পাবো।’ আর নিজের ঘরের মাঠে খেলা তামিমকে করেছে আরও আপ্লুত। বিশেষ করে দর্শকদের মাঠে আসার সুযোগকে টাইগার অধিনায়ককে বেশি উৎফুল্ল করে তুলেছে। তিনি বলেন, ‘চট্টগ্রামের জন্য আমার হৃদয়ে বিশেষ একটা জায়গা আছে। দর্শক থাকলে ভালো। অনেক দিন পর দেশের দর্শকদের সামনে খেলব। দর্শক কখনও কখনও দ্বাদশ খেলোয়াড় হয়ে ওঠে। আমরা ভালো করি বা খারাপ করি, তারা মাঠে থাকলে সমর্থনের জন্য সর্বোচ্চটুকু করে যান। আমি আমার সেরাটা চেষ্টা করবো। বিপিএল ভালো গেছে মানে এই না এই সিরিজও অনেক ভালো খেলবো। প্রক্রিয়া ঠিক রেখে চেষ্টা করবো, দেখা যাক ফলাফল কী হয়।’ এখন পর্যন্ত আফগানিস্তানের বিপক্ষে ৮ ওয়ানডে ম্যাচ খেলেছে বাংলাদেশ দল। এর মধ্যে জয় পাঁচটিতে আর হেরেছে ৩ ম্যাচে। সফরকারীদের বিপক্ষে এখন পর্যন্ত একটি ওয়ানডে সিরিজ খেলেছে টাইগাররা। সেখানে ২-১ এ সিরিজ জিতেছিল বাংলাদেশ।
মিরপুর শেরেবাংলা মাঠে সিরিজের দ্বিতীয়
ম্যাচে হেরেও ঘুরে দাঁড়িয়েছিল দল। আফগানদের বিপক্ষে ওয়ানডেতে টাইগারদের প্রথম হার ২০১৪ এশিয়া কাপে। ফতুল্লায় ৩২ রানে হেরেছিল মুশফিকুর রহীমের দল। সবশেষ হার দুবাইয়ে ২০১৮ এশিয়া কাপে। ১৩৬ রানের বড় ব্যবধানে হেরে যায় টাইগাররা। দলটিকে হালকা করে নেয়ার কোনো সুযোগ নেই। চট্টগ্রামেই জহুর আহমেদ স্টেডিয়ামে বাংলাদেশের বিপক্ষে প্রথম টেস্ট খেলতে নেমে দলটি জয় তুলে নিয়ে লজ্জায় ডুবিয়ে ছিল টাইগারদের। তবে খুব বেশি চ্যালেঞ্জ চাপ নিতে নারাজ তামিম। তিনি বলেন, ‘চ্যালেঞ্জের কিছু না। কমবেশি সবাই-ই অভিজ্ঞ। ওদের সঙ্গে ওয়ানডে দিয়ে শুরু করাটা সঠিক সিদ্ধান্ত। ওয়ানডেতে অবশ্যই আমরা ভালো দল। ছন্দে ফেরাটাই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। সবাই খেলার মধ্যে আছে, এটা ইতিবাচক। দল হিসেবে ভালো করতে হবে- এটাই। ওয়ানডেতে তাদের বিরুদ্ধে আমরা সবসময়ই ভালো করেছি। তারা ভালো দল এতে কোনো সন্দেহ নেই। মানসম্পন্ন বোলিং আক্রমণ আছে তাদের। তবে এই বোলিং আক্রমণের বিপক্ষেই আমরা আগে ভালো করেছি। কাল যারা খেলবে ব্যাট হাতে সবাই ছন্দে আছে।’
আজ একাদশ নিয়েও আছে নানা জল্পনা-কল্পনা। তবে ওপেনিংয়ে তামিমের সঙ্গে লিটন দাস থাকায় চিন্তা কিছুটা কমেছে। তিনে খেলবেন সাকিব আল হাসান চারে অভিজ্ঞ মুশফিকুর রহীম। তবে পাঁচে দেখা যেতে পারে তরুণ মাহমুদুল হাসান জয় কিংবা ইয়াসির আলী চৌধুরীকে। চট্টগ্রামের উইকেটে পেস বোলিংয়ে দলকে নেতৃত্ব দেবেন মোস্তাফিজুর রহমান সঙ্গে শরিফুল ইসলাম। তৃতীয় পেসার হিসেবে তাসকিনের থাকার সম্ভাবানা রয়েছে। একাদশ নিয়ে তামিম বলেন, ‘গত ৬ ওয়ানডেতে একজনই তিন নম্বরে ব্যাট করেছে। নাম্বার থ্রি নিয়ে আমি বেশি উদ্বিগ্ন নই। নাম্বার ফাইভ নিয়ে একটা দুশ্চিন্তা অবশ্যই ছিল। ইয়াসিরকে নেয়া হয়েছে, জয়কেও নেয়া হয়েছে। আমাদের হাতে অপশন আছে। এখানে যথার্থ একজনকে পেলে আমাদের জন্য খুবই ভালো। কখনও দ্রুত রান তুলতে হতে পারে, কখনও দ্রুত উইকেট পড়ে গেলে পুরো ইনিংস ধরে রাখতে হতে পারে। ঘরোয়া ক্রিকেটে যারা ভালো করছে তাদের আমরা সুযোগ দিচ্ছি।
সূত্র: বি ডি-প্রতিদিন