কাল মাঠে গড়াচ্ছে ঢাকা প্রিমিয়ার ক্রিকেট লীগ। এবার ঢাকা ক্লাব ক্রিকেটের সবচেয়ে বড় আসর শুরু হবে ১১ দল নিয়ে। কারণ লীগ শুরুর আগে সরে দাঁড়িয়েছে সুপার লীগের দল প্রাইম দোলেশ্বর। সিসিডিএম বাইলজ বলছে ধারা অনুসারে কোনো দল স্বেচ্ছায় লীগে না খেললে সরাসরি রেলিগেশনে চলে যাবে। তবে এখন বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) পক্ষ থেকে এর আনুষ্ঠানিক ঘোষণা আসেনি। অন্যদিকে লীগ শুরুর আগে দারুণ আক্ষেপে পুড়ছে শেষ আসরে রানার্সআপ দল প্রাইম ব্যাংক ক্রিকেট ক্লাব। জাতীয় দলের ক্রিকেটারদের নিয়ে শক্তিশালী স্কোয়াড করলেও এখন দলটি দারুণ বিপদে। লীগ মাঠে গড়ানোর আগেই তাদের সেরা ৭ ক্রিকেটার চলে গেছে দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে।
এরমধ্যে উইকেট কিপার ব্যাটার মোহাম্মদ মিঠুন ও পেসার রেজাউর রহমান রাজা দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে টেস্ট ও ওয়ানডে কোনো স্কোয়াডে নেই। তাদের নেয়া হয়েছে বিকল্প হিসেবে। এই কারণে ভীষণ ক্ষোভ প্রকাশ করেন দলটির প্রধান কোচ মোহাম্মদ সালাউদ্দিন। তিনি বলেন, ‘দেখুন, সবাই জানতো যে টেস্ট প্লেয়াররা যাবে, সেভাবেই সবাই দল গঠন করেছে। আমার কাছে মনে হয় দুর্ভাগ্যবশত আমাদের দুটো প্লেয়ার যাদের নিয়ে গেছে তারা কিন্তু কোনো ফরম্যাটেই খেলবে না। এমনিতেই আমাদের ছয়জন ক্রিকেটার নেই। তারমধ্যে যদি আরও দু’জন ক্রিকেটার চলে যায় তাহলে আমার জন্য দল দাঁড়ানো করাটা কঠিন।’
মোহাম্মদ মিঠুন ও রাজা দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে আছেন অতিরিক্ত ক্রিকেটার হিসেবে। তারা সেখানে খেলার সুযোগ পাবেন না এমনটাই জানিয়েছে বিসিবি। এই দুই ক্রিকেটার সেখানে শুধু অনুশীলন করবেন। আর এই কারণে প্রাইম ব্যাংকের কোচের আক্ষেপটা অনেক বেশি। তিনি বলেন, ‘তারা যদি খেলতে যেতো, আমার কাছে মনে হয় ব্যাপারটা ঠিক ছিল। তারা তো স্কোয়াডে নাই, শুধু অনুশীলন করতে গেছে।’ মিঠুন সর্বশেষ জাতীয় দলে খেলেছিলেন গত বছর জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে। সেবার ওয়ানডে সিরিজে ব্যর্থ হওয়ায় তাকে আর জাতীয় দলের জন্য বিবেচনা করা হয়নি। তবে হুট করেই মিঠুনকেই কেন নিয়ে গেল? এ ব্যাপারে সালাউদ্দিন বলেন, ‘আমি জানি না। মিঠুন তো শেষ ৬-৭ মাসেও জাতীয় দলের আশেপাশে ছিল না। হঠাৎ করেই চলে গেছে। আলটিমেটলি আমার দলের ৬ জন ক্রিকেটার এমনিতেই নেই, এখন আরও দু’জন যোগ হলো। আমার জন্য কাজটা কঠিন।’ অবশ্য দলের ক্ষতি হলেও পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ করছেন না প্রাইম ব্যাংকের এ কোচ। বরং নাঈম শেখকে না নেয়ায় অবাক হয়েছেন তিনি। সালাউদ্দিন বলেন, ‘পক্ষপাতিত্বের কিছু নেই। এখানে নাঈম শেখও ছিল, সে যায়নি কিন্তু মিঠুন ও রাজাকে নিয়ে গেল। আমার কাছে মনে হয় এ ব্যাপারটা একটা দলের জন্য খুবই ক্ষতিকর।’
অন্যদিকে প্রাইম ব্যাংকে এখন ভরসা রাখতে হচ্ছে নাসির হোসেন ও এনামুল হক বিজয়দের ওপর। নাসির নানা বিতর্কিত ঘটনায় দীর্ঘদিন থেকে নেই জাতীয় দলে। ঘরোয়া ক্রিকেটেও নিয়মিত নয়। পারফরম্যান্স নিয়েও আছে প্রশ্ন। তবে নাসির বদ্ধপরিকর দলের জন্য দারুণ কিছু করতে। তিনি বলেন, ‘অনেক দিন ধরেই আমি খেলার বাইরে। সর্বশেষ জাতীয় লীগ খেলেছি, তারপর আর সেভাবে ম্যাচ খেলা হয়নি। চট্টগ্রামে হয়তো ২-৩ টা ম্যাচ খেলেছি। তাছাড়া ম্যাচ খেলা হয়নি। তাই এটা আমার জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ টুর্নামেন্ট। সব টুর্নামেন্টই একজন খেলোয়াড়ের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। তো এটা আমার জন্য একটা সুযোগ। এখানে পারফর্ম করে যেন আবার আমি জাতীয় দলের কাছাকাছি আসতে পারি। এটাই ফোকাস থাকবে, পারফর্ম করবো ইনশাআল্লাহ্।’
দলের সেরা ৭ ক্রিকেটার না থাকায় আক্ষেপ ঝরে নাসিরের কণ্ঠেও। এরপরও তিনি বিশ্বাস করেন তারা লড়াই করেন চ্যাম্পিয়ন হওয়ার জন্যই। তিনি বলেন, ‘জাতীয় দলের জন্য আমার ৭ জন খেলোয়াড় চলে গেছে। তারপরও আমাদের বেশির ভাগ খেলোয়াড়ই জাতীয় দলে খেলেছে এমন। আমরা আশাবাদী। এখন যারা আছে ওরাও ভালো খেলোয়াড়। ওরা প্রিমিয়ার লীগে সবসময় পারফর্ম করে আসছে। অবশ্যই লক্ষ্য একটাই থাকবে- চ্যাম্পিয়ন হওয়া। আমরা ম্যাচ বাই ম্যাচ জিতে সেই জায়গায় পৌঁছাতে চাই।
সূত্র: মানবজমিন