নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের জমি কেনা সংক্রান্ত অর্থ আত্মসাতের মামলায় আসামি ট্রাস্টি বোর্ডের চার সদস্যের আগাম জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে দিয়েছেন হাইকোর্ট। আসামিদের হাইকোর্ট থেকে গ্রেফতার করে নিয়ে শাহবাগ থানা পুলিশকে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে তাদের নিম্ন আদালতে হাজির করতে বলা হয়েছে।
রোববার বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি কাজী মো. ইজারুল হক আকন্দের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
চার আসামি হলেন- বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রাস্টি বোর্ডের সদস্য এমএ কাশেম, বেনজীর আহমেদ, রেহানা রহমান ও মোহাম্মদ শাহজাহান।
এর আগে বুধবার আংশিক শুনানি শেষে বৃহস্পতিবার পরবর্তী শুনানির জন্য দিন ধার্য ছিল। কিন্তু আসামিপক্ষের আইনজীবী মিজান সাঈদ সময়ের আবেদন করলে রোববার দিন ধার্য করেন আদালত। বুধবার বোর্ডের সদস্যের পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী ব্যারিস্টার আজমালুল হোসেন কিউসি, এএফ হাসান আরিফ। দুদকের পক্ষে ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী খুরশীদ আলম খান। আর রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল এএম আমিন উদ্দিন।
এ বিষয়ে দুদকে অভিযোগকারী আইন ও মানবাধিকার সুরক্ষা ফাউন্ডেশনের উপদেষ্টা ড. সুফী সাগর সামস বলেন, আদালতের রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করছি। আসামিরা যেন কোনোমতেই প্রভাব খাটিয়ে বিচারের দীর্ঘসূত্রিতা কিংবা ফাঁক দিয়ে বেঁচে যেতে না পারে, সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। অন্যদিকে মামলার অন্যতম আসামি আজিম উদ্দিন দেশে আছেন কি না বিদেশে পালিয়ে গেছেন- তা নিয়ে জনমনে শঙ্কা তৈরি হয়েছে। এখন বিশ্ববিদ্যালয়কে বাঁচাতে দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে।
প্রায় ৩০৪ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে গত ৫ মে নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের বোর্ড অব ট্রাস্টিজের চেয়ারম্যান আজিম উদ্দিন আহমেদসহ ৬ জনের বিরুদ্ধে মামলা করে দুদক। অপর আসামিরা হলেন- বোর্ড অব ট্রাস্টিজের সদস্য এমএ কাশেম, বেনজীর আহমেদ, রেহানা রহমান, মোহাম্মদ শাহজাহান ও আশালয় হাউজিং অ্যান্ড ডেভেলপার্স লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) আমিন মো. হিলালী।
এ মামলায় নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাস ডেভেলপমেন্টের নামে ৯ হাজার ৯৬ দশমিক ৮৮ ডেসিমাল জমির ক্রয়মূল্য বাবদ ৩০৩ কোটি ৮২ লাখ ১৩ হাজার ৪৯৭ টাকা অতিরিক্ত অর্থ হস্তান্তর, রূপান্তর, স্থানান্তর ও গোপন করার মাধ্যমে আত্মসাতের অভিযোগ আনা হয়েছে।
বিশ্ববিদ্যায়ের সিন্ডিকেট, বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন, শিক্ষা মন্ত্রণালয় অর্থাৎ সরকারের সুপারিশ/অনুমোদনকে পাশ কাটিয়ে বোর্ড অব ট্রাস্টিজের কিছু সদস্যের অনুমোদনের মাধ্যমে এই অর্থ লোপাট করা হয়। এ ছাড়া নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের বোর্ড অব ট্রাস্টির সদস্যদের বিরুদ্ধে অনিয়ম-দুর্নীতির আরও অভিযোগ রয়েছে। সেসব অভিযোগের অনুসন্ধান চলছে।