প্রতারণা, ভুয়া ব্যবসা ও অবৈধ অনুষ্ঠান করে সরকারের কোটি কোটি টাকা রাজস্ব ফাঁকি দেওয়ার অভিযোগে শাহাজাহান ভূঁইয়া রাজুর বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশনে (দুদক) অভিযোগ দেওয়া হয়েছে।
সম্প্রতি দুদক চেয়ারম্যান বরাবর কাকলী পারভীন নামে এক নারী এই অভিযোগ দেন।
অভিযোগে বলা হয়েছে, তার স্বামী এসআই নজরুল ইসলাম খান চাকরিরত অবস্থায় কিডনি জনিত সমস্যা নিয়ে হঠাৎ হার্ড অ্যাটাকে ২০০৭ সালে মৃত্যুবরণ করেন। এরপর তার তিন ছেলেকে নিয়ে ঢাকায় অনেক সংগ্রাম করে বসবাস করছেন। শাজাহান ভূঁইয়া রাজু তাকে মিরর পত্রিকা ও বিলবোর্ড ব্যবসার পার্টনার বানানোর প্রলোভন দেখিয়ে ২০১৪ সালের ২৫ জানুয়ারি ১০ লাখ টাকা গ্রহণ করে। যার প্রেক্ষিতে প্রতিমাসে রাজু তাকে ব্যবসার একটা লভ্যাংশ বাবদ ২০ হাজার টাকা করে দেবে। এজন্য রাজু তার কথিত কোম্পানির প্যাডে একটা চুক্তিপত্র প্রদান করে। সেই সাথে রাজু কাকলি পারভীনকে দুটি মানি রিসিড প্রদান করে। এরপর তিন মাস অতিক্রমের পর কোম্পানি এবং পত্রিকার পার্টনার হওয়ার কাগজপত্র সম্পাদনের জন্য কাকলি পারভীন যখন রাজুকে বলেন, তখন সে বিভিন্ন বাহানা শুরু করে।
এক পর্যায়ে হঠাৎ রাজু ধানমন্ডি অফিস ছেড়ে গায়েব হয়ে যায়। এরপর থেকে বিভিন্ন জায়গায় খোঁজাখুঁজি করে জানতে পারে, সে বিভিন্ন জনকে পার্টনার বানানোর কথা বলে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। এ ছাড়া স্বনামধন্য এক পরিবারের পালিত কন্যাকে রাজু প্রতারণা ও জালিয়াতি করে বিয়ে করেছিল। সেখান থেকে সে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়ে তার স্ত্রী-শাশুড়ির বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করেছে। রাজুর অবৈধ ব্যবসা ও বিভিন্ন অপকর্ম দেখে ঐ স্ত্রী তাকে তালাক দিতে বাধ্য হয়েছে।
অভিযোগে আরো বলা হয়- রাজুর মিরর পত্রিকাসহ কোনো পত্রিকা চালানোর সরকারের অনুমতি নেই। তারপরেও সে কীভাবে পত্রিকা চালায় এবং প্রতিষ্ঠানের নামে অনুষ্ঠান করে!
রাজু সাপ্তাহিক ফিন্যান্সিয়াল মিরর পত্রিকার কো-পাবলিশার্স ছিল। সেটা ঢাকা ডিসি অফিসে গিয়ে সে এবং অপর কো-পাবলিশার্স ও সম্পাদক কাজী জাহাঙ্গীর আলম পত্রিকাটি সারেন্ডার করেছে। যথারীতি সাংবাদিক মশি শ্রাবনের নিকট বিক্রিসহ হস্তান্তর সম্পাদন করে বরং মিথ্যা ও বানোয়াটি বিভ্রান্তিমূলক তথ্য বানিয়ে সরকারের অনুমতি ছাড়া পত্রিকা প্রকাশ ও এর ব্যানারে বিভিন্ন অনুষ্ঠান করছে।
রাজুর নিজস্ব কোনো বৈধ ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান নেই। যেগুলো সে উপস্থাপন করে সেগুলো সবই কপিরাইট করা দুই নম্বর করে সাজানো, অনুসন্ধানে সত্যতা মিলবে।
ঢাকার ডিসি এবং ডিএফপিসহ তথ্য ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের শৃঙ্খলা ভঙ্গ, মিথ্যা তথ্য উপস্থাপন ও অনুমতি ছাড়া পত্রিকা প্রকাশসহ নানা ধরনের অন্যায় অনিয়মের কারণে সে ডিসি অফিস ও ডিএফপিতে কালো তালিকাভুক্ত রয়েছে।
রাজু মিডিয়া ব্যবসার আড়ালে সরকারবিরোধী বিভিন্ন অপকর্ম ও অপশক্তির সাথে সম্পৃক্ত থেকে রাষ্ট্র বিরোধী কার্যকলাপে জড়িত রয়েছে। তার স্থায়ী ঠিকানা নোয়াখালী জেলায় হলেও তথ্য গোপন রেখে ঢাকার বাসিন্দা সেজেছে।
সে মিডিয়া ব্যবসার আড়ালে নারী, স্বর্ণ, মাদক ব্যবসা ও পাচারের সাথে জড়িত থেকে ধানমন্ডি, গুলশান, বনানী, নিকেতন, উত্তরা, মুহাম্মদপুর ও লাল মাটিয়াতে একেকটি অফিস/বাসা/বাড়ি ভাড়া নিয়ে মাদক ও নারী ব্যবসা করছে।
রাজুর বর্ণিত অপরাধের কারণে আইসিটি অ্যাক্ট চরমভাবে লঙ্ঘন হয়েছে। এর জন্যে তার বিরুদ্ধে আইসিটি অ্যাক্টের অধীনে আরও মামলা হতে পারে।
অভিযোগের বিষয়ে শাহাজাহান ভূঁইয়া বলেন, এ অভিযোগ ভিত্তিহীন। তবে এক সময় তার সঙ্গে ব্যবসায়িক অংশীদারত্ব ছিল। এখন আর নেই।